চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে বিজয় শঙ্করকে নির্বাচন করা হয়েছে।
আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য সোমবার ঘোষিত ভারতীয় দল দেখে আমি কিছু কিছু ক্ষেত্রে খুব অবাক। অতীতে ভারতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক হিসেবে কাজ করেছি। সেই অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে আমার অন্তত বিরাট কোহালিদের দলটা দেখে মনে হচ্ছে, কোথাও ভারসাম্যের অভাব রয়েছে।
এম এস কে প্রসাদের নেতৃত্বাধীন নিবার্চকমণ্ডলী দ্বিতীয় উইকেটকিপার হিসেবে ঋষভ পন্থের জায়গায় নিয়েছে দীনেশ কার্তিককে। যে সিদ্ধান্ত আমার একদমই পছন্দ হয়নি।
দ্বিতীয় উইকেটকিপার মানে ধোনি যদি চোট পায় তা হলে পরিবর্ত হিসেবে দলে আসবে। অর্থাৎ ধোনি চোট না পেলে প্রথম একাদশে আসবে না। তা-ই যদি হয়, সেক্ষেত্রে প্রায় ৩৪ বছরের দীনেশের চেয়ে ২১ বছরের ঋষভেই তো আস্থা রাখতে পারত প্রসাদরা। সেটা কেন হল না, বুঝলাম না।
আরও পড়ুন: রায়ুডু-পন্থ নয়, বিশ্বকাপের বিমানে উঠছেন কার্তিক-শঙ্কর-রাহুল
আমি ঋষভপন্থী বা দীনেশ বিরোধী নই। দীনেশ ও ঋষভের কিপিং পাশাপাশি রাখা হলে, যে কেউ চোখ বুজে দ্বিতীয় কিপার হিসাবে ঋষভকেই দলে রাখবে। দীনেশ মূলতঃ টি-টোয়েন্টির খেলোয়াড়। ওয়ান ডে-তে সে ভাবে ওর ধারাবাহিকতা কোথায়? যদি তাই থাকত, তা হলে তো ওয়ান ডে দলে নিয়মিত হয়ে যেত। ও কিন্তু মহেন্দ্র সিংহ ধোনির আগে ভারতীয় দলে এসেছে।
দলটায় ধোনি ছাড়া কিপার হিসেবে দায়িত্ব সামলাতে পারে কে এল রাহুল। তা হলে, যে ছেলেটা ঝোড়ো ব্যাটিং করে ম্যাচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখে, সেই ঋষভকে আমি কোন যুক্তিতে ব্যাটসম্যান হিসেবে দলের বাইরে রেখে দেব?
চার নম্বর ব্যাটসম্যান হিসেবে বিজয় শঙ্করকে নির্বাচন করা হয়েছে। বিজয় ব্যাটিং-অলরাউন্ডার। কিন্তু আমার মতে, ওকে চার নম্বরে নামানোটা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আইপিএলে চাপের মুখে ওর আউট হওয়ার মুহূর্তগুলো মনে করুন। দেখা যাবে, ঝুঁকিপূর্ণ শট মেরে আউট হচ্ছে। বিশ্বকাপে চাপটা কিন্তু আরও বেশি। মানছি, ওয়েলিংটনে নিউজ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৮-৪ হয়ে যাওয়ার পরে নেমে দারুণ খেলেছিল। কিন্তু তার পরেও বলব, ম্যাচ ঘোরানোর আসল খেলোয়াড় ছিল ঋষভ। ওর মতো বল জোরে মারার শক্তি বা সময়জ্ঞান আমি শঙ্করের মধ্যে দেখিনি।
পেসার হিসেবে মহম্মদ শামি, যশপ্রীত বুমরা, ভুবনেশ্বর কুমারকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখানে আর একজন পেসারকে দরকার ছিল। কারণ, দলের কম্বিনেশন হবে, সাত ব্যাটসম্যান-চার বোলার। এদের মধ্যে দুই পেসার শামি-বুমরা। দুই স্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহাল। বাকি দশ ওভার পরিস্থিতি বুঝে করবে হার্দিক ও কেদার যাদব।
এ বার শামি-বুমরা খেললে ব্যাক-আপ পেসার ভুবি। কিন্তু যদি সবুজ উইকেটে কোথাও খেলতে হয়, তখন তিন পেসারে খেলাতে হবে, একজন স্পিনার কমিয়ে। এই অবস্থায় পেসারদের কেউ চোট পেলে বিকল্প তো হাতে থাকল না।
কেউ কেউ হার্দিক পাণ্ড্যের নাম আনবে। আমার মনে হয়, ধারাবাহিক ভাবে এখনও ১০ ওভার করার ক্ষমতা হার্দিকের নেই। দরকার ছিল নবদীপ সাইনিকে। ছেলেটা আইপিএলে ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার গতিতে বল করছে। মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টিতে ভাল করেছে। প্রসাদরা সেগুলো কি দেখেনি?
আমার মনে হচ্ছে, বিরাট-সহ প্রথম তিন ব্যাটসম্যান ও ‘কুল-চা’ (কুলদীপ ও চহাল)-র কুড়ি ওভারের উপর বেশি নির্ভর করছে এই ভারতীয় দল। এই পাঁচ জনের উপর চাপটা বাড়বে। তা হলে সব দিক দিয়ে সম্পূর্ণ দল বলব কী করে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy