এই দু’জনের দিকেই তাকিয়ে আছে কেকেআর। ছবি পিটিআই।
এ বারের আইপিএলে আজ, রবিবার ইডেনে শেষ ম্যাচটা খেলতে নামছে কেকেআর। যে ম্যাচে কেকেআর যে জিতবেই সেটা খুব আত্মবিশ্বাসী মেজাজে বলতে পারছি না।
তার কারণটা অবশ্যই দুই দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স। দীনেশ কার্তিকের কলকাতা নাইট রাইডার্স যখন টানা ছয় ম্যাচ হেরে ধুঁকছে। সেখানে রোহিত শর্মার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ইডেনে আসছে চেন্নাইয়ে গিয়ে সিএসকে-কে হারিয়ে। চিদম্বরম স্টেডিয়ামের যে মন্থর পিচ এত দিন বিপক্ষ দলগুলোর কাছে কঠিন প্রশ্নপত্র বলে মনে হচ্ছিল, সেই পিচেই যশপ্রীত বুমরা, লাসিথ মালিঙ্গারা গতির ঝড় তুলে জিতেছে। অর্ধশতরান পেয়েছে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। তার উপরে দুই দলের সম্মুখসমরের পরিসংখ্যানটাও কেকেআরের বিপক্ষে। মুম্বই এগিয়ে ১৮-৫ ফলে।।
তা হলে কি কেকেআরের কোনও আশা নেই রবিবার জেতার? ক্রিকেট বিশ্লেষণ ও অঙ্কের বিচারে হয়তো নেই। কিন্তু ক্রিকেট মহান অনিশ্চয়তার খেলা। তার উপর প্রতিযোগিতার নাম আইপিএল। এখানে কখন কী হয়, কে জানে! দীনেশ কার্তিকের দলের আত্মবিশ্বাস এখন তলানিতে। দলটা প্রায় দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এই কেকেআর কিন্তু রবিবার দলগত ভাবে খেলবে না। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ব্যক্তিগত ভাবে জ্বলে উঠে ম্যাচ বার করতে চাইবে। সে ভাবেই যদি রবিবার ফের ইডেনে রাসেল-ঝড় ওঠে তা হলে টানা ছ’ম্যাচ হারের পরে জিততেও পারে কেকেআর।
গত কয়েক দিনে ইডেনের পিচ নিয়ে নাইটদের অনেক ক্ষোভ শুনলাম। কিন্তু আমার মতে, ইডেনের বাইশ গজ নিয়ে এই ক্ষোভ ভিত্তিহীন। ইডেনে এ বার বড় রান উঠছে। এর জন্য পিচ কিউরেটরকে ধন্যবাদ। কারণ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দর্শক চার-ছক্কা দেখতে আসেন। ৭০ রানে অলআউট দেখতে আসেন না। মনে করিয়ে দিই, শুরুতে যখন কেকেআর জিতছিল ঘরের মাঠে, তখন নাইটদের মালিক শাহরুখ খান কিন্তু এই পিচ কিউরেটরকেই তাঁর বক্সে ডেকেই অভিনন্দন জানিয়েছিলেন। দলে হঠাৎ ছন্দপতন হলে সেই দায়িত্ব নিতে হবে টিম ম্যানেজমেন্ট, অধিনায়ককে। পিচের দোষ কেন হবে? বরং উল্টোটা ভাবুন, যদি ইডেনের পিচ মন্থর এবং স্পিন সহায়ক হত, তা হলে কিন্তু এই রাসেল ঝড় উঠতো না। তখন কী হতে পারত ভাবলেই শিউরে উঠছি।
আসলে দল গঠনের সময় কিছু ভুল হয়ে গিয়েছে নাইটদের। ওরা ভেবেছিল, দুই ক্যারিবিয়ান আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারাইনকে দিয়েই কিস্তিমাত করে ফেলবে। কিন্তু ৫-৬ বছর আগের নারাইন আর এই নারাইনে প্রচুর তফাত। আগে ও উইকেটে বল রেখে কোনও বল বাইরে বার করত, কোনওটা ভিতরে ঢুকিয়ে আনত। ব্যাটসম্যান মারার জায়গা পেত না। কিন্তু বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তনের পরে নারাইনের বল সোজা আসছে। ওকে বুঝে ফেলছে বিপক্ষ। আগে সবাই ওর চার ওভার দেখে খেলত। এখন নারাইনকে আক্রমণ করছে। পেসার প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ১০ ম্যাচে তিন উইকেট পেয়েছে। তাও ও খেলে যায়। মনে হচ্ছে, রবিবার মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে প্রসিদ্ধের জায়গায় কুলদীপ যাদবকে খেলানো হবে। দ্বিতীয়ত অধিনায়ক হিসেবে দীনেশ কার্তিকের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সাহসের অভাব। শুভমন গিল আগামী দিনের ক্রিকেটার। ওপেন করতে এসে বড় রান করেছে। ক্রিস লিন যখন ধারাবাহিকতা দেখাতে ব্যর্থ, তখন বড় রান করার পরের ম্যাচেই শুভমনকে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পাঠিয়েছে। এতে ছেলেটা আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। রবিন উথাপ্পা আগের ছন্দে নেই। তা হলে কার্লোস ব্রাথওয়েটকে এত টাকা খরচ করে নেওয়ার দরকার কী ছিল?
সেখানে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বুদ্ধি করে দল গড়েছে। দলে ভারসাম্য চমৎকার। হার্দিক পাণ্ড্যর মতো বড় শট মারার লোক রয়েছে। রোজ নিয়ম করে শেষের দিকের ওভারে রান বাড়ানোটা ওর কাজ। ওর ভাই ক্রুণালও ‘চোরা পারফর্মার’। দু’টো ওভারে গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে বা ঝটিকা রান করে দলকে সুবিধাজনক জায়গায় রাখে। তার উপর যশপ্রীত বুমরা। যার স্লোয়ার, নাকল বল ছাড়াও ব্রহ্মাস্ত্র ইয়র্কার। ডান হাতি ব্যাটসম্যান হলে যে ইয়র্কার ও ফেলে ডান পায়ের গোড়ালির কাছে। এ রকম প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আমি তাকিয়ে সেই রাসেলের দিকে। আজ বুমরাকে ও কী ভাবে সামলায় সেটাই ম্যাচের বড় আকর্ষণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy