মুম্বাইকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে হারানোর পর দিল্লি। ছবি - টুইটার
১৫২, ১৫০ রান করে ম্যাচ জিতলেও এ বার আর হল না। যশপ্রীত বুমরা ১৯ ওভারে ১০ রান দেওয়ার পর চাপ অনেকটা কমে যায়। সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ৫ বল বাকি থাকতেই দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতিয়ে দিলেন শিমরন হেটমায়ার। তবে হেটমায়ার ও ললিত যাদব যতই ম্যাচ জেতান, ২৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মুম্বইয়ের ব্যাটিংকে গুঁড়িয়ে দিয়ে আসল কাজের কাজ করেছিলেন অমিত মিশ্র। ম্যাচের সেরাও হলেন এই লেগ স্পিনার। পাশাপাশি কঠিন পিচে ৪৯ রানে রান করে শিখর ধওয়ন ফের প্রমাণ করলেন টি-টোয়েন্টিতে কেন তিনি জাতীয় দলে অপরিহার্য।
গত ৫ ম্যাচে রোহিত শর্মার দলের কাছে দিল্লি হেরেছিল। সেই ক্ষত ভোলেনি ঋষভ পন্থের দল। ১৯.১ ওভারে ৪ উইকেটে ১৩৮ রান তুলে এই জয় ছিল মোক্ষম জবাব। যদিও কম রান হাতে থাকলেও চিপকের বাইশ গজে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মুম্বই ফের বুঝিয়ে দিল কেন তারা ক্রোড়পতি লিগে সবচেয়ে শক্তিশালী দল।
৯ বলে ১৪ রান করে শিমরনের ব্যাট থেকে জয় সূচক রান এলেও, দিল্লির হয়ে মাত্র ১২টা প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা ললিত যাদবের আলাদা প্রশংসা প্রাপ্য। কারণ শিখর ধওয়ন ও পন্থ ফিরে যাওয়ার পরেও বিপক্ষের বোলিংয়ের কড়া মোকাবিলা করে ২৫ বলে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন।
তবে মাত্র ১৩৮ রান তাড়া করতে নামলেও দিল্লি কিন্তু শুরু থেকে দাপট দেখাতে পারেনি। দ্বিতীয় ওভারে পৃথ্বী শ-কে ফিরিয়ে মুম্বইকে প্রথম সাফল্য এনে দিলেন জয়ন্ত যাদব। ১১ রানে ১ উইকেট হারালেও এরপর হাল ধরার চেষ্টা করেন শিখর ধওয়ন ও স্টিভ স্মিথ। ধৈর্য বজায় রেখে দ্বিতীয় উইকেটে ৫৩ রান যোগ করেন দুজন। যখন মনে করা হচ্ছিল দিল্লি ম্যাচে ফিরছে ঠিক তখন স্মিথকে (৩৩) রানে আউট করেন কায়রন পোলার্ড। ৬৪ রানে ২ উইকেট খোয়াল দিল্লি। ধওয়ন এ বার প্রতি ম্যাচেই দলকে বাঁচাচ্ছেন। তবে এ দিন বড় রান করতে পারলেন না। রাহুল চাহারের বলে যখন ৪৫ রানে ফিরছেন, তখন দিল্লি স্কোর বোর্ড বলছে ১০০ রানে ৩ উইকেট।
শিখর ফেরার সময় দিল্লির জেতার জন্য ৩০ বলে ৩৭ রান দরকার। কিন্তু অধিনায়ক পন্থ ম্যাচ বের পারলেন না। বরং খারাপ শট খেলে যশপ্রীত বুমরাকে উইকেট দিয়ে এলেন। দিল্লি তখন ১১৫ রানে ৪ উইকেট। যদিও এরপর বিপক্ষের অনেক গোলাগুলি এলেও পঞ্চম উইকেটে মুল্যবান ২৩ রান যোগ করে দলের জয় নিশ্চিত করেন দুজন। নিলেন গত ৫ ম্যাচ হারের মধুর প্রতিশোধ।
অমিত মিশ্রর স্পিনের ছোবলে শুধু ধারাশায়ী নয়, একটা সময় ৮৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো কাঁপছিল পাঁচবারের আইপিএল জয়ী দল। এখনও পর্যন্ত দিল্লির বিরুদ্ধে রোহিতের দলের সর্বনিম্ন রান ৯২। সেই সময় তারকা খচিত মুম্বইয়ের ডাগ আউট দেখে মনে হচ্ছিল সেই রান টপকে গিয়ে গেলে নীতা অম্বানি সিদ্ধি বিনায়ক মন্দিরে গিয়ে পুজো দিয়ে আসবেন। তবে এতটা সম্মানহানি হয়নি। ঈশান কিশন ২৬, জয়ন্ত যাদব ২২ বলে ২৩ ও রোহিত ৪৪ রান করার জন্য নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৭ রান তোলে মুম্বই।
তবে ঘরের ছেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন নন, এমন একটা শক্তিশালী ব্যাটিংকে চিপকের ঘূর্ণি পিচে ভাঙতে মুখ্য ভূমিকা নিলেন ৩৯ বছরের অমিত। গত বছর চোটের জন্য আইপিএল-এর মাঝপথ থেকে দেশে ফিরে আসেন। এ বার প্রথম ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে খালি হাতে ফিরেছিলেন। সেই শোধ যেন মঙ্গলবার সুদে আসলে তুলে নিলেন বরাবর ভারতীয় দলে ব্রাত্য থাকা এই লেগ স্পিনার। রোহিত, ঈশান, হার্দিক পাণ্ড্য ও পোলার্ডকে ফিরিয়ে বুড়ো হাড়ে ভেল্কি দেখানোর সঙ্গে জাত চিনিয়ে দিলেন, ক্রোড়পতি লিগে তিনটি হ্যাটট্রিক করা স্পিনার। ২৪ রানে ৪ উইকেট নিলেন তিনি। ১৫ রানে ২ উইকেট নিলেন তরুণ আবেশ খান।
৪ ম্যাচে ৩টি জয় ও ১টি হার। ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকার দুই নম্বরে উঠে এল পন্থের দিল্লি। কারণ রোজই যে সাপ সিঁড়ির খেলা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy