Advertisement
০৯ নভেম্বর ২০২৪
IPL

শেষ বলের লড়াইয়ে ‘একাই একশ’ হয়েও রাহুলের পঞ্জাবের কাছে ট্র্যাজিক নায়ক সঞ্জু স্যামসন

অনিশ্চয়তার এই খেলায় বহু বার ‘একাই একশ’ মেজাজে অতীতে অনেকে ম্যাচ জিতিয়েছে। এ বার সেই তালিকায় সঞ্জু স্যামসনের নামটা জুড়ে যেতে পারত।

হারলেও বুঝিয়ে দিলেন তিনি 'একাই একশ'। শতরানের পর সঞ্জু স্যামসন।

হারলেও বুঝিয়ে দিলেন তিনি 'একাই একশ'। শতরানের পর সঞ্জু স্যামসন। ছবি - টুইটার

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২১ ০০:২১
Share: Save:

শেষ বলে দীপক হুডা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচটা ধরতেই ক্যামেরার লেন্স কে এল রাহুলের দিকে ঘুরল। দেখা গেল পঞ্জাব কিংস অধিনায়ক ‘একাই একশ’ সঞ্জু স্যামসনকে জড়িয়ে স্বান্তনা দিচ্ছেন। এরপরের ছবি দলকে জিতিয়ে রীতিমতো হুঙ্কার ছাড়ছেন অখ্যাত অর্শদীপ সিংহ। কারণ লক্ষ্য ২২২ রান হলেও শেষ দিকে ছয় নম্বর ফুটবলের মতো ক্রিকেট বলকে দেখছিলেন স্যামসন। শেষ ওভারে দরকার ৬ বলে মাত্র ১৩ রান। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। একা কুম্ভ রক্ষা করে মাত্র ৬৩ বলে ১১৯ রান করলেও তাঁর দলকে ৪ রানে হারতে হল। এই ইনিংসে ১২টি চার ও ৭টি ছয় মারলেও লাভ হল না। কারণ ‘হল্লা বোল’ করেও তাঁর রাজস্থান রয়্যালস ৭ উইকেটে ২১৭ রানে থামল। ফলে কোনও মতে জয় দিয়ে শুরু করে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন রাহুল ও ডাগ আউটে বসে থাকা প্রশিক্ষক অনিল কুম্বলে

ক্রিকেট দলগত খেলা সবাই জানে। তবে ঘোর অনিশ্চয়তার এই খেলায় বহু বার ‘একাই একশ’ মেজাজে অতীতে অনেকে ম্যাচ জিতিয়েছে। এ বার সেই তালিকায় সঞ্জু স্যামসনের নামটা জুড়ে যেতে পারত। পাহাড় সমান ২২২ রান তাড়া করতে গিয়ে রাজস্থান রয়্যালসের রথী মহারথীরা একে একে ঘরে ফিরলেও অধিনায়ক একাই লড়ে গেলেন। তবে সব সময় বীরের সঙ্গে যে ভাগ্য থাকে না। সেটা সোমবারের রাতে দেখা গেল। যদিও ম্যাচ হারলেও তাই তো তাঁর এমন দাপুটে শতরানে ঢেকে গেল কে এল রাহুল, ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেল ও দীপক হুডার বিস্ফোরক ইনিংস।

গত বারের আইপিএল যেখানে শেষ করেছিলেন ঠিক সেখান থেকেই শুরু করলেন কেএল রাহুল। দলের নাম কিংস ইলেভেন পঞ্জাব থেকে পঞ্জাব কিংস হয়েছে। তবে দলের অধিনায়কের ব্যাট করার ভঙ্গিমার বদল ঘটেনি। ২০২০ সালের আইপিএলে ১৪ ম্যাচে সর্বাধিক ৬৭০ রান করেছিলেন। আর এ বার প্রথম ম্যাচেই রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে তাঁর ব্যাট ঝলসে উঠল। মাত্র ৫০ বলে করলেন ৯১ রান। ৭টি চার ও ৫টি ছয় দিয়ে তাঁর এই মারকুটে ইনিংস সাজানো ছিল।

কে রাহুল তখনও জানতেন না সঞ্জুর লড়াকু শতরানে তাঁর ইনিংস ঢাকা পরে যাবে। ছবি - টুইটার।

কে রাহুল তখনও জানতেন না সঞ্জুর লড়াকু শতরানে তাঁর ইনিংস ঢাকা পরে যাবে। ছবি - টুইটার।

তবে শুধু রাহুল নন, তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দিয়ে গেলেন ক্রিস গেল। যিনি আইপিএলে ৩৫০টি ছক্কা মাইলফলক ছোঁয়ার সঙ্গে ২৮ বলে ৪০ রান করেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার। ‘ইউনিভার্স বস’-এর ইনিংস সাজানো ছিল ৪টি চার ও ২টি ছয় দিয়ে। প্রথম ছয়টি মারার সঙ্গে সঙ্গেই ৩৫০টি ছয় মারার কীর্তি গড়েন তিনি।

যদিও গেল ফেরার পরেও পঞ্জাবকে দ্রুত রান পেতে বেগ পেতে হয়নি। কারণ রাহুলের সঙ্গে ক্রিজে ঝড় তুলতে শুরু করেন দীপক হুডা। গত বছর ১ নভেম্বর চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন। সেই ম্যাচে করেছিলেন অপরাজিত ৬২। এরপর আর ম্যাচ খেলা হয়নি। কারণ চলতি ঘরোয়া মরসুম শুরু হওয়ার আগেই ক্রুনাল পাণ্ড্যর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন। ফলে বরোদা ক্রিকেট সংস্থা তাঁকে নির্বাসিত করেছিল। তাই বিজয় হজারে ও সৈয়দ মুস্তাক আলি খেলা হয়নি। তবে এ দিন তাঁকে দেখে সেটা বোঝার উপায় ছিল না। মাত্র ২৮ বলে ৬৪ রান করলেন। মারলেন ৪টি চার ও ৬টি ছয়। ফলে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ২২১ রান তুলল পঞ্জাব।

কিন্তু বড় ব্যবধানে জয় এল কোথায়! দলের নাম বদলেছে। কিন্তু নির্বিষ বোলিংয়ের চেহারা বদলায়নি। সেটা কুম্বলের চোখ-মুখ দেখলেই পরিষ্কার। সঞ্জু কিন্তু হেরেও মহম্মদ শামি- মুরুগান অশ্বিনদের বুঝিয়ে দিলেন যে রোজ রোজ এত খারাপ বোলিং করে ম্যাচ জেতা যাবে না।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE