মোহনবাগানের দুই গোলদাতা কামিংস এবং পেত্রাতোস (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
মোহনবাগান ৩ (পেত্রাতোস, কামিংস, সাদিকু)
জামশেদপুর ০
শুক্রবার জামশেদপুর এফসি-র মুখোমুখি হওয়ার আগে প্রতিপক্ষ দলকে নিয়ে সমীহের সুর ছিল মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের গলায়। জানিয়েছিলেন, জামশেদপুরের সেট-পিস এবং নিয়ন্ত্রিত আক্রমণ খেয়াল রাখতে হবে তাঁদের। কিন্তু ম্যাচের দিন খালিদ জামিলের দলের সব প্রতিরোধ খড়কুটোর মতো উড়ে গেল। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে যে জামশেদপুরকে দেখা গিয়েছিল, তাঁর ছিটেফোঁটাও দেখা গেল না শুক্রবারের যুবভারতীতে। অনায়াসে ৩-০ গোলে জিতল মোহনবাগান। পয়েন্ট তালিকায় তিনে উঠে এল তারা। দিমিত্রি পেত্রাতোস, জেসন কামিংস এবং আর্মান্দো সাদিকু— দলের তিন বিদেশি স্ট্রাইকারই গোল করলেন।
মোহনবাগানের এই ম্যাচে দু’জন ফুটবলারের কথা উল্লেখযোগ্য। প্রথম জন জনি কাউকো। দলে আসার পর থেকেই যে ভূমিকা দেওয়া হয়েছে তা নিখুঁত ভাবে পালন করে চলেছেন। দলের খেলাকে নিয়ন্ত্রণ করছেন তিনি। বেশির ভাগ আক্রমণই হচ্ছে তাঁর পা থেকে। অন্য জন মনবীর সিংহ। তিনি নিজে গোল পাচ্ছেন না ইদানীং। কিন্তু গোলের পাস বাড়াচ্ছেন ভালই। শুক্রবার তিনটে গোলের অ্যাসিস্টই পঞ্জাব-তনয়ের। উইং ধরে তাঁর দৌড় বেসামাল করে দিচ্ছে প্রতিপক্ষ দলকে।
শুরুতে প্রথম পাঁচ মিনিট দু’দলের খেলাতেই সাবধানতা লক্ষ করা যায়। গোল করব না, খাবও না, এই মনোভাব নিয়েই এগোচ্ছিল দু’দল। আচমকাই গোল পেয়ে যায় মোহনবাগান। এখানে কাউকোর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাঁর ডিফেন্সচেরা পাস ডান দিকে পেয়ে যান মনবীর সিংহ। কিছুটা দৌড়ে প্রায় কর্নার ফ্ল্যাগের কাছে পৌঁছে যান তিনি। সেখান থেকে মাপা নীচু ক্রস করেন পেত্রাতোসের উদ্দেশে। চলতি বলে পা ছুঁইয়ে বল জালে জড়ান অস্ট্রেলিয়ার স্ট্রাইকার।
গোলের পরে ঊরুতে চাপড় মেরে পরিচিত ভঙ্গিতে উচ্ছ্বাস করেন পেত্রাতোস। তবে বার বার আঙুল তুলে মনবীরের দিকে দেখাতে থাকেন। গোল তাঁর হলেও আসল কৃতিত্ব যে মনবীরের, সেটাই গ্যালারির উদ্দেশে ইঙ্গিত করে বোঝাতে চান তিনি।
কিছু ক্ষণ পরেই আরও একটা গোলের সুযোগ আসে মোহনবাগানের সামনে। কোনাকুনি লম্বা পাস পেয়ে নিয়ন্ত্রণ করে জামশেদপুরের বক্সে ঢুকে পড়েন লিস্টন কোলাসো। কিন্তু ঠিক জায়গায় বল রাখতে পারেননি। কিছুটা দূরে থাকা পেত্রাতোসকে পাস দিলে নিশ্চিত গোল ছিল। লিস্টনও যদি একটু মাথা ঠান্ডা করে বল রাখতেন তা হলে গোল হতে পারত। কোনওটাই হয়নি। প্রথমার্ধের খেলায় এর পর দুই দলই একাধিক বার একে অপরের বক্সে আক্রমণ হেনেছে।
জামশেদপুরের হয়ে ইমরান খান এবং জেরেমি মানজ়োরো বার বার উঠে আসছিলেন মোহনবাগানের অর্ধে। মানজ়োরোর বেশ কিছু কর্নার এবং ফ্রিকিক থেকে বিপদ তৈরি হতে পারত। খারাপ খেলেননি ড্যানিয়েল চিমাচুকুও। অন্য দিকে, মোহনবাগানের আক্রমণের বেশির ভাগটাই আসছিল কাউকোর পা থেকে। প্রথমার্ধের শেষের দিকে মনবীর আবার একটি ভাল পাস দিয়েছিলেন পেত্রাতোসকে। এ বার অসি স্ট্রাইকার বল ধরে শট করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তা ক্লিয়ার হয়ে যায়।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে জামশেদপুর। সমতা ফেরানোই যে লক্ষ্য সেটা প্রথম থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু গোল করার মতো সঠিক লোকের অভাব বোঝা যাচ্ছিল। চিমা ছাড়া আর কেউ ছিলেন না যিনি বল ধরে গোল করতে পারেন। জেভিয়ার সিভেরিয়োকে শুরু থেকে নামানো হলেও তিনি নজর কাড়তে ব্যর্থ।
সুযোগের সদ্ব্যবহার করে মোহনবাগানই। ৬৪ মিনিটের মাথায় কামিংসের শট লাগে ক্রসবারে। ফিরতি বলে মনবীরের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তার পাঁচ মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল করে মোহনবাগান। এখানেও আক্রমণ শুরু হয় সেই কাউকোর থেকেই। তিনি পাস দেন মনবীরকে। পঞ্জাবি ফুটবলার সময় পাস বাড়ান কামিংসকে। গোল বাঁচানোর চেষ্টায় এগিয়ে এসেছিলেন বিপক্ষ গোলকিপার রেহেনেশ। কিন্তু তাঁর পাশ কাটিয়ে বল জালে জড়ান কামিংস।
দ্বিতীয় গোলের পরেই কাউকো, লিস্টনকে তুলে নেন হাবাস। তাতে মোহনবাগানের আক্রমণ কমেনি। তৃতীয় গোল আসে ৮১ মিনিটে। মাঝমাঠ থেকে বাঁ দিকে মনবীরের উদ্দেশে পাস দেন পেত্রাতোস। কিছুটা দেখে নিয়ে মনবীর বল বাড়ান ফাঁকায় থাকা সাদিকুকে। চলতি বলে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন আলবেনিয়ার স্ট্রাইকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy