অশ্বিনের সঙ্গে ক্যাপ্টেন কোহলি। ছবি: পিটিআই।
প্রথম টেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিল টিম ইন্ডিয়া।
শুক্রবার মোহালিতে ভারতীয় স্পিনারদের দাপটে প্রথম ইনিংসে ১৭ রানে পিছিয়ে থেকে লড়াই শেষ করতে বাধ্য হল দক্ষিণ আফ্রিকা।
পাঁচ উইকেট পেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। টেস্টে এক ইনিংসে পাঁচ উইকেট পাওয়া তাঁর এই নিয়ে ১৩ বার।
এ দিন দক্ষিণ আফ্রিকার সব ব্যাটসম্যানই আউট হলেন ভারতের স্পিনারদের বলে। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে যা বড় একটা পাওয়া যায় না। শেষ বার এমন ঘটনা ঘটেছিল চেন্নাইয়ে ২০১৩-র ফেব্রুয়ারিতে। যেখানে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দুই ইনিংসেই সব উইকেট পেয়েছিলেন ভারতীয় স্পিনাররা। অশ্বিন দুই ইনিংস মিলিয়ে পেয়েছিলেন এক ডজন উইকেট। রবীন্দ্র জাডেজা পাঁচটা ও হরভজন সিংহ দু’ইনিংসে তিনটি উইকেট পেয়েছিলেন। এ বারও সেই একই ঘটনা ফের ঘটতে চলেছে কি না, সেটাই দেখার।
তবে সে বার প্রথম ইনিংসে স্পিনারদের সামলে অজিরা প্রথম ইনিংসে ৩৮০ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪১ রান করেছিলেন। এ বার দক্ষিণ আফ্রিকা দু’শোও করতে পারল না। সাত বছর ধরে বিদেশের মাটিতে অপরাজিত থেকে টেস্ট ক্রিকেটে যারা এখন এক নম্বর দল, তাদের বিজয়রথ ভারত থামাতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।
চায়ের বিরতির আগেই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে পড়লেন বিরাট কোহলির দলের ব্যাটসম্যানরা। হাতে অঢেল সময়। তিন দিনেরও বেশি। হাসিম আমলাদের একটা বড়সড় রানের টার্গেট দিতে পারলে চতুর্থ ইনিংসে বিশাল রান তোলা যে আরও কঠিন হয়ে উঠবে, তা মোহালির উইকেট দেখলেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে।
শুক্রবার সকালেই ওপেনার ডিন এলগারের দেওয়া ক্যাচ ফেলে দিয়ে তাঁকে জীবন দান করেন উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহা। যদিও বেশ কঠিন ক্যাচ ছিল সেটা। কিন্তু সকালের দিকে কড়া রোদের মধ্যে কেন উমেশ যাদব ও বরুণ অ্যারনকে দিয়ে তিন ওভার করে বল করিয়ে গেলেন কোহলি, সেটা বোঝা গেল না। এই ছ’ওভারে কোনও উইকেট তো পড়লই না, ১৯টা রানও পেয়ে গেলেন প্রোটিয়ারা। এর পর থেকেই অশ্বিন, জাডেজা, মিশ্র টানা বোলিং শুরু করেন। এলগারকে (৩৭) ফিরিয়ে অশ্বিন তাঁর শিকার অভিযান শুরু করেন। এর পর আসেন এবি ডেভিলিয়ার্স। একদিকে তিনি, অন্য দিকে আমলা। দক্ষিণ আফ্রিকা দলের দুই স্তম্ভ। তাঁর জন্য স্লিপ, লেগ স্লিপ, শর্ট লেগ ও শর্ট মিড উইকেটে ফিল্ডার রেখে শুরু থেকেই এবিডি-কে চাপে রাখা শুরু করেন।
৪৫তম ওভারে জাডেজা এবি-র উইকেট পেয়েও যান। স্লিপ থেকে দৌড়ে এসে ছোঁ মেরে ক্যাচটা নিয়ে নেন টগবগে কোহলি। কিন্তু রিপ্লে-তে দেখা যায় জাডেজার পা ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। বহুবার রিপ্লে দেখার পর টিভি আম্পায়ার বিনিত কুলকার্নি এই সিদ্ধান্ত নেন, যা নিয়ে গুঞ্জনও শুরু হয়ে যায় মোহালি স্টেডিয়ামে। ডে’ভিলিয়ার্সের মতো ব্যাটসম্যানরা প্রাণ পেলে যা হয়, খোঁচা খাওয়া বাঘ হয়ে ওঠেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ব্যাট থেকে ৬৩ রান আসে। যা তাঁর দলকে ভারতের রানের কাছাকাছি এনে দিলেও পার করাতে পারেনি। পরের ওভারেই হাসিম আমলাকে ফিরিয়ে দেন অশ্বিন। ক্রিজ ছেড়ে বেরনো আমলাকে স্টাম্পড করার সুযোগ ছাড়েননি ঋদ্ধিমান। এর পর থেকেই তাদের অশনি সঙ্কেত দেখার শুরু। অমিত মিশ্র যখন ডেভিলিয়ার্সের স্টাম্প ছিটকে দেন, তখনই দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতকে টপকানোর আশা শেষ। তার পর টেল এন্ডাররা আর মাত্র পাঁচ রান যোগ করতে পেরেছেন।
পরিস্থিতি যা, তাতে শনিবারই ম্যাচ শেষ হয়ে যেতে পারে। বড় জোর রবিবার প্রথম সেশন পর্যন্ত গড়াতে পারে এই ম্যাচ। তবে শেষ হাসি কারা হাসবেন, তা সময়ই বলে দেবে। দক্ষিণ আফ্রিকা শিবিরে আবার খারাপ খবর, ডেল স্টেইনের কুঁচকির পেশীতে টান ধরেছে। এ দিন তো আর বল করতেই পারবেন না, শনিবারও পারেন কি না, সেটাই দেখার।
এই সংক্রান্ত আরও খবর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy