রবিবার সন্ধ্যায় ইন্ডিয়ান সুপার লিগের উদ্বোধন যখন হবে, তখন যুবভারতীর অর্ধেক মাঠই খালি থাকবে!
বলিউড তারকা থেকে কিংবদন্তি ক্রিকেটার, দেশের তাবড় শিল্পপতি থেকে কর্পোরেট জগতের টাইকুন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী, বাংলার শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদদের উপস্থিতিতে চোখ ধাঁধানো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে যুবভারতীতে। মহড়া শুরু হয়ে গিয়েছে বুধবার থেকেই। শুক্রবারই প্রিয়ঙ্কা চোপড়াদের এসে পড়ার কথা শহরে। অনুষ্ঠানের রিহার্সালের জন্য। এ রকম গালা অনুষ্ঠান সত্ত্বেও এক লাখ দশ হাজার দর্শকাসনের স্টেডিয়ামের মাত্র ৬৮ হাজার টিকিট বিক্রির জন্য ছাড়া হয়েছে। এ দিন সংগঠকদের তরফ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করে বলা হয়, দর্শকরা যাতে আন্তর্জাতিক মানের আবহ মাঠে পান, সে জন্যই এই ব্যবস্থা। কলকাতার ডার্বি ম্যাচের মতো গা ঘষাঘষি করে দর্শকদের বসতে দিতে নাকি নারাজ তাঁরা।
চব্বিশটা কর্পোরেট বক্সের বেশির ভাগ বিক্রি হয়ে গেলেও সাধারণ গালারির টিকিট বিক্রি এখনও তেমন আশাপ্রদ নয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আর চার দিনও বাকি নেই। উদ্যোক্তারা দাবি করছেন, কুড়ি হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে। মাঠে যাতে দর্শকেরা আসেন তার জন্য এ দিন থেকেই ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডান ক্লাবের সদস্য ও স্কুল-কলেজ ছাত্রদের জন্য অর্ধেক দামে দশ হাজার টিকিট বিক্রির কথাও ঘোষিত হল সাংবাদিক সম্মেলনে। আইএফএ-র নথিভুক্ত যত ক্লাব আছে, তাদের ফুটবলাররাও পরিচয়পত্র দেখালে অর্ধেক দামে টিকিট পাবেন।
আটলেটিকো দে কলকাতা-র অন্যতম মালিক উত্সব পারেখ অবশ্য বললেন, “আশা করছি পুরো মাঠ ভর্তি হয়ে যাবে। দর্শকদের জন্য যে ব্যবস্থা করা হচ্ছে তা ভারতীয় ফুটবলের কোনও মাঠে কখনও হয়নি। পুরোটাই হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের। খাবার স্টল থেকে বাথরুম, বাকেট চেয়ার, সব নিখুঁত করার চেষ্টা হচ্ছে।” সমর্থকরা যাতে রাতে ম্যাচ দেখে বাড়ি ফিরতে পারেন সে জন্য পঞ্চাশটি বিশেষ বাসের ব্যবস্থা থাকছে। মাঠ ফেরত দর্শকদের বিনা ভাড়ায় যেগুলো পৌঁছে দেবে মেট্রো স্টেশন, হাওড়া, শিয়ালদহ এবং ধর্মতলায়।
অমিতাভ বচ্চন আসবেন বলে উদ্যোক্তারা ঘোষণা করেছেন ইতিমধ্যেই। বিগ বি যদি ছেলে অভিষেকের টিমের সঙ্গে আসেন, তা হলে অমিতাভ-সচিন তেন্ডুলকর যুগলবন্দিও দেখবে কলকাতা। যা এই শহরে আগে কখনও ঘটেনি। তবে চেন্নাই ও গোয়া ফ্র্যাঞ্চাইজির দুই অন্যতম মালিক, যথাক্রমে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি এবং বিরাট কোহলির না আসার সম্ভাবনা বেশি। কারণ, সেই সময় ভারতের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ চলবে। তবে উত্সব পারেখ জানাচ্ছেন, তা সত্ত্বেও অনুরোধ করা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে। অনুমতি পেলে তাঁরাও আসবেন। নামী সঙ্গীত পরিচালক জুটি সেলিম-সুলেমানের অন্যতম সেলিম মার্চেন্টের সুরের মূর্ছনায় মঞ্চে নাচবেন ‘মেরি কম’ খ্যাত প্রিয়ঙ্কা চোপড়া। অনুষ্ঠানের শুরুতে আলো জ্বালানো ছ’শো ফুটবল হাতে মাঠের ভেতর আইএসএলের লোগো ফুটিয়ে তুলবে দু’শো কিশোর-কিশোরী।
যার পরেই চুনী গোস্বামী, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, তুলসীদাস বলরামদের উপস্থিতিতে দেখানো হবে ১৯৫১ থেকে ’৬২—ভারতীয় ফুটবলের স্বর্ণযুগের ক্লিপিংস। গৌরবগাঁথা শেষ হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গেই সুরের মূর্ছনায় ডুবে যাবে স্টেডিয়াম। আট ফ্র্যাঞ্চাইজি শহরের আট সেরা বাদক-সুরকারের সুরধ্বনী শুরু হয়ে যাবে। সেই তালিকায় কে নেই? বাংলার বিক্রম ঘোষ থেকে চেন্নাইয়ের শিবামণি, গোয়ার বন্ডো থেকে মুম্বইয়ের তৌফিক সবাই আসছেন ছ’শো কোটির ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনকে স্মরণীয় করে রাখতে। তাঁদের সঙ্গে থাকবেন ১৬০ জন মিউজিশিয়ান। আতসবাজি প্রদর্শন, লেজার শো-সহ আরও চমকপ্রদ কিছু থাকছে উদ্বোধনী প্যাকেজে।
কেবল এ রকম একটা জমজমাট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে রক্তচক্ষু দেখাতে পারে প্রকৃতি! কারণ, হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, ঘুর্ণিঝড় ‘হুদহুদ’ নাকি ওই দিনই আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশার সমুদ্র উপকূলে। তার প্রভাবে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে কলকাতাতেও!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy