প্রত্যয়ী: ব্যক্তিগত প্রচারে বিশ্বাসী নন জোসেফ। ফাইল চিত্র
আইপিএলে অভিষেকেই মাত্র বারো রানে ছয় উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার আলজ়ারি জোসেফের রেকর্ড গড়া বোলিংয়ে শুধু দর্শকরাই নয়, মুগ্ধ মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও। ম্যাচের শেষে ‘হিটম্যান’ রেহিতকেই সাক্ষাৎকার নিতে দেখা যায় আলজ়ারির।
রোহিত বলেন, অধিনায়ক হিসেবে এর চেয়ে বেশি আর কী আশা করতে পারে কেউ। আলজ়ারি তোমার অভিষেক ম্যাচ নিয়ে কী বলবে? ‘‘অবিশ্বাস্য লাগছে। স্বপ্নের মতো শুরু করলাম। এত ভাল শুরু করতে পারব ভাবিনি,’’ বলেন আইপিএলের ইতিহাসে সেরা বোলিং করা ২২ বছর বয়সি আলজ়ারি।
শুরুটাও অসাধারণ ছিল আলজ়ারির। তাও আবার অভিষেকের প্রথম বলটা করার সময়ই ব্যাটসম্যান হিসেবে সামনে ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। এই মুহূর্তে অনবদ্য ছন্দে আছেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান। আইপিএলেও চলতি মরসুমে সর্বাধিক রান শিকারির তালিকায় তিনি আছেন শীর্ষে (২৭৯)। এ রকম দুরন্ত ছন্দে থাকা ওয়ার্নারকে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন আলজ়ারি। তাঁর শনিবারের ছয় শিকারের প্রথম। ক্যারিবিয়ান পেসারের কি কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল ওয়ার্নারের বিরুদ্ধে বোলিং শুরু করার সময়? রোহিতের প্রশ্নে আলজ়ারি বলেন, ‘‘আমি শুধু পরিকল্পনা অনুযায়ী বল করতে চেষ্টা করেছিলাম। আর কিছু মাথায় ছিল না।’’
শনিবার মাঠেও দেখা গিয়েছে উইকেট নিয়ে খুব একটা উৎসবে মাততে দেখা যায় না ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাইশ বছর বয়সি পেসারকে। শান্ত স্বভাবের আলজ়ারি কি মাঠে নিজের ভূমিকাটা কী ভাবে পালন করবেন সেটা নিয়েই শুধু মনঃসংযোগ করেন? আলজ়ারি অধিনায়ককে উত্তরে বলেন, ‘‘আমি উইকেট নিয়ে উৎসব করি না। আমি উৎসব করি দলের জয়ের। আমার লক্ষ্য শুধু উইকেট নেওয়া নয়, দলকে জেতানো।’’
আলজ়ারির উত্তর শুনে মুগ্ধ মুম্বই অধিনায়ক বলে ওঠেন, ‘‘দারুণ বলেছ। বোঝাই যাচ্ছে, তুমি কতটা দলের কথা ভাবো। আমাদের পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ কিংস ইলেভেন পঞ্জাব। যে দলে আছে ক্রিস গেল। তোমার কি বিশেষ কোনও পরিকল্পনা আছে গেলের বিরুদ্ধে?’’ আলজ়ারি বলেন, ‘‘খুব জোরে বোলিং করতে চাই।’’ বাকিটা মজা করে বলে দেন রোহিতই, ‘‘জোরে বোলিং, গেলের হেলমেটে লক্ষ করে। সঙ্গে সুইং করা।’’
শনিবার উপ্পল স্টেডিয়ামে মুম্বই প্রথমে ব্যাট করতে নেমে তুলেছিল ১৩৬-৭। আলজ়ারির বিধ্বংসী বোলিংয়ে সেই রান তাড়া করতে গিয়ে ৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায় সানরাইজার্স। ঘরের মাঠেই সানরাইজার্সের এই ম্যাচের আগে জয়ের হার ছিল ৭০ শতাংশ। কিন্তু আলজ়ারির বোলিংয়ে সেই দাপট বজায় থাকেনি সানরাইজার্সের। আলজ়ারি তুলে নেন ওয়ার্নার ছাড়াও বিজয় শঙ্কর, দীপক হুডা, রশিদ খান, ভুবনেশ্বর কুমার এবং সিদ্ধার্থ কল-এর উইকেট।
ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকেও আলজ়ারিকে প্রশ্ন করা হয়, আইপিএলে অভিষেক ম্যাচে নামার আগে তাঁর মাথায় কী চলছিল? ‘‘আমার প্রথম ম্যাচ। তাই মাঠে নেমে নিজের সেরাটা দিতে চেয়েছিলাম শুধু। স্কোরবোর্ডে কত রান রয়েছে সেটা নিয়ে ভাবিনি। প্রথম বল থেকেই তো ম্যাচ সংক্রান্ত সব তথ্য সামনে থাকে। তাই কী রকম বৈচিত্রে বল করতে হবে সেটা বোঝা যায়।’’
হায়দরাবাদের সামনে জয়ের জন্য খুব একটা বড় লক্ষ্য না থাকলেও ওয়াংখেড়ের পিচে ব্যাটিং করা যে সহজ হবে না সেটা জানতেন আলজ়ারি। ‘‘এই পিচে ব্যাটিং করা সহজ নয় জানতাম। তাই আমরা জানতাম ১২০ বলে ১৩৬ তুলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ দলের প্রথমেই যদি কয়েকটা উইকেট আমরা তুলতে পারি তা হলে ওরা চাপে পড়ে যাবে,’’ বলেন তিনি।
স্বপ্নের মতো শুরু করে ম্যাচ জেতালেও আলজ়ারির লক্ষ্য যে এখনও পুরো হয়নি সেটা মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি তিনি। ‘‘আমি খেলি জেতার জন্য। উইকেট নিয়ে অবশ্যই ভাল লাগে কিন্তু আমার লক্ষ্য দলকে চ্যাম্পিয়ন করা,’’ বলে দেন ভিভ রিচার্ডসের শহর থেকে উঠে আসা আইপিএলের
নতুন চমক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy