কার্লোস আলকারাজ। ছবি: রয়টার্স।
ছোট থেকে স্বপ্ন দেখতেন উইম্বলডন জেতার। প্রথম বার ফাইনালে উঠেই বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম চ্যাম্পিয়ন কার্লোস আলকারাজ। নোভাক জোকোভিচকে হারানোর মুহূর্তকেই জীবনের সব থেকে খুশির বলে চিহ্নিত করেছেন ২০ বছরের তরুণ। যদিও কোর্টে নামার আগেও ভাবেননি জোকোভিচকে হারাতে পারবেন।
ফাইনালের শুরুতেই পিছিয়ে পড়েছিলেন। প্রথম সেটে জোকোভিচের কাছে ১-৬ ব্যবধানে হেরে যান। দ্বিতীয় সেট থেকে অন্য চেহারায় দেখা গিয়েছে আলকারাজকে। ২৩টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাবের মালিকের সামনে তুলে দেন প্রতিরোধের দেওয়াল। ৪ ঘণ্টা ৪২ মিনিটের লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছেন রাফায়েল নাদালের দেশের তরুণ তুর্কি। টেনিস বিশেষজ্ঞদের একাংশ তাঁকে আগামী দিনের মহাতারকা হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। এ সব নিয়ে ভাবছেন না আলকারাজ। তিনি নিজেই ম্যাচের আগে জেতার কথা ভাবেননি।
বরিস বেকার এবং বিয়ন বর্গের পর তৃতীয় কনিষ্ঠতম খেলোয়াড় হিসাবে উইম্বলডন জিতেছেন আলকারাজ। স্বীকার করে নিয়েছেন এই খেতাবটা আন্তরিক ভাবেই জিততে চেয়েছিলেন। নতুন উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন বলেছেন, ‘‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরেও বলব, এই ট্রফিটা সত্যিই জিততে চাইতাম। তবে এত তাড়াতাড়ি জিতব ভাবিনি। এটাই আমার জীবনের সব থেকে খুশির মুহূর্ত। সত্যি বলতে, ফাইনাল শুরুর আগেও ভাবিনি পাঁচ সেটের খেলা হলে জোকোভিচকে হারাতে পারব। এ রকম একটা ঐতিহাসিক ম্যাচ খেলতে পারব তাও ভাবিনি। এক জন কিংবদন্তির বিরুদ্ধে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ঠিক জায়গায় থেকে লড়াই করা সহজ নয়। এই ম্যাচ থেকেও অনেক কিছু শিখতে পারলাম।’’
দু’টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতা হয়ে গেলেও আলকারাজের বয়স যে সত্যিই কম, তা বোঝা যাচ্ছে তাঁর কথাতেই। পেশাদার সার্কিটে কথা বলার বিষয়টি সম্ভবত এখনও ভাল ভাবে রপ্ত করতে পারেননি তিনি। ফাইনালে ওঠার পরেই তিনি বলেছিলেন, ‘‘জানি খুব কঠিন একটা ম্যাচ খেলতে হবে। এটুকু বলতে পারি আমি লড়াই করব। নিজের উপর আস্থা রয়েছে আমার। বিশ্বাস করি ফাইনালে জোকোভিচকে হারাতে পারব।’’ সেমিফাইনাল জেতার পর যিনি ফাইনালে জয়ে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনিই খেতাবি লড়াইয়ের আগে বিশ্বাস করতে পারেননি পাঁচ সেটের খেলা হলে জোকোভিচকে হারাতে পারবেন! নাকি ফাইনালের আগে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতেই উদ্বেগ লুকিয়ে আত্মবিশ্বাসের কথা বলেছিলেন?
এই জয়ের পর নিজের উচ্ছ্বাস গোপন করেননি আলকারাজ। এ ক্ষেত্রেও শোনা গিয়েছে তাঁর পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। তিনি বলেছেন, ‘‘আমি নিজের জন্য জিতেছি। এই জয় কোনও টেনিস প্রজন্মের নয়। সত্যি বলতে জোকোভিচের বিরুদ্ধে এই জয়-ই সেরা। এই পর্যায় জোকোভিচ ইতিহাস তৈরি করেছে। ১০ বছর উইম্বলডনের সেন্টার কোর্টে অপরাজিত থাকা কারও বিরুদ্ধে জয় সত্যিই অসাধারণ। এই অনুভূতি কখনও ভুলতে পারব না।’’ এর পরেই আলকারাজ বলেছেন, তিনি মনে করেন তাঁর এই সাফল্য অন্য তরুণ খেলোয়াড়দেরও উৎসাহিত করবে। উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন বলেছেন, ‘‘আমার এই জয় নতুন প্রজন্মের কারও জন্য দুর্দান্ত ব্যাপার। মনে হয় জোকোভিচের বিরুদ্ধে আমার জয় দেখার পর নতুনরাও ওকে হারানোর কথা ভাববে। বুঝতে পারবে জোকোভিচকে হারানোর ক্ষমতা ওদেরও আছে। এই জয়টা আমার জন্য তো বটেই, নতুন প্রজন্মের জন্যও তাই দুর্দান্ত।’’
গত বছর ইউএস ওপেন চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন আলকারাজ। চোটের জন্য অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলেননি এ বছর। ফরাসি ওপেনে সেমিফাইনালে হেরে যান। তার পর উইম্বলডন তাঁর দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব। গত ২০ বছরে জোকোভিচ ছাড়া রজার ফেডেরার, রাফায়েল নাদাল এবং অ্যান্ডি মারে ছাড়া আর কোনও খেলোয়াড় বছরের তৃতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিততে পারেননি। সেই অসাধ্য সাধন করে দেখালেন আলকারাজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy