Advertisement
E-Paper

দ্বিতীয় দল নিয়েও সুপার কাপের সেমিফাইনালে মোহনবাগান, অনামী ফুটবলারেরাও নজর কাড়লেন সবুজ-মেরুন জার্সিতে

ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে সুপার কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মোহনবাগানের মুখোমুখি হয়েছিল কেরল। বাগানের দ্বিতীয় সারির দলের কাছে হারল কেরল। দেশীয় ফুটবলারদের পায়েই জয় বাগানের।

football

গোলদাতা সাহালের (ডান দিকে) সঙ্গে অধিনায়ক দীপক টাংরি। ছবি: সমাজমাধ্যম।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:২৫
Share
Save

ইস্টবেঙ্গলের প্রথম সারির দলকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল কেরল ব্লাস্টার্স। নোয়া সাদাইউ, জেসুস জ়িমেনেজ়দের খেলা দেখে মনে হয়েছিল, পরের ম্যাচে মোহনবাগানের কপালে দুঃখ আছে। কারণ, সুপার কাপে দ্বিতীয় সারির দল খেলানোর কথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিল সবুজ-মেরুন। দলে মাত্র এক বিদেশি। পর্তুগালের নুনো রেইস কেমন খেলেন তা সবুজ-মেরুন সমর্থকদের অজানা। আইএসএল খেলা দেশীয় ফুটবলারদের মধ্যেও বেশির ভাগই নেই। কোচের আসনে হোসে মোলিনার জায়গায় বাস্তব রায়। এই মোহনবাগান কী ভাবে গোয়াকে হারাবে সেই জল্পনাই চলছিল বাগান সমর্থকদের মনে। শনিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে বাগানের সেই দেশীয় ফুটবলারেরাই বাজিমাত করলেন। দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে কেরলের পূর্ণশক্তির দলকে হারিয়ে দিল মোহনবাগান। গোল করলেন সাহাল আব্দুল সামাদ ও সুহেল ভাট। ২-১ গোলে কেরলকে হারিয়ে বাগান জায়গা করে নিল সুপার কাপের সেমিফাইনালে।

মোহনবাগানের প্রথম একাদশের দিকে তাকালে বোঝা যাবে যে সুপার কাপকে মূলত দেশীয় ফুটবলারদের প্রস্তুতির মঞ্চ হিসাবে দেখছে তারা। সাহাল, আশিক কুরুনিয়ন, দীপক টাংরি ও দীপেন্দু বিশ্বাস আইএসএলে খেলেছেন। তা-ও প্রতিটি ম্যাচে খেলেননি তাঁরা। বেশির ভাগ ম্যাচেই সাহাল, আশিক ও দীপক পরিবর্ত হিসাবে নেমেছেন। অভিষেক সূর্যবংশী ও সুহেলও কয়েকটি ম্যাচেই খেলেছেন। এই ম্যাচে গোলে ছিলেন ধীরজ সিংহ। বিশাল কাইথ থাকায় যাঁর আইএসএলে একটি ম্যাচও খেলা হয়নি। সঙ্গে অমনদীপ, সৌরভ ভানওয়ালা, সালাউদ্দিনের মতো তরুণদের খেলাল বাগান। সবুজ-মেরুন জার্সিতে নজর কাড়লেন তাঁরা। আলাদ করে বলতে হয় সালাউদ্দিনের কথা। তিনি যে ভাবে ডান প্রান্ত ধরে ক্রমাগত আক্রমণ করলেন তা নিশ্চয় জমা থাকবে কোচ বাস্তবের নোটবুকে। পাশাপাশি গোলের নীচে নজর কাড়লেন ধীরজ। বেশ কয়েকটি অব্যর্থ গোল বাঁচালেন তিনি। যেন জবাব দেওয়ার মঞ্চ হিসাবে এই ম্যাচকে দেখছিলেন ভারতের তরুণ গোলরক্ষক। নিজের কাজে সফল তিনি।

শুরু থেকে খেলার দখল বেশি ছিল কেরলের। নোয়া, দানিশ ফারুক, জ়িমেনেজ়রা একের পর এক আক্রমণ তুলে আনছিলেন। কিন্তু বাগানের রক্ষণ মজবুত ছিল। চার ডিফেন্ডারের সামনে ছিলেন টাংরি। তাঁর দায়িত্ব ছিলেন রক্ষণকে সাহায্য করা। সেই পরিকল্পনায় সফল বাস্তব। আক্রমণের দায়িত্ব ছিল সাহাল, আশিক, সালাউদ্দিন ও সুহেলের। তাঁরাও নিজেদের কাজে সফল। প্রতি-আক্রমণ থেকে যে কয়েক বার উঠলেন, ভয়ঙ্কর দেখাল এই তরুণ ভারতীয়দের।

কেরল বোধহয় ভাবেনি, দ্বিতীয় সারির মোহনবাগান তাদের এতটা বেগ দেবে। কিন্তু তারা ভুলে গিয়েছিল, এই দলটা আইএসএলের দুটো ট্রফিই ঘরে তুলেছে। হতে পারে সেখানে যারা খেলেছিলেন, তাঁদের বেশির ভাগই সুপার কাপে নেই। কিন্তু দলের সকলে তো একসঙ্গেই অনুশীলন করেন। জেমি ম্যাকলারেন, দিমিত্রি পেত্রাতোস, গ্রেগ স্টুয়ার্টদের দেখেই তো অনুপ্রেরণা পান সালাউদ্দিন, সুহেলরা। তাঁরা স্বপ্ন দেখেন, যে দিন সুযোগ পাবেন, সকলকে দেখিয়ে দেবেন। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে সেটাই দেখালেন বাগানের ফুটবলারেরা।

২২ মিনিটের মাথায় প্রথম গোল করে মোহনবাগানের। ডান প্রান্ত ধরে অনেকটা বল নিয়ে যান সালাউদ্দিন। নাওচা সিংহকে পরাস্ত করে বক্সে ঢোকেন তিনি। তাঁর গতির কাছে পরাস্ত হন নাওচা। বক্সে ঢুকে তিনি বল বাড়ান সাহালের দিকে। সাহাল সেই বল ধরে ঠান্ডা মাথায় সচিন সুরেশের উপর দিয়ে জালে জড়িয়ে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের ৫১ মিনিটের মাথাতেও সেই প্রান্ত ধরে আক্রমণেই গোল তুলল বাগান। এ বার কাজটা করলেন আশিক। টাংরির কাছ থেকে বল পেয়ে কেরলের ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢোকেন তিনি। তাঁর মাইনাস ডান পায়ের টোকায় জালে জড়িয়ে দেন সুহেল। কেরলের রক্ষণে মিলোস ড্রিনচিচের মতো বিদেশি থাকার পরেও দু’টি গোলের ক্ষেত্রেই রক্ষণ যা ভুল করল তা ক্ষমার অযোগ্য। এক এক সময় সাহাল, আশিকেরা তো কেরলের রক্ষণের সঙ্গে ছেলেখেলা করছিল। এক বারও দেখে মনে হচ্ছিল না, দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে খেলছে তারা।

কেরলের হয়ে নজর কাড়লেন নোয়া। ঠিক যে ভাবে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তিনি খেলছিলেন, সে ভাবেই খেলার চেষ্টা করলেন। বার বার প্রান্ত ধরে আক্রমণে উঠলেন। কিন্তু কাজের কাজ করতে পারলেন না নোয়া। তার জন্য অবশ্য কৃতিত্ব প্রাপ্য বাস্তবের। ইস্টবেঙ্গলের কোচ অস্কার ব্রুজ়ো যে ভুল করেছিলেন তা করলেন না তিনি। নোয়াকে বল নিয়ে বক্সে ঢোকার জায়গা দিলেন না। তাঁর সঙ্গে কেরলের বাকি ফুটবলারদের দূরত্ব বেশি রাখলেন। ফলে চেষ্টা করলেও গোল করতে পারলেন না নোয়া। ২-০ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর আবার সুহেলের বদলে গ্লেন মার্টিন্সকে নামিয়ে দিলেন বাস্তব। অর্থাৎ, টাংরির পাশে একই রকম এক জন ফুটবলারকে নামালেন। ফলে ডিফেন্সের উপর চাপ আরও কিছুটা কমল।

এই ম্যাচে আক্রমণের থেকেও বেশি প্রশংসা পাওয়া উচিত বাগানের ডিফেন্ডারদের। রক্ষণভাগের ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়া না থাকলে দলের সমস্যা হয়। বাগানের এই রক্ষণভাগ এর আগে একসঙ্গে খেলেনি। সেই অর্থে দীপেন্দু ছাড়া বাকিরা তেমন মাঠেই নামেননি। কিন্তু এক বারও তা দেখে মনে হল না। রক্ষণের লাইন ঠিক থাকল। এক জন ডিফেন্ডারের সঙ্গে আর এক জন ডিফেন্ডারের দূরত্ব কম ছিল। ফলে ফাঁক পাচ্ছিল না কেরল। বেশ কয়েক বার কেরল আক্রমণ করলেও তাড়াহুড়ো করেননি ডিফেন্ডারেরা। ঠান্ডা মাথায় বিপদ কাটিয়ে ফেলেন। আর বাকি কাজটি করলেন ধীরজ। এক বারই তাঁকে পরাস্ত করতে পারল কেরল। তা-ও সংযুক্তি সময়ে। শেষ পর্যন্ত ১-২ গোলে হেরেই মাঠ ছাড়তে হল তাদের।

শনিবার অপর কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি এফসি গোয়া ও পঞ্জাব। এই ম্যাচে যারা জিতবে তারা সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে মোহনবাগানের। এ দিনের জয় আশা বাড়িয়ে দিয়েছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের। মরসুমে আরও একটি ট্রফি জেতার স্বপ্ন দেখা শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা।

Mohun Bagan Kerala Blasters FC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।