উচ্ছ্বাস: শতরানের পরে শিখর ধওয়ন (ডান দিকে)। রবিবার। ছবি: এপি।
জানতাম, আইসিসির প্রতিযোগিতায় শিখর ধওয়ন ভাল খেলে। কিন্তু ওভালে যে ওর এ রকম শতরান-ভাগ্য আছে তা জানা ছিল না।
বিশ্বকাপে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের আগে আইসিসির প্রতিযোগিতায় শিখরের শতরান ছিল পাঁচটি। রবিবার ওভালের মাঠে ১০৯ বলে ১১৭ রান করে দিল্লির আগ্রাসী ব্যাটসম্যান এক ঢিলে তিন পাখি মারল। আইসিসির প্রতিযোগিতায় নিজের ছয় নম্বর শতরানের পাশাপাশি ওভালেও তিনটে শতরান করে ফেলল শিখর। বিলেতে এক সময় লর্ডসে শতরান করাটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল দিলীপ বেঙ্গসরকরের। এখন ওভালে খেলতে নামলেই শতরান করাটা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলছে শিখর। ভারতীয় ওপেনারের এই শতরানের ধাক্কাই জয়ের কক্ষপথ থেকে ঠেলে দিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। ওপেনিং জুটিতে ১২৭ রান তুলেছিল শিখর ও রোহিত শর্মা। এতেই তাল হারিয়ে ফেলে অ্যারন ফিঞ্চের দল।
নির্ধারিত পঞ্চাশ ওভারে ব্যাটসম্যানদের দাপটে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ৩৫২ রান তুলেছিল ভারত। তার পরে ভুবনেশ্বর কুমার (৩-৫০) ও যশপ্রীত বুমরার (৩-৬১) নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ৩১৬ রানে অলআউট হওয়ায় ৩৬ রানে জিতল বিরাট কোহালির ভারত।
ওভালের কথা শুনলেই আমার মন একটু নস্ট্যালজিক হয়। ১৯৭১ সালে এই মাঠেই ভারতের সেই ঐতিহাসিক টেস্ট জয়। আমার অন্যতম প্রিয় মাঠ। ওভালের মাঠে ভক্সহল এন্ড থেকে বল করলে স্কোয়ার বাউন্ডারি ৬০ মিটারের চেয়েও কম। আবার প্যাভিলিয়ন এন্ড থেকে বল করলে কভার বাউন্ডারি অন্য মাঠের চেয়ে একটু বেশি। আর ওভালের পিচ সব সময়েই সাহায্য করে এসেছে ব্যাটসম্যানদের। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হল না। ইতিহাসের সেই ওভালে কোহালিদের জয় দেখে পুরনো ছবিগুলো ভেসে উঠছিল।
ওভালে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার এই দ্বৈরথ দেখতে মুখিয়ে ছিলাম বেশ কয়েকটি কারণে। প্রথমত, এ বারের বিশ্বকাপের অন্যতম দুই ফেভারিট দেশ ভারত ও অস্ট্রেলিয়া মুখোমুখি। তার উপর গত বছর অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারত টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরলেও মাস তিনেক আগে ভারতে এসে ওয়ান ডে সিরিজে ০-২ পিছিয়ে থেকেও ৩-২ জিতে ফিরেছিল অ্যারন ফিঞ্চের দল। তাই এ বার কী হয়, দেখার অপেক্ষায় ছিলাম।
রবিবার টিভিতে ওভালের পিচ দেখে মনে হল, আমার সময়ে ওভালের পিচে যে গতিতে বল আসত, এই পিচে বল আসছে তার চেয়েও কম গতিতে। পাটা উইকেট। ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। সেখানে টস জিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির ব্যাট করার সিদ্ধান্ত একদম ঠিক। গত কয়েক দিন দেখলাম ইংল্যান্ডের বিভিন্ন মাঠে বৃষ্টি হচ্ছে। ওভালে রবিবার ছিল রোদ-ঝলমলে সকাল। আমাদের সময় থেকেই ওভালের পিচ সম্পর্কে একটা কথা ক্রিকেট মহলে বহুল প্রচলিত। তা হল, রোদ থাকলে ওভালের পিচে টস জিতে ব্যাট করে নাও। তবে আমরা খেলতাম টেস্ট ম্যাচ। আর বিরাটরা খেলছে ওয়ান ডে ম্যাচ। কিন্তু এই তত্ত্বটা আজও একই রয়েছে।
শিখর যখন আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করে, তখনই ওর ব্যাটে রান আসে। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দিল্লির এই ছেলেটা ব্যাকফুটে ভাল খেলে। কাট আর পুল মারতে গিয়ে ভুল করে না। বল দেখে লাইনে গিয়ে খেলে। তার উপর ওভালের পাটা পিচে মারার ভাল জায়গা পাচ্ছিল। এই পিচে সিম মুভমেন্ট থাকলে বল নড়াচড়া করবে। তখন অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু গ্লেন ম্যাকগ্রার পরে সেই মাপের বোলার কোথায় অস্ট্রেলিয়ার? তাই স্টার্ক-কামিন্সদের খেলতে কোনও অসুবিধা হয়নি শিখরের। আর অস্ট্রেলীয়রাও ওকে এক লাইনেই বল করে গেল।
শিখরকে শুরুর দিকে যোগ্য সঙ্গত করে গিয়েছে রোহিতও। ৭০ বলে ৫৭ করে কটবিহাইন্ড হলেও এ দিন নিজের ছন্দেই ব্যাট করল রোহিত। আসলে প্রথম ম্যাচে শতরান পাওয়ায় ওর আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে গিয়েছে। এ দিন ভাগ্য খারাপ থাকায় অর্ধশতরান করার পরে ফিরতে হয়েছে ওকে।
ওভালের এই পিচে ভারতের রণনীতিটাও ছিল দারুণ। তা হল প্রথম দশ ওভারে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সকে দেখে খেলা। কারণ, বল প্রথম চার-পাঁচ ওভার নড়াচড়া করলেও, তার পরে সোজা ব্যাটে আসবে। তখন আক্রমণে যাওয়া যাবে। রোহিত শর্মা ও শিখর ধওয়ন ঠিক সেটাই করে গিয়েছে। তাই প্রথম দশ ওভারে বিনা উইকেটে ৪১ রান উঠলেও, ১৫ ওভারের শেষে ভারতীয় দলের রান দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৭৫। এ ভাবে খেলেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেটে ৩৫২ রান তুলল ভারত।
রোহিত আউট হওয়ার পরে বিরাট এসে সেই চাপটা আলগা হয়ে দেয়নি। এই ধরনের ব্যাটিং উইকেটে ম্যাচ ঘোরে মাঝের ওভারে উইকেট তুলতে পারলে। কিন্তু তা পারেনি নেথান কুল্টার-নাইল, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বা অ্যাডাম জ়াম্পারা। বরং বিরাট এই সময়ে শিখরকে নিয়ে প্রায় ১৪ ওভার খেলে স্কোরবোর্ডে ৯৩ রান জুড়েছে। ভারতীয়দের এই সময়ে অঙ্কটা ছিল পরিষ্কার। প্রতি ওভারের প্রথম তিন বলের মধ্যে চার বা ছক্কা মারার পরে বাকি তিন বলে সিঙ্গলস নিয়ে স্কোরবোর্ডে বড় রানের দিকে এগিয়ে যাওয়া। উইকেট হাতে রেখে খেলেছে বলেই শেষে গিয়ে ৩৫২-র মতো বড় রান তুলতে পেরেছে ভারত। চার নম্বরে ঝোড়ো গতিতে রান তোলার জন্য হার্দিক পাণ্ড্যকে পাঠানোও বিরাটের আরও একটা বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। যে কারণে শেষ দশ ওভারে ১১৬ রান তোলে বিরাটরা।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের আক্রমণের রাস্তায় যায়নি স্টার্করা। অপেক্ষা করেছিল বিপক্ষ কখন ভুল করবে তার জন্য। স্টার্ক তো ওর ব্রহ্মাস্ত্র ইয়র্কার সে ভাবে ব্যবহারই করল না। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার মাঝের দিকের ব্যাটসম্যানদের থিতু হতে দেয়নি ভারতীয় বোলিং। নিয়ম করে উইকেট তুলেছে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম চার ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পরে। ব্যাটিং ঝড়ের পরে এটাও জয়ের অন্যতম কারণ। তবে এ দিন ভারতের দুই রিস্টস্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহালকে দেখলাম ব্যাটসম্যানকে আক্রমণ না করে রান আটকানোর দিকে বেশি মন দিয়েছিল। ভারতীয় স্পিনার আক্রমণ করে উইকেট তুলছে দেখতে পেলে ভাল লাগত আরও।
তার উপর গত বছর অস্ট্রেলিয়া থেকে ভারত টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরলেও মাস তিনেক আগে ভারতে এসে ওয়ান ডে সিরিজে ০-২ পিছিয়ে থেকেও ৩-২ জিতে ফিরেছিল অ্যারন ফিঞ্চের দল। তাই এ বার কী হয়, দেখার অপেক্ষায় ছিলাম।
রবিবার টিভিতে ওভালের পিচ দেখে মনে হল, আমার সময়ে ওভালের পিচে যে গতিতে বল আসত, এই পিচে বল আসছে তার চেয়েও কম গতিতে। পাটা উইকেট। ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। সেখানে টস জিতে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির ব্যাট করার সিদ্ধান্ত একদম ঠিক। গত কয়েক দিন দেখলাম ইংল্যান্ডের বিভিন্ন মাঠে বৃষ্টি হচ্ছে। ওভালে রবিবার ছিল রোদ-ঝলমলে সকাল। আমাদের সময় থেকেই ওভালের পিচ সম্পর্কে একটা কথা ক্রিকেট মহলে বহুল প্রচলিত। তা হল, রোদ থাকলে ওভালের পিচে টস জিতে ব্যাট করে নাও। তবে আমরা খেলতাম টেস্ট ম্যাচ। আর বিরাটরা খেলছে ওয়ান ডে ম্যাচ। কিন্তু এই তত্ত্বটা আজও একই রয়েছে।
শিখর যখন আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট করে, তখনই ওর ব্যাটে রান আসে। এ দিনও তার ব্যতিক্রম হয়নি। দিল্লির এই ছেলেটা ব্যাকফুটে ভাল খেলে। কাট আর পুল মারতে গিয়ে ভুল করে না। বল দেখে লাইনে গিয়ে খেলে। তার উপর ওভালের পাটা পিচে মারার ভাল জায়গা পাচ্ছিল। এই পিচে সিম মুভমেন্ট থাকলে বল নড়াচড়া করবে। তখন অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু গ্লেন ম্যাকগ্রার পরে সেই মাপের বোলার কোথায় অস্ট্রেলিয়ার? তাই স্টার্ক-কামিন্সদের খেলতে কোনও অসুবিধা হয়নি শিখরের। আর অস্ট্রেলীয়রাও ওকে এক লাইনেই বল করে গেল।
শিখরকে শুরুর দিকে যোগ্য সঙ্গত করে গিয়েছে রোহিতও। ৭০ বলে ৫৭ করে কটবিহাইন্ড হলেও এ দিন নিজের ছন্দেই ব্যাট করল রোহিত। আসলে প্রথম ম্যাচে শতরান পাওয়ায় ওর আত্মবিশ্বাসটা বেড়ে গিয়েছে। এ দিন ভাগ্য খারাপ থাকায় অর্ধশতরান করার পরে ফিরতে হয়েছে ওকে।
ওভালের এই পিচে ভারতের রণনীতিটাও ছিল দারুণ। তা হল প্রথম দশ ওভারে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সকে দেখে খেলা। কারণ, বল প্রথম চার-পাঁচ ওভার নড়াচড়া করলেও, তার পরে সোজা ব্যাটে আসবে। তখন আক্রমণে যাওয়া যাবে। রোহিত শর্মা ও শিখর ধওয়ন ঠিক সেটাই করে গিয়েছে। তাই প্রথম দশ ওভারে বিনা উইকেটে ৪১ রান উঠলেও, ১৫ ওভারের শেষে ভারতীয় দলের রান দাঁড়ায় বিনা উইকেটে ৭৫। এ ভাবে খেলেই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাঁচ উইকেটে ৩৫২ রান তুলল ভারত।
রোহিত আউট হওয়ার পরে বিরাট এসে সেই চাপটা আলগা হয়ে দেয়নি। এই ধরনের ব্যাটিং উইকেটে ম্যাচ ঘোরে মাঝের ওভারে উইকেট তুলতে পারলে। কিন্তু তা পারেনি নেথান কুল্টার-নাইল, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল বা অ্যাডাম জ়াম্পারা। বরং বিরাট এই সময়ে শিখরকে নিয়ে প্রায় ১৪ ওভার খেলে স্কোরবোর্ডে ৯৩ রান জুড়েছে। ভারতীয়দের এই সময়ে অঙ্কটা ছিল পরিষ্কার। প্রতি ওভারের প্রথম তিন বলের মধ্যে চার বা ছক্কা মারার পরে বাকি তিন বলে সিঙ্গলস নিয়ে স্কোরবোর্ডে বড় রানের দিকে এগিয়ে যাওয়া। উইকেট হাতে রেখে খেলেছে বলেই শেষে গিয়ে ৩৫২-র মতো বড় রান তুলতে পেরেছে ভারত। চার নম্বরে ঝোড়ো গতিতে রান তোলার জন্য হার্দিক পাণ্ড্যকে পাঠানোও বিরাটের আরও একটা বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত। যে কারণে শেষ দশ ওভারে ১১৬ রান তোলে বিরাটরা।
ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের আক্রমণের রাস্তায় যায়নি স্টার্করা। অপেক্ষা করেছিল বিপক্ষ কখন ভুল করবে তার জন্য। স্টার্ক তো ওর ব্রহ্মাস্ত্র ইয়র্কার সে ভাবে ব্যবহারই করল না। সেখানে অস্ট্রেলিয়ার মাঝের দিকের ব্যাটসম্যানদের থিতু হতে দেয়নি ভারতীয় বোলিং। নিয়ম করে উইকেট তুলেছে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম চার ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পরে। ব্যাটিং ঝড়ের পরে এটাও জয়ের অন্যতম কারণ। তবে এ দিন ভারতের দুই রিস্টস্পিনার কুলদীপ যাদব ও যুজবেন্দ্র চহালকে দেখলাম ব্যাটসম্যানকে আক্রমণ না করে রান আটকানোর দিকে বেশি মন দিয়েছিল। ভারতীয় স্পিনার আক্রমণ করে উইকেট তুলছে দেখতে পেলে ভাল লাগত আরও।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy