খেলা শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন সুয়ারেস। এ বারের মতো বিশ্বকাপ অভিযান শেষ তাঁর। ছবি: রয়টার্স
তাঁকে যখন তুলে নিচ্ছেন উরুগুয়ের কোচ দিয়েগো আলোন্সো, তখন হাসি মুখে বেরোচ্ছেন তিনি। দল এগিয়ে ২-০ গোলে। অন্য দিকে পর্তুগালের বিরুদ্ধে ১-১ ফলে ড্র চলছে দক্ষিণ কোরিয়ার খেলা। কিন্তু ম্যাচের শেষে বদলে গেল সেই ছবি। পর্তুগালের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কোরিয়া এগিয়ে যেতেই তাঁর চোখে জল। আর ম্যাচ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়লেন উরুগুয়ের স্ট্রাইকার লুই সুয়ারেস। খালি হাতেই তাঁকে বিশ্বকাপ থেকে ফিরতে হল। যেমনটা ফিরতে হয়েছিল আট বছর আগে। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে। সে বার কামড়ের শাস্তি পেতে হয়েছিল তাঁকে। আর এ বার তাঁকে শাস্তি দিল দক্ষিণ কোরিয়ার নাছোড় ফুটবল।
দক্ষিণ কোরিয়া এগিয়ে যাওয়ায় সুয়ারেস জানতেন, একমাত্র আরও একটি গোল করলে তবেই পরের রাউন্ডে যেতে পারবেন তাঁরা। এডিনসন কাভানিরা অনেক চেষ্টা করেও গোল করতে পারেননি। একটা করে গোল মিস্ হয়েছে, সুয়ারেসের মুখ তত কালো হয়েছে। জার্সি দিয়ে অর্ধেক মুখ ঢেকে বসেছিলেন কয়েক মিনিট। চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল জল। খেলার শেষ বাঁশি বাজতেই জার্সিতে মুখ ঢেকে ফেলেন তিনি। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, কাঁদছেন। আরও একটি বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের যন্ত্রণা কুরে কুরে খাচ্ছিল তাঁকে।
আট বছর আগে নিজের ভুলে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল সুয়ারেসের। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে গ্রুপের ম্যাচে ইতালির ডিফেন্ডার জর্জিয়ো চিয়েল্লিনির ঘাড়ে কামড়ে দিয়েছিলেন সুয়ারেস। দাগ বসে গিয়েছিল। রেফারিকে গিয়ে সেই দাগ দেখিয়েছিলেন চিয়েল্লিনি। অন্য দিকে সুয়ারেস তখন দাঁত ধরে মাটিতে বসে রয়েছেন। ভাবখানা এমন, তাঁর দাঁতে লেগেছে। রেফারি সে সবে আমল দেননি। লাল কার্ড দেখিয়েছিলেন সুয়ারেসকে। পরে তাঁকে ৯ ম্যাচ নির্বাসিত করেছিল ফিফা। সে বারের বিশ্বকাপে আর কোনও ম্যাচ খেলতে পারেননি সুয়ারেস। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে কলম্বিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিয়েছিল সুয়ারেস-হীন উরুগুয়ে।
আট বছর পরে কাতারে হয়তো নিজের শেষ বিশ্বকাপ খেলতে নেমেছিলেন সুয়ারেস। কেরিয়ারের পড়ন্ত বিকেলে দাঁড়িয়ে তিনি। লিভারপুল, বার্সেলোনা ঘুরে এখন নিজের দেশের ক্লাব নাসিয়োনালে খেলেন। বিশ্বকাপেও ছন্দে ছিলেন না। দ্বিতীয় ম্যাচে তো তাঁকে প্রথম একাদশেই রাখেননি কোচ।
তবে ঘানার বিরুদ্ধে পরিশ্রম করছিলেন সুয়ারেস। দৌড়চ্ছিলেন। গোলের সুযোগ তৈরি করছিলেন। গোল করার চেষ্টা করছিলেন। উরুগুয়ের গোল দু’টিও হয়েছে তাঁর হাত ধরেই। ২৬ মিনিটের মাথায় সুয়ারেস গোল লক্ষ্য করে শট নেন। বাঁচিয়ে দেন আতি-জিগি। ফিরতে বলে গোল করেন আরাস্কায়েতা। ছ’মিনিট পরেই দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় তারা। এ বারও গোল করেন আরাস্কায়েতা। ফাকুন্দো পেলিস্ত্রির উঁচু করে ভাসানো বলে নুনেজ় হেডে নামিয়ে দেন সুয়ারেসের উদ্দেশে। সুয়ারেসের পাস পেয়ে গোল করেন আরাস্কায়েতা। কিন্তু তাতে শেষ রক্ষা হল না। চোখের জলেই আরও এক বার বিশ্বকাপকে বিদায় জানালেন ‘এল পিস্তলেরো’ (স্প্যানিশ ভাষায় সুয়ারেসকে ভালবেসে এই নামেই ডাকেন তাঁর ভক্তরা)। আরও এক বার। হয়তো শেষ বার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy