দর্শক পস্টিগা। রবিবার।
আপনি কবে আবার আটলেটিকো জার্সিতে মাঠে নামবেন?
রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি বক্সে গালে হাত দিয়ে বসে থাকা পর্তুগিজ স্ট্রাইকারকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় থেকে উৎসব পারেখ যিনিই দেখছেন, তিনিই এই প্রশ্ন ছুড়ে দিচ্ছিলেন রবিবার ম্যাচের সময়।
হেল্ডার পস্টিগা তাঁদের দিকে তাঁকিয়ে ম্লান হেসে বলছেন, ‘‘চেষ্টা করছি। ব্যথাটা এখনও রয়েছে। দেখি কবে ফিরতে পারি।’’
গত বছর পুরো আইএসএলে খেলেছিলেন মাত্র একটা ম্যাচ। এ বার এখনও পর্যন্ত দেড়খানা। তার পর থেকে কোমরের পিছনের নীচের অংশের চোটে কাবু হয়ে মাঠের বাইরে।
কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচে চোট পেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পর টিমের ডাক্তার এটিকে মার্কি-কে তিন সপ্তাহ বিশ্রাম নিতে বলেছিলেন। কিন্তু এ দিন পস্টিগা যা বললেন তাতে কলকাতায় পরের দু’টি ম্যাচে (দিল্লি এবং মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে) তো নয়ই, তার পর গুয়াহাটিতে নর্থইস্টের বিরুদ্ধে খেলা নিয়েও সংশয়ে রয়েছেন নিজেই। বিরতির সময় গ্যালারিতে বসে পস্টিগা বলছিলেন, ‘‘আমি দুঃখিত। গত বার একটার বেশি ম্যাচ খেলতে পারিনি। এ বারও টিমকে সার্ভিস দিতে পারছি না। টিম মাঠে পয়েন্ট নষ্ট করছে। আমার হতাশ লাগছে। মনে হচ্ছে নর্থইস্ট ম্যাচ বা তার পর হয়তো মাঠে নামতে পারব।’’
পস্টিগার কথাই যদি সত্যি হয়, তা হলে টানা পাঁচ ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন না। জোসে মলিনার এক সহকারী অবশ্য বলছিলেন, ‘‘আমরা তো ওকে মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে নামানোর কথা ভেবেছিলাম। যদি ও অন্য কথা বলে তা হলে অবশ্য আলাদা কথা।’’ বোঝাই যায় টিমের মধ্যেই সবথেকে দামী ফুটবলারকে নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। টিম কর্তাদের মধ্যে যা আরও বেশি করে সংক্রামিত। প্রায় সকলের প্রশ্ন, পাঁচ কোটির স্ট্রাইকার শেষ পর্যন্ত ক’টা ম্যাচ খেলতে পারবেন?
মার্কি ফুটবলার বাছার সময় কলকাতার কর্তারা অন্তত পাঁচজনকে নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। অনেকেই পস্টিগাকে মার্কি হিসেবে চাননি। কারণ তিনি চোট-প্রবণ ফুটবলার। পুরো টুর্নামেন্টে তাঁর সার্ভিস পাওয়া কঠিন। কিন্তু খরচের কথা ভেবে এবং মাদ্রিদ কর্তাদের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত তাঁকেই ফিরিয়ে আনা হয়। এবং আবার ভোগান্তির শুরু। চিন্তারও।
হা-হুতাশ শুরু হয়ে গিয়েছে জোসে মলিনার ড্রেসিংরুমেও। চার ম্যাচের তিনটেতে ড্র করে বেশ চাপে এটিকে। গোয়ার সঙ্গে ড্র করে ফিরে দ্যুতি-হিউমদের স্প্যানিশ কোচ বলেছেন, ‘‘আমাদের গোল করার আরও লোক দরকার। পস্টিগা সুস্থ না হলে সমস্যা হবে।’’
পস্টিগা কবে ফিরবেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও ঘরের মাঠের দু’নম্বর ম্যাচ থেকে কিন্তু দর্শক বিনোদনের প্যাকেজ ফিরিয়ে এনেছেন এটিকে কর্তারা। পরিবেশ আদালতের অনুমতি নিয়ে, ‘জিতবে কে এটিকে’ স্লোগান ফেরার পাশাপাশি থিম সং-ও বাজছে। তবে রবীন্দ্র সরোবরের পাখিরা ভয় পেতে পারে ভেবে বাজি পোড়ানোর অনুমতি দেয়নি আদালত। প্রথম ম্যাচের ‘অন্ধকার’ কাটিয়ে দর্শক স্বাচ্ছন্দ্য বাড়লেও হিউম-অর্ণবদের দেখতে মাঠে দর্শক উপচে পড়ছে না আগের মতো। হয়তো উৎসবের মরসুম চলছে বলেই। কেউ কেউ আবার বলছেন, টিমে দর্শক টানার মতো ব্র্যান্ড কোথায়? যাদের দেখতে ভিড় হবে।
মুম্বই থেকে এসেছেন এটিকের অন্ধ ভক্ত গায়ত্রী সেন। চকোলেট ব্যবসায়ী। গত দু’বছর টিমের সঙ্গে সর্বত্র ঘুরছেন। পস্টিগার ভক্ত হতাশ গলায় বলছিলেন, ‘‘ওর থেকে জার্সি পেলাম। চকোলেট দিলাম। সব ঠিক আছে। কিন্তু খেলাটাই তো দেখতে পেলাম না।’’
গায়ত্রীর মতোই অসংখ্য এটিকে-ভক্ত জানেন না পস্টিগা আরও কত ম্যাচ শো-পিস হয়ে থাকবেন!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy