গত মরসুমে আইএসএলে লিগ-শিল্ড জয়ের জন্য মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে গ্রুপে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছিল। শুধু তাই নয় মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে জেতা ছাড়া কোনও পথ খোলা ছিল না।
এ বার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ মোহনবাগানের অনুকূলে। লিগ-শিল্ড জিততে জেমি ম্যাকলারেনদের দরকার আর মাত্র তিন পয়েন্ট। ম্যাচ বাকি তিনটে। শুধু তাই নয়। আগামী শনিবার কেরল ব্লাস্টার্স যদি এফসি গোয়াকে হারিয়ে দেয়, তা হলে ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে রবিবার মাঠে নামার আগেই লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন হয়ে যাবে মোহনবাগান। কিন্তু মনবীর সিংহদের দেখলে কে বলবে খেতাব প্রায় হাতের মুঠোয়? কেরল ম্যাচের পরে ফুটবলারদের এক দিন বিশ্রাম দিয়েছিলেন কোচ হোসে ফ্রান্সিসকো মলিনা। মঙ্গলবার থেকে তিনি ওড়িশা-দ্বৈরথের প্রস্তুতি শুরু করলেন।
চোট থাকায় মনবীর মাঠের ধারে হাল্কা অনুশীলন করায় আশঙ্কা তৈরি হয় ওড়িশার বিরুদ্ধে তাঁর খেলা নিয়ে। কিন্তু মোহনবাগান তারকা জানিয়ে দিলেন, যে কোনও মূল্যে খেলতে চান। মনবীরের কথায়, ‘‘ওড়িশার বিরুদ্ধে জিতলেই আমরা টানা দ্বিতীয় বার লিগ-শিল্ড জিতব। এই ম্যাচ না খেলে কখনও থাকা যায়? যে কোনও মূল্যে আমি মাঠে নামতে চাই।’’ কিন্তু চোট যদি না সারে? সিংহের মতোই গর্জে উঠে মনবীর বললেন, ‘‘আমার চোট এমন কিছু গুরুতর নয়। তা ছাড়া ম্যাচ তো রবিবার। অনেক সময় রয়েছে। আমরা আর অপেক্ষা করতে চাই না। রবিবার ওড়িশাকে হারিয়েই লিগ-শিল্ড জিতে নিতে চাই।’’ তবে সাহাল আব্দুল সামাদ এবং আশিস রাইকে নিয়ে অস্বস্তি দূর হচ্ছে না।
যুবভারতীতে মঙ্গলবার বিকেলে আশিস দলের সঙ্গে অনুশীলন না করে রিহ্যাব করে গেলেন। সাহাল তো মাঠেই আসেননি। অনিরুদ্ধ থাপা পুরোদমেই অনুশীলন করলেন। অবশ্য মোহনবাগানের দল এ বার এতটাই শক্তিশালী যে, কোনও ফুটবলার ছিটকে গেলেও মাথায় পাহাড় ভেঙে পড়ে না মলিনা-র। প্রতিটি বিভাগেই একাধিক বিকল্প। কেরলের বিরুদ্ধে কার্ড সমস্যায় গ্রেগ স্টুয়ার্ট ছিলেন না। খেলতে পারেননি সাহাল, আশিস এবং অনিরুদ্ধও। তাতে কিন্তু জয়রথ থামেনি মোহনবাগানের। অসাধারণ ভাবে মাঝমাঠ সামলেছিলেন আপুইয়া ও দীপক টাংরি। আক্রমণে ঝড় তোলেন জেসন কামিংস ও ম্যাকলারেন।
কেরলের বিরুদ্ধে ৩-০ জয়ের রাতে জোড়া গোল করেছিলেন ম্যাকলারেন। একটি গোল করেন রক্ষণের অন্যতম স্তম্ভ আলবার্তো রদ্রিগেস। রবিবারের যুবভারতীতে কে হবেন মোহনবাগানের জয়ের নায়ক, এখন সেটাই দেখার।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)