Harbhajan Singh and Geeta Basra's amazing love story,Yuvraj Singh Played the Cupid dgtl
bollywood
যুবির মাধ্যমে যোগাযোগ, বিয়ের আগে বলি নায়িকার সঙ্গে একতরফা প্রেম ছিল হরভজনের
আলাপ আরও গাঢ় হয় আইপিএল উপলক্ষে। প্রথম আইপিএলের সময়ে হরভজনের কাছে দু’টি টিকিট চেয়েছিলেন গীতা। টিকিট দেওয়ার সময় হরভজন তাঁকে কফিপানের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ১৪:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
টেলিভিশনের পর্দায় দেখেই প্রেমে পাগল। বহু কষ্টে জোগাড় করেন ফোন নম্বর। কিন্তু ও দিক থেকে বিশেষ সাড়া আসে না। প্রায় ১০ মাসের চেষ্টার পরে হরভজনের প্রেমের প্রস্তাবে সম্মতি জানান গীতা বসরা। এর পর ৮ বছর প্রেমপর্ব পেরিয়ে অবশেষে সাতপাকে বাঁধা পড়েন দু’জনে।
০২২৩
বলিউডে অভিনেত্রী গীতার দ্বিতীয় ছবি ছিল ‘দ্য ট্রেন’। ২০০৭ সালে মুক্তি পাওয়া এই ছবির একটি গান টেলিভিশনে দেখেন হরভজন। তখনই তাঁর মাথায় চেপে বসে, এই নায়িকার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
০৩২৩
কিন্তু ভাজ্জি তখন বলিউডের কাউকেই চেনেন না। তবুও হাল ছাড়লেন না। বেশ কিছু দিন চেষ্টার পরে পেলেন ছবির নায়িকা গীতার নম্বর। নায়িকা গীতার কাছাকাছি পৌঁছতে হরভজনকে সাহায্য করেছিলেন যুবরাজ সিংহ। ফোন নম্বর পেয়ে গীতাকে
মেসেজ করে একসঙ্গে চা-পানের আমন্ত্রণ জানান ভাজ্জি। কিন্তু গীতা সেই প্রস্তাব এড়িয়ে যান।
০৪২৩
পরে অবশ্য ভাজ্জিকে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অভিনন্দন জানান গীতা। আলাপ আরও গাঢ় হয় আইপিএল উপলক্ষে। প্রথম আইপিএলের সময়ে হরভজনের কাছে দু’টি টিকিট চেয়েছিলেন গীতা। টিকিট দেওয়ার সময় হরভজন তাঁকে কফিপানের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
০৫২৩
এ বার আর গীতা সেই প্রস্তাব এড়িয়ে যেতে পারেননি। তিনি কফি ডেটে এলেন। তবে হরভজনের ইঙ্গিত বুঝে প্রেমের প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে যান। গীতা চেয়েছিলেন প্রথম দিকে শুধুই ভাল বন্ধু হয়ে থাকতে।
০৬২৩
গীতার জন্ম ১৯৮৪ সালের ১৩ মার্চ, ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথে। প্রবাসী পঞ্জাবি পরিবারের এই তরুণী এসেছিলেন মুম্বইয়ে। নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। প্রথম ছবি ‘দিল দিয়া হ্যায়’ মুক্তি পেয়েছিল ২০০৬ সালে। সে সময় প্রেমের সম্পর্কে যেতে আগ্রহীও ছিলেন না তিনি।
০৭২৩
তবে হরভজনও সহজে পিছিয়ে আসার পাত্র নন। তিনি গীতার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক জিইয়ে রাখলেন এক তরফাই। প্রায় ১ বছর পরে তাঁর প্রস্তাবে ‘হ্যাঁ’ বলেন গীতা।
০৮২৩
পরে এক সাক্ষাৎকারে গীতা জানিয়েছিলেন তাঁর বন্ধুরা সকলে হরভজের প্রশংসা করেছিলেন। তাই সব দিক ভেবে তিনি রাজি হয়ে যান প্রেমের প্রস্তাবে সম্মতি জানাতে।
০৯২৩
হরভজন এবং গীতা তাঁদের সম্পর্ক যতটা সম্ভব লুকিয়ে রাখতেন। সংবাদ মাধ্যমের সামনেও কোনও দিন স্বীকার করেননি তাঁদের প্রেমের কথা। ২০১৫ সালের নভেম্বরে জালন্ধরে পঞ্জাবি রীতিনীতি মেনে তাঁরা বিয়ে করেন।
১০২৩
২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথে জন্ম হয় হরভজন-গীতার একমাত্র সন্তানের। মেয়ের নাম তাঁরা রেখেছেন হীনায়া হীর প্লাহা।
১১২৩
যে স্বপ্ন নিয়ে গীতা ভারতে পা রেখেছিলেন, সেই সফল নায়িকা হওয়ার ইচ্ছে অবশ্য অধরাই থেকে যায়। দ্বিতীয় ছবির ৬ বছর পরে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর তৃতীয় ছবি ‘জিলা গাজিয়াবাদ’।
১২২৩
২০০৬ থেকে ২০১৬-র মধ্যে গীতা মাত্র ৬টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। তাঁর শেষ ছবি ‘লক’ মুক্তি পেয়েছে ২০১৬ সালে। মা হওয়ার পরে অভিনয় জগতকে পুরোপুরি বিদায় জানিয়েছেন তিনি।
১৩২৩
হরভজন-গীতার প্রেমপর্ব নাটকীয় হলেও একটা সময় ভাজ্জি জানিয়েছিলেন, তিনি শুধুমাত্র পরিবারের পছন্দ করা পাত্রীকেই বিয়ে করবেন। সে সময় বেশ কয়েক বার বিয়ের প্রস্তাব ফিরিয়েও দিয়েছিলেন তিনি।
১৪২৩
হরভজন চেয়েছিলেন কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনে আরও একটু থিতু হওয়ার পরে বিয়ে করবেন। ২০০০ সালে তাঁর বাবার হঠাৎ মৃত্যুর পরে পরিবারের দায়দায়িত্ব এসে পড়েছিল ভাজ্জির উপরেই।
১৫২৩
তখন জাতীয় দলে হরভজনের যাত্রা সবে শুরু হয়েছে। ১৯৯৮ সালের মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তাঁর টেস্ট অভিষেক হয়। সে বছরই তিনি সুযোগ পান ওয়ান ডে-তেও। ক্রমে তাঁর অফস্পিন হয়ে ওঠে দলের অন্যতম সম্পদ।
১৬২৩
সে সময়ের টিম ইন্ডিয়ার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হরভজন সিংহ ছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের অন্যতম ভরসা। অফ স্পিনের জাদুতে বাজিমাত করলেও হরভজন তাঁর ক্রিকেটারজীবন শুরু করেছিলেন ব্যাটসম্যান হিসেবে।
১৭২৩
তাঁর প্রথম কোচ চরণজিৎ সিংহ ভুল্লার তাঁকে ব্যাটসম্যান হিসেবেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছিলেন। খেলার গতিপথ পাল্টে যায় ভুল্লারের আকস্মিক মৃত্যুতে। পরের কোচ দবীন্দ্র অরোরা তাঁকে তৈরি করেন স্পিনার হিসেবে।
১৮২৩
হরভজনের ক্রিকেটার হওয়াটাও ছিল মূলত তাঁর বাবা সর্দার সরদেব সিংহ প্লাহার ইচ্ছে। সরদেব সিংহের ছিল বল বেয়ারিং এবং ভালভ তৈরির কারখানা। পাঁচ বোনের মধ্যে একমাত্র ভাই হরভজন চেয়েছিলেন পারিবারিক ব্যবসার হাল ধরতে। কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে বলেন ক্রিকেটার হিসেবে কেরিয়ার এগিয়ে নিয়ে যেতে।
১৯২৩
বাইশ গজে ভারতের বহু জয়ের নেপথ্য কারিগর হরভজনের কেরিয়ার শেষ দিকে ক্ষত বিক্ষত হয়েছিল চোট আঘাতজনিত সমস্যায়। ২০১৫ সালে তিনি শেষ টেস্ট এবং ওয়ান ডে খেলেন।
২০২৩
কেরিয়ারের ১০৩ টেস্টে তাঁর মোট উইকেট শিকার ৪১৭টি। সেরা পারফরম্যান্স ৮৪ রানে ৮ উইকেট। রান করেছেন ২,২২৪। ২৩৬টি ওয়ান ডে-তে নিয়েছেন ২৬৯টি উইকেট। সেরা পারফরম্যান্স ৩১ রানে ৫ উইকেট। রান করেছেন ১,২৩৭। আইপিএলে খেলেছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স এবং চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে।
২১২৩
সাফল্যের পাশাপাশি এসেছে বহু বিতর্কও। অফ ফর্ম, বিতর্ক সব কিছু কাটিয়ে বার বার ঘুরে দাঁড়িয়েছেন হরভজন সিংহ। প্রতি বারই পাশে পেয়েছেন স্ত্রী গীতাকে।
২২২৩
জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য বন্ধ বহু দিন। সেখানে ফেরা কার্যত অসম্ভব। ইতিমধ্যেই হাওয়ায় ভেসে বেরিয়েছে তাঁর অবসরের প্রশ্ন। তবে হরভজন আছেন নিজের ছন্দে। জীবনকে উপভোগ করছেন।
২৩২৩
হরভজন সিংহ অভিনয় করেছেন ‘মুঝসে শাদি করোগি’-সহ বেশ কিছু ছবিতেও। মাঠে এবং মাঠের বাইরে এ ভাবেই বর্ণময় থাকতে চান সহযোদ্ধাদের প্রিয় ‘ভাজ্জি’, ভক্তদের পছন্দের ‘টার্বানেটর’।