মহড়া: প্লে-অফের প্রস্তুতিতে আন্দ্রে রাসেল। কেকেআর টুইটার
প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করার পরে প্রথম অনুশীলনে শনিবার ওই দৃশ্যটাই নাইট শিবিরের মনোবল বাড়িয়ে দিচ্ছিল। কী সেই দৃশ্য? না, নেটে প্রথমে ব্যাট করে ফেললেন তিনি। তার পরেই বল হাতে চলে গেলেন রান-আপ মাপতে। তিনি— আন্দ্রে রাসেল। শারজায় সোমবার এলিমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে তাঁকে প্রথম একাদশে দেখতে না পেলে অবাকই হতে হবে। নাইট শিবির মরিয়া তাদের সেরা অস্ত্রকে নামানোর জন্য। রাসেল নিজেও মরিয়া। তাঁর মতো একা ভাগ্য গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখা ক্রিকেটার প্লে-অফে যদি না খেলেন, আর কবে খেলবেন? অনুশীলনের শুরুতেই যে কারণে ট্রেনারের সঙ্গে আলাদা করে গা ঘামানোর ব্যায়াম করলেন রাসেল। নেটেও প্রথম ব্যাটার হিসেবে ঢুকলেন। বোলিং করতে পারছেন না বলে সংশয় ছিল। শনিবার হাতও ঘোরালেন নেটে।
শেষ দু’বছর ধরে রাসেলের উপরে অতিরিক্ত নির্ভর করত দল। এ বারে ব্রেন্ডন ম্যাকালামের মন্ত্রে কেকেআর অনেক বেশি করে স্বয়ংসম্পূর্ণ দল হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছে। যেখানে একজন বা দু’জনের উপর নির্ভর করে চলবে না সংসার। রাসেল হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে বাইরে থাকলেও তাই প্লে-অফের স্থির লক্ষ্য থেকে ছিটকে যায়নি নাইটরা। রাসেলের জায়গায় পরিবর্ত হিসেবে দারুণ খেলে দিয়েছেন শাকিব-আল-হাসান। ক্যারিবিয়ান তারকা ফেরা মানে শাকিবের উপর কোপ পড়বে এলিমিনেটরে। কেকেআরের তিন বিদেশি পাকা। অধিনায়ক অইন মর্গ্যান, সুনীল নারাইন এবং ফাস্ট বোলার লকি ফার্গুসন। চতুর্থ জন অবশ্যই ফিট থাকলে আন্দ্রে রাসেল। বিরাট কোহালিদের বিরুদ্ধে এলিমিনেটরের মাঝে আরও অন্তত বাহাত্তর ঘণ্টা সময় পাচ্ছেন রাসেল। তাই হ্যামস্ট্রিংয়ের অবস্থার আরও উন্নতিই আশা করতে পারেন ভক্তরা।
আইপিএলে কেকেআর শেষ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ২০১৪-তে। সাত বছর ট্রফিহীন তারা। সেই দলের সঙ্গে যোগসূত্র বলতে শুধু সুনীল নারাইন ও শাকিব-আল-হাসান। ২০১৪ সালে প্রথম সাত ম্যাচ শেষে প্লে-অফের অঙ্কেই রাখা হচ্ছিল না যাদের, তারাই চ্যাম্পিয়ন হয়ে চমকে দিয়েছিল সকলকে। সেই প্রত্যাবর্তন থেকে অনুপ্রেরণা নিতেই পারে নাইট শিবির। নারাইন ও শাকিব তাঁদের ‘গল্প দাদু’। সে বারে ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি সতীর্থদের শোনাচ্ছেন তাঁরা। এবারেও অনেকটা সে ভাবেই ফিরে এসেছে কেকেআর। প্রথম পর্বে দেশের মাঠে সাতটি ম্যাচের মাত্র দু’টি জিতেছিল তারা। আমিরশাহিতে দ্বিতীয় পর্বে সেই খামতি মিটিয়ে দুরন্ত দৌড়ে প্লে-অফের যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে। তরুণ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের আত্মবিশ্বাস মনোবল বাড়াচ্ছে দলের। বেঙ্কটেশ আয়ারের মতো নতুন মুখ এমনই আগ্রাসী, আত্মবিশ্বাসী ভঙ্গিতে খেলছেন, দেখে কে বলবে এটা তাঁর প্রথম আইপিএল! শুভমন গিল দারুণ ছন্দে, যা সব চেয়ে বেশি আশার আলো তৈরি করেছে। বোলিংয়ে শিবম মাভির মতো ভারতীয় বোলার আগুন ঝরাচ্ছেন নিউজ়িল্যান্ডের ফাস্ট বোলার লকি ফার্গুসনের সঙ্গে। স্পিন শিক্ষক সুনীল নারাইনের সঙ্গে নিয়মিত ভাবে সফল ছাত্র সিভি বরুণ। এই যুগলবন্দি এলমিনেটরে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধেও সেরা ভরসা। সঙ্গে রাহুল ত্রিপাঠী, নীতীশ রানাদের ভয়ডরহীন মনোভাব রয়েছে।
আমিরশাহিতে কোহালিদের প্রথম ম্যাচে উড়িয়ে দিয়েই নতুন উদ্যমে আইপিএলের দ্বিতীয় পর্ব শুরু করেছিল ম্যাকালামের কেকেআর। কোহালিদের তারকাখচিত ব্যাটিংকে ৯২-তে শেষ করে দিয়েছিল নাইট রাইডার্স। তিন উইকেট নিয়েছিলেন বরুণ। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি।
শনিবার নাইটদের ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়োয় বরুণ সম্পর্কে মর্গ্যানের মন্তব্য, ‘‘আইপিএলের সেরা আবিষ্কার বরুণ। ওর মতো স্পিনার যে কোনও দলের সম্পদ। ওকে দলে পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান।’’ বরুণকে সামলানো এত কঠিন কেন? কেকেআর অধিনায়কের উত্তর, ‘‘এত দিন ওকে নেটে খেলার পরেও বুঝতে পারি না, কোন বলে কী হতে চলেছে!’’ নাইট ভক্তরা চাইবেন, বরুণ-ধাঁধা যেন কোহালিদের বিরুদ্ধে চলতেই থাকে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy