Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Brazil Football

বিশ্বকাপে আর ব্রাজিল নেই! পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হার, সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়া

বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে হেরে ছিটকে গেলেন নেমাররা। অতিরিক্ত সময়ে নেমারের গোলেও লাভ হল না। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়া জিতল ৪-২ ব্যবধানে।

হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেন নেমাররা।

হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিলেন নেমাররা। ছবি: রয়টার্স

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০২২ ২৩:১৬
Share: Save:

ব্রাজিল ১ (নেমার)

ক্রোয়েশিয়া ১ (পেটকোভিচ)

টাইব্রেকারে ৪-২ ব্যবধানে জয়ী ক্রোয়েশিয়া

প্রতিযোগিতার অন্যতম দাবিদার ধরা হয়েছিল তাদের। যে কোনও সমীক্ষায় এগিয়ে রাখা হচ্ছিল তাদেরই। কিন্তু আবার, আরও এক বার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার কাছে টাইব্রেকারে ২-৪ ব্যবধানে হেরে গেল তারা। নির্ধারিত সময়ে কোনও গোল হয়নি। অতিরিক্ত সময়ে ব্রাজিলের নেমার গোল করলেও শেষ দিকে সমতা ফেরান ব্রুনো পেটকোভিচ। টাইব্রেকারে ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার ডোমিনিক লিভাকোভিচ বাঁচিয়ে দেন রদ্রিগোর শট। চতুর্থ শটে মার্কুইনোস পোস্টে মারেন। ক্রোয়েশিয়া চারটিতেই গোল করেছে।

দক্ষিণ কোরিয়াকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে উড়িয়ে দেওয়ার পর মনে করা হয়েছিল, ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে ব্রাজিলের লড়াইও সহজ হবে। কিন্তু প্রথম থেকেই ক্রোয়েশিয়া বুঝিয়ে দেয়, তাদের অবস্থা কোনও ভাবেই দক্ষিণ কোরিয়ার মতো হবে না। জ্লাটকো ডালিচের ছেলেরা পণ করেই নেমেছিলেন, গোল দিতে না পারুন, কোনও ভাবেই গোল খাবেন না। ফলে আক্রমণ নেমার, ভিনিসিয়াস-সমৃদ্ধ ব্রাজিল শুরু থেকে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকলেও কিছুতেই গোলের মুখ খুঁজে পায়নি। যত বারই ক্রোয়েশিয়ার অর্ধে বল গিয়ে, ব্রাজিলের ফুটবলারদের ছেঁকে ধরেছেন লুকা মদ্রিচরা, গাভারদিয়লরা। পাস খেলার মতো জায়গাই পাচ্ছিলেন না নেমাররা। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে ফাঁকা জায়গা কাজে লাগিয়ে যে ভাবে এতগুলি গোল পেয়েছিলেন, তার ছিটেফোঁটাও পাওয়া যায়নি ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে।

রাফিনহা ডান দিক থেকে এক বারও সক্রিয় হয়ে উঠতে পারেননি। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে অ্যান্টনিকে নামিয়ে দেন তিতে। তার পর ডান দিক সচল। ব্রাজিলকে গোলের জন্য তবু অপেক্ষা করতে হয় অতিরিক্ত সময় পর্যন্ত। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধের একেবারে শেষ দিকে একক দক্ষতায় গোল করেন নেমার। তার পরে রক্ষণাত্মক হয়ে যাওয়ার বদলে আরও একটি গোলের লক্ষ্যে আক্রমণাত্মক হয়ে যায় ব্রাজিল। সেটাই কাল হয়ে দাঁড়ায়। অতিরিক্ত সময়ের শেষ দিকে গোল করেন পেটকোভিচ।

প্রথম থেকে ব্রাজিলকে চাপে রাখার চেষ্টা করতে থাকে ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলকে খেলার জন্য একটুও খোলা জায়গা দিচ্ছিল না তারা। বলের নিয়ন্ত্রণ বেশি ছিল ক্রোয়েশিয়ার পায়ে। মূলত প্রতি আক্রমণে গোলের চেষ্টা করছিল ক্রোয়েশিয়া। ১৩ মিনিটের মাথায় ডান দিক থেকে ক্রস করেছিলেন মদ্রিচ। কিন্তু সেই ক্রসে পা ঠেকাতে পারেননি পেরিসিচ।

নিজেদের আরও রক্ষ্মণাত্মক ভঙ্গিতে মুড়ে নেয় ক্রোয়েশিয়া। ব্রাজিলের কোনও ফুটবলার বল ধরলেই ছেঁকে ফেলতে থাকেন তিন-চার জন। তবে ব্রাজিলের ফুটবলাররা বল তাড়া করে যান। ২২ মিনিটে পর পর দু’টি আক্রমণ করে ব্রাজিল। প্রথমে ভিনিসিয়াস, তার পর নেমার। কিন্তু দু’টি প্রয়াসই ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ আটকে দেয়। ক্রোয়েশিয়াকে বেশি মনোযোগ দিতে দেখা যায় নেমারকে আটকানোর দিকে। তাঁকে ফাউল করা হতে থাকে বার বার। বাঁ দিকে ভিনিসিয়াসও গোলের মুখ খুলতে পারেননি।

৪২ মিনিটের মাথায় ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রিকিক করা হয়। নেমারের পাস বিপক্ষ ফুটবলারের গায়ে লেগে হালকা ঘুরে গেলেও জমা পড়ে গোলকিপারের হাতে। বিরতিতে আর কোনও গোল হয়নি।

বিরতির পরে আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়ে দেয় ব্রাজিল। ম্যাচ শুরু হওয়ার দু’মিনিট পরেই জোড়া আক্রমণ বাঁচিয়ে দেয় ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণ ভাগ। নেমারের শট গাভারদিয়লের পায়ে লেগে নিজের গোলেই ঢুকে যাচ্ছিল। ঝাঁপিয়ে বাঁচান ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার লিভাকোভিচ। তার পরে ক্রোয়েশিয়ার এক ফুটবলারের হাতে বল লাগলেও রেফারি ভার-এর সঙ্গে পরামর্শ করে পেনাল্টি না দেওয়ার পক্ষে সিদ্ধান্ত নেন।

৫৭ মিনিটে রাফিনহাকে তুলে অ্যান্টনিকে নামান তিতে। ডান দিক থেকে আক্রমণ বাড়াতে চাইছিলেন তিনি। নেমেই ডান দিকে পাস বাড়িয়েছিলেন অ্যান্টনি। অল্পের জন্য গোল হয়নি। কিছু ক্ষণ পরে পাকুয়েতার দুরন্ত শট বাঁচিয়ে দেন লিভাকোভিচ। গোলকিপারের মাথায় উপর দিয়ে লব করতে গিয়েছিলেন পাকুয়েতা। লিভাকোভিচের হাতে লেগে বল কর্নার হয়ে যায়। এর পর নেমারের শট বাঁচিয়ে দেন ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার। আবার গোলের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু সে বারও লিভাকোভিচ ত্রাতা হয়ে ওঠেন। ৮০ মিনিটের মাথায় অ্যান্টনির ক্রস পেয়েছিলেন রদ্রিগো। তাঁর থেকে পাস পেয়েছিলেন পাকুয়েতা। তাঁর শট আবার আটকে দেন সেই লিভাকোভিচ।

অতিরিক্ত সময়ের শুরু থেকেই গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ব্রাজিল। কিছুতেই একটাও আক্রমণ দানা বাঁধছিল না। বার বার ক্রোয়েশিয়ার বক্সে গিয়ে প্রতিহত হচ্ছিল তাদের আক্রমণ। এর মাঝেই দুর্দান্ত সুযোগ পেয়েছিল ক্রোয়েশিয়া। বক্সের মধ্যে ভাল বল পেলেও বারের উপর দিয়ে উড়িয়ে দেন ব্রোজোভিচ। সহজ সুযোগ নষ্ট করে ক্রোয়েশিয়া।

অপেক্ষার মুহূর্ত শেষ হয় ১০৫ মিনিট। নেমারের অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। মাঝমাঠ থেকে মুভ শুরু করেছিলেন নেমারই। প্রথমে পাস খেলেন পেদ্রোর সঙ্গে। সেখান থেকে নেমার বল পেয়ে দেন পাকুয়েতাকে। পাকুয়েতার থেকে পাস পেয়ে গোলকিপার লিভাকোভিচকে এক টোকায় কাটিয়ে বল জালে জড়ান নেমার।

ব্রাজিল ভেবেছিল তারা সেমিফাইনালে উঠে গিয়েছে। মুহূর্তের অসাবধানতায় গোল খেয়ে বসে তারা। ১১৭ মিনিটের মাথায় প্রতি আক্রমণে আসে ক্রোয়েশিয়া। সেখান থেকে পেরিসিচের পাসে বাঁ পায়ের শটে গোল করেন ব্রুনো পেটকোভিচ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy