রোলাঁ গারোর মেয়েদের ফাইনালে গত বারের উইম্বলডনের রিপ্লে! সেই সেরিনা উইলিয়ামস বনাম গার্বিন মুগুরুজা চূড়ান্ত লড়াই। ভেনিজুয়েলায় জন্ম, সুইৎজারল্যান্ডে বসবাস, টেনিসে প্রতিনিধিত্ব করেন স্পেনের— এমন অদ্ভুত মিশেল মাস দশেক আগে সেরিনার একুশতম গ্র্যান্ড স্ল্যাম খেতাব আটকাতে পারেনি। যেখানে তার পর যুক্তরাষ্ট্র ওপেন আর অস্ট্রেলীয় ওপেনে মার্কিন কিংবদন্তির ‘বাইশ’-এ পৌঁছে স্টেফি গ্রাফের সর্বাধিক (২২) গ্র্যান্ড স্ল্যাম জেতার রেকর্ড স্পর্শ করাকে সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত ভাবে আটকে দিয়েছেন রবার্তা ভিঞ্চি আর অ্যাঞ্জেলিক কের্বার। বাইশ বছরের ছ’ফুটি মুগুরুজা এ বার কি পারবেন?
ইতিহাসের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকলেও সেরিনা কিন্তু ভাল খেলছেন না। এ দিনই ফরাসি ওপেন সেমিফাইনালে দু’টো সেট পয়েন্ট বাঁচিয়ে শেষমেশ অবাছাই ডাচ তরুণী কিকি বার্টেন্সকে বশ করেন ৭-৬ (৯-৭), ৬-৪। যা দেখে প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন মেরি পিয়ার্স বলেছেন, ‘‘সেরিনার আজ জয় আমার কাছে অপ্রত্যাশিত। কারণ ও মোটেই জেতার মতো খেলেনি। প্রথম সেটটা তো ভাগ্যক্রমে জিতেছে। দু’টো সেট পয়েন্ট পেয়ে গিয়েও জীবনের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম সেমিফাইনাল খেলার চাপ সামলাতে পারেনি কিকি। তা ছাড়া সেরিনাকে কোর্ট বদলানোর সময় একটু খুঁড়িয়ে হাঁটতেও দেখলাম যেন!’’ কিন্তু পিয়ার্স পাশাপাশি এও বলেছেন, ‘‘তবে সেরিনা এ জন্যই বিশ্বের এক নম্বর কেননা এ রকম ম্যাচও জেতার কোনও একটা রাস্তা ঠিক বার করে নেয় ও। নইলে শুধু প্রথম সেটেই ২২টা আনফোর্সড এরর করা কেউ শেষমেশ ম্যাচ জিততে পারে!’’
সেরিনাও সেমিফাইনাল শেষে কোর্টেই প্রায় নিখুঁত ফরাসি উচ্চারণে বলে দেন, ‘‘শনিবার ফাইনালের দিনটা এ বার আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। আমাকে আরও বেশি ঠান্ডা থাকতে হবে। নিউইয়র্ক আর মেলবোর্নে সেমিফাইনাল-ফাইনালে যা পারিনি।’’ অন্য ম্যাচে স্তোসুরকে ৬-২, ৬-৪ হারিয়ে জীবনের দ্বিতীয় গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠেন বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে চার নম্বর মুগুরুজা। যাঁর রোলাঁ গারোয় অবশ্য প্রথম ফাইনাল। সেখানে সেরিনা শুক্রবার তাঁর ২৭তম গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে ওঠেন। মেয়েদের সর্বকালীন তালিকায় যেটা পাঁচ নম্বরে। এভার্ট (৩৪), নাভ্রাতিলোভা (৩২), স্টেফি (৩১), মার্গারেট কোর্টের (২৯) পরেই।
সুতরাং শনিবারের ফাইনালে ফেভারিট কে সেটা কেবল এই একটা পরিসংখ্যানেই আন্দাজ পাওয়া যায়! সাধে কি আর পিয়ার্স বলছেন, ‘‘সেরিনাকে খেলতে দেখা মানে সেল্টিক, পিএসজি বা বার্য়ানকে খেলতে দেখা। এরাও যে কোনও অবস্থায় সব সময় জয়ীই হয়। আর সেটা কোনও রসিকতা নয়!’’
রবিবার পুরুষদের ফাইনালেও মাইলফলক তৈরি হতে পারে। এবং সেই সামিট যুদ্ধের লাইন-আপও কী অসাধারণই না! বিশ্বের এক নম্বর নোভাক জকোভিচ বনাম দুই নম্বর অ্যান্ডি মারে। রোলাঁ গারোতেও যাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় বাছাই। বিশ্বসেরা জকোভিচ তাঁর একমাত্র অধরা গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফরাসি ওপেন জিততে পারলে রবিবারই পূর্ণ করে ফেলবেন কেরিয়ার গ্র্যান্ড স্ল্যাম। শুক্রবার সেমিফাইনালে জকোভিচ প্রতিভাবান অস্ট্রিয়ান ডমিনিক থিয়েমের চ্যালেঞ্জ স্ট্রেট সেটে চুরমার করে দেন ৬-২, ৬-১, ৬-৪। যিনি আগের দিন তাঁর কোয়ার্টার ফাইনাল জয়কে ‘ভাগ্যক্রমে’ বলেছিলেন। স্ট্রেট সেটে জেতা সত্ত্বেও।
আসলে জকোভিচ ওই ম্যাচে একটা পয়েন্ট হারানোর হতাশায় র্যাকেট মাটিতে ছুড়ে মারলে সেটা আচমকা লাফিয়ে এক লাইনজাজের দিকে উড়ে যায়। তাঁর গায়ে লাগলে অবধারিত মার্চিং অর্ডার পেতেন চেয়ার আম্পায়ারের। অল্পের জন্য বেঁচে যান সেই লাইনজাজ। তার চেয়েও বেশি বাঁচেন টেনিসের জোকার। এ দিন অন্য সেমিফাইনালে গত বারের চ্যাম্পিয়ন ওয়ারিঙ্কাকে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে দেন মারে। ৬-৪, ৬-২, ৪-৬, ৬-২।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy