২২৭ রানে হারের বদলা ৩১৭ রানে জিতে নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তবুও অধিনায়ক বিরাট কোহালির জয়ের খিদে কমছে না। গোলাপি বলের টেস্টে তিনি ভারতের একমাত্র ব্যাটসম্যান, যিনি শতরান করেছেন। আগের টেস্ট জিতে ঘরের মাঠে মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে ছুঁয়ে ফেলেছেন। তবে ব্যক্তিগত নয়, দলকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন। বুধবার নতুন মোতেরায় নামার আগে ইংরেজদের হুঙ্কার দিয়ে সেটা বুঝিয়ে দিলেন ‘কিং কোহালি’। তাঁর সাংবাদিক সম্মেলন তুলে ধরা হল...
মোতেরায় ইংল্যান্ড চাপে থাকবেঃ আমরা গত কয়েক বছর একজোট হয়ে খেলছি। এটাই আমাদের শক্তি। তাই বিপক্ষের শক্তি ও দুর্বলতা নিয়ে ভাবি না। আমরা তো ইংল্যান্ডে গিয়ে ওদের হারিয়েছি। সেখানে বল অনেক বেশি সুইং করছিল। ইংল্যান্ড আমাদের নিয়ে অনেক কথা বলছে। তবে ওদেরও অনেক দুর্বলতা আছে। আমরাও তৈরি।
গোলাপি বলের টেস্ট হারের লজ্জাঃ ওরা যেমন ৫৮ রানে গুটিয়ে গিয়েছে, আমরাও তেমন ৩৬ রানে অল আউট হয়েছি। এতে লজ্জার কিছু নেই। দুটো দলই কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হেরেছিলাম। তবে ওরাও যেমন রোজ ৫৮ রানে অল আউট হবে না, আমরাও প্রতি টেস্টে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাব না। আর সেই টেস্টে হারের পরেও আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতেছিলাম। সেটাও মনে রাখা উচিত। সবাই ভুল থেকে শিখি।
Who doesn't love the crowd 🤗🤗
— BCCI (@BCCI) February 23, 2021
We are happy to have the support of #TeamIndiafans and it shall be no different at Motera 🏟️ @imVkohli #INDvENG @paytm pic.twitter.com/6m1TJPPmZu
মোতেরায় গোলাপি বলের কার্যকারিতা, ইডেন টেস্টের অভি়জ্ঞতাঃ গোলাপি বল অনেক বেশি সুইং করে। দিনের শুরু এবং বিশেষ করে গোধূলির সময় ইনিংস শুরু হলে ব্যাট করা আরও চ্যালেঞ্জ হয়ে যায়। গোলাপি বল যতক্ষণ নতুন থাকবে, ব্যাটসম্যানদের ভোগান্তি আছে। সেই জন্য অবশ্য আমাদের প্রস্তুতিও রয়েছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইডেনে সেটা বুঝেছিলাম। একে তো চড়া আলো, এর মধ্যে গোলাপি বল সবসময় চকমক করে। এই টেস্টেও স্পিনাররা বড় ভূমিকা নেবে। তবে জোরে বোলারদেরও অগ্রাহ্য করা যাবে না। গতবার প্রথম সেশনে ব্যাট করা সহজ ছিল। আর রাতে ব্যাট করা অনেকটা প্রথাগত টেস্টে সকালে ব্যাট করার মতো। লাল বলে সকালে খেলা শুরু হলে প্রথম সেশন ব্যাট করা কঠিন হয়। দিন-রাতের টেস্টে গোধূলির সময় ও রাতে ব্যাট করা তেমনই ব্যাপার। জোরে বোলারদের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ঠিক তেমনই। দুপুরের দিকে তেমন সাহায্য না পাওয়া গেলেও রাত হলেই কিন্তু আক্রমণ করা যায়। আমরা সেই ভাবে পরিকল্পনা করছি।
ভর্তি গ্যালারি অন্য মাত্রা যোগ করবেঃ মোতেরায় ৫০ হাজার সমর্থকদের চিৎকার আমাদের পাশে থাকবে। এটা বড় পাওনা। ব্যাট করতে নামার সময় সমর্থকরা চিৎকার করলে ব্যাটসম্যানের মাথা কাজ করা বন্ধ হয়ে যায়। এখানে জো রুটদের সেটা হতে পারে। তখন আমাদেরই সুবিধা।
গোলাপি বলে শতরানঃ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৩৬ রান করলেও এখানে ফের শুন্য থেকে শুরু করতে হবে। তাই প্রথাগত টেস্ট ও গোলাপি বলের টেস্টের মধ্যে আমার কাছে কোনও তফাত নেই। রান করা আমার কাজ। সেটাই করতে হবে।

গোলাপি বলে সাহেবদের মহড়া নেওয়ার আগে তৈরি হচ্ছেন ঋষভ পন্থ। ছবি - বিসিসিআই।
ইশান্তের সেঞ্চুরিঃ আমরা একসাথে বড় হয়েছি। ও যেদিন জাতীয় দলে ডাক পায়, সেদিন আমিই ওর ঘুম ভাঙিয়ে খবর দিয়েছিলাম। ইশান্তের জন্য গর্বিত। আমাদের দেশে কোনও জোরে বোলারের পক্ষে একশ টেস্ট খেলা মোটেও সোজা ব্যপার নয়। তাছাড়া ওর ভাল জিনিসগুলো জানি। তাই আমার নেতৃত্বে ইশান্ত একশ টেস্ট খেলতে নামবে, এটা ভেবে আরও ভাল লাগছে।
ইশান্ত ও অশ্বিনের মত তারকাকে সামলানোঃ অধিনায়ক হিসেবে এটাই তো আমার কাজ। ওদের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলি, যাতে দুজনের কাছ থেকে সেরাটা আদায় করতে পারি। ইশান্তের বোলিংয়ের সময় ওর আগ্রাসন ও ফিল্ডিং সাজানোয় বেশি জোর দিই। অন্যদিকে অশ্বিন খুবই চতুর। প্রতিপক্ষ সম্পর্কে সবসময় ওয়াকিবহাল। মাঝেমধ্যে আমি ব্যাটসম্যান হিসবেও ওর বিরুদ্ধে অনুশীলন করি। বোলারদের প্রত্যেকের লক্ষ্য দলকে জেতানো। সেই জন্য আমরা বিদেশেও টেস্ট জিততে পারছি। ২০ উইকেট নেওয়া অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে।
টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে ‘ক্যাপ্টেন কুল’এর সঙ্গে তুলনাঃ এই সব রেকর্ড নিয়ে একদম ভাবি না। কারণ আমার কাছে এই রেকর্ডের কোনও মূল্য নেই। একজন অধিনায়ক ও সিনিয়র ব্যাটসম্যান হিসেবে আমার কাজ দলের সেবা করা। সেটাই অনেক বছর ধরে করছি। এই সব রেকর্ড বাইরে থেকে দেখতে ভাল লাগলেও খুবই অস্থায়ী। তাছাড়া মাহি ভাই তো শুধু আমার প্রাক্তন অধিনায়ক নয়, ও আমার দাদা। ওর সাথে আত্মিক সম্পর্ক। সেখানে এই সব রেকর্ড একেবারে তুচ্ছ। মাহি ভাইও সেভাবেই বিষয়টা দেখে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপঃ সব টেস্ট জিততে চাই। এই টেস্ট জেতার পর চতুর্থ টেস্ট নিয়ে ভাবনাচিন্তা করব। তাই এই মুহূর্তে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল নিয়ে একদম ভাবতে রাজি নই।