Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

মজিদের টাচ না থাকুক সেই ঠান্ডা মাথাটা আছে হিউমের

বছর দুই আগেও আইএসএল বলে ভারতীয় ফুটবলে কিছু ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশের ক্লাব ফুটবলে বহু বিদেশি অনেক বছর ধরেই খেলছে। আই লিগ, তার আগে জাতীয় লিগে তো বটেই। সত্তর-আশির দশকে আমার খেলার সময়েও অনেক বিদেশি স্ট্রাইকার খেলে গিয়েছে— মজিদ, চিমা। তার পরে ব্যারেটো।

এ ভাবেই দখল নিলেন ম্যাচের। ছবি: উৎপল সরকার।

এ ভাবেই দখল নিলেন ম্যাচের। ছবি: উৎপল সরকার।

ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৭
Share: Save:

বছর দুই আগেও আইএসএল বলে ভারতীয় ফুটবলে কিছু ছিল না। কিন্তু আমাদের দেশের ক্লাব ফুটবলে বহু বিদেশি অনেক বছর ধরেই খেলছে। আই লিগ, তার আগে জাতীয় লিগে তো বটেই। সত্তর-আশির দশকে আমার খেলার সময়েও অনেক বিদেশি স্ট্রাইকার খেলে গিয়েছে— মজিদ, চিমা। তার পরে ব্যারেটো।

ওদের পাশে আটলেটিকো কলকাতার কানাডিয়ান স্ট্রাইকার হিউম কোথায় পড়বে— কথাটা ইদানীং চিন্তায় আসছিল। শুক্রবার এ বারের আইএসএলে হিউমের দু’নম্বর হ্যাটট্রিকের পর তুলনামূলক আলোচনাটা আর বোধহয় শুধু আমার মাথায় নয়, এখানকার ফুটবলমহলে অনেকের মনেই আসছে।

যদিও মজিদ, চিমা, ব্যারেটোদের সঙ্গে হিউমের সরাসরি তুলনা টানা কতটা সঠিক হবে আমি আবার বুঝছিও না! কারণ, আইএসএলের সঙ্গে আই লিগ বা এ দেশের অন্য ঘরোয়া পর্যায়ের টুর্নামেন্টগুলোর তুলনা চলে না। আই লিগে যেখানে চারটে বিদেশি, কিংবা কলকাতা লিগে যেখানে দু’জন বিদেশি খেলানো যায়, সেখানে আইএসএলে প্রতিটা টিমে ছয় জন করে বিদেশি খেলে। স্বাভাবিক ভাবেই খেলাটার মানও অনেকটাই উন্নত। যথেষ্ট আন্তর্জাতিক মানের। হিউম আইএসএলে যে পরিমাণ বিদেশি সতীর্থ পাশে পাচ্ছে, মজিদ, চিমা, ব্যারেটোর তার অর্ধেকও পাওয়ার সুযোগ ছিল না।

এ সবের পরেও বলতে পারি, হিউমের মধ্যে মজিদের সেই ম্যাজিক টাচ নেই। তবে ব্যারেটোর মতো নিজে গোল করার এবং সতীর্থকে ফাইনাল পাস বাড়িয়ে গোল করানোর ক্ষমতা রয়েছে হিউমের খেলায়। আর চিমার মতোই হিউম-ও প্রচণ্ড সুযোগসন্ধানী। ক্ষিপ্র। যদিও চিমার সেই ভয়ঙ্কর বুলেট শট হিউমের সব গোলের পিছনে দেখিনি।

শুনছি হিউমের বয়স এখন ৩২। বলা যায় ফুটবলজীবনের শেষের দিকে এসে পড়েছে। তা সত্ত্বেও দলের মার্কি ফুটবলার পস্টিগার অভাব মাঠে বুঝতে তো দিচ্ছেই না, বরং এটিকে-কে প্রায় একাই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। ওদের সেমিফাইনালে ওঠার পিছনে শেষ আট ম্যাচে হিউমের ন’গোল আমার মতে সবচেয়ে বড় ফ্যাক্টর। হিউম-ই এই মুহূর্তে আইএসএলের সেরা ধারাবাহিক ফুটবলার।

মজিদকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। ইস্টবেঙ্গলে একসঙ্গে খেলার সুবাদে। ওর মধ্যে একটা অসম্ভব ভাল গুণ ছিল, ম্যাচে যত কঠিন পরিস্থিতিই আসুক, মাথা ঠান্ডা রেখে গোল করত। হিউমের মধ্যেও সেই গুণ রয়েছে। এটিকের এ বার চরম খারাপ সময়ে হিউমই বারবার তলোয়ার হয়ে উঠছে হাবাসের। মুম্বই সিটি ম্যাচের আগে হারের হ্যাটট্রিক করেছিল কলকাতা। সেই অবস্থা থেকে হিউমই টেনে বার করল।

তবে আবারও বলব, আই লিগের মতো টুর্নামেন্টে, যেখানে ওর পাশে বিদেশির তুলনায় ভারতীয় ফুটবলারই সংখ্যায় বেশি থাকবে, সেখানে হিউম কিন্তু এখনও পরীক্ষিত নয়। তবে ওর গোল করার খিদে এতটাই বেশি যে, মনে হয় আই লিগেও খারাপ করবে না। কিছু গোল করবেই। ভারতে যদি ও আরও একটু কম বয়সে আসত হয়তো মজিদ-চিমা-ব্যারেটোর সঙ্গেই ওর নাম উচ্চারণ করতে হত।

যদিও এটা এখনই বলে দেওয়া যায়, আইএসএলে যে সমস্ত বিদেশি খেলছে, তাদের মধ্যে গত দু’ বছরের পারফরম্যান্সের বিচারে হিউমই আমার দেখা সেরা ফুটবলার।

অন্য বিষয়গুলি:

iain hume isl bhaskar gangopadhay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE