এমিলিয়ানোর আচরণে চিন্তায় তাঁর ক্লাব। ফাইল ছবি
বিশ্বকাপ জেতার পর থেকে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্তিনেসকে নিয়ে বিতর্ক থামছেই না। সোনার গ্লাভসের পুরস্কার নিয়ে তাঁর কুৎসিত অঙ্গভঙ্গিই হোক বা পুতুলের মুখে কিলিয়ান এমবাপের মুখোশ পরানো, বিভিন্ন কারণে তিনি এসেছেন শিরোনামে। ভবিষ্যতে ক্লাবের হয়ে যাতে কোনও বিতর্কে জড়িয়ে না পড়েন, তার জন্য আগেভাগেই তাঁকে সতর্ক করে দিতে চান অ্যাস্টন ভিলার কোচ উনাই এমেরি। না মানলে ভবিষ্যতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ক্লাব সূত্রের খবর।
ইপিএলের ক্লাব অ্যাস্টন ভিলাতে বছর দুয়েক খেলছেন মার্তিনেস। উনাই এমেরি সম্প্রতি সেই ক্লাবের কোচ হয়েছেন। তিনি বলেছেন, “খুব বেশি আবেগ থাকছে, মাঝে সাঝে তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে যায়। সামনের সপ্তাহে ও ফিরলে কথা বলব। কিছু উচ্ছ্বাস যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয় সেটা ওকে বোঝাব। এখন ও জাতীয় দলের হয়ে খেলছে। কিন্তু ক্লাবে যোগ দিলে ওর দায়িত্ব আমাদেরও। তার পরে ওর সঙ্গে এটা নিয়ে কথা বলব। ওকে নিয়ে আমরা গর্বিত। জাতীয় দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা সাধারণ ব্যাপার নয়।”
আগামী ২৬ ডিসেম্বর লিভারপুলের বিরুদ্ধে ইপিএলে ম্যাচ রয়েছে ভিলার। সেই ম্যাচে মার্তিনেসকে পাবে না তারা। পরের সপ্তাহ, অর্থাৎ পরের বছরের শুরুতে মার্তিনেস ক্লাবের হয়ে নামতে পারেন। এমেরি বলেছেন, “আগে এখানে এসে কিছু দিন বিশ্রাম নিক মার্তিনেস। তার পরে ওকে খেলানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করব।”
প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপ জয়ের পর থেকেই এমবাপেকে বিদ্রুপ করে চলেছেন মার্তিনেস। আর্জেন্টিনায় ফিরে বিজয় উৎসবের সময়ও মার্তিনেসের হাতে ছিল একটি পুতুল। পুতুলের মুখে এমবাপের মুখের ছবি কেটে বসিয়ে দিয়েছিলেন মার্তিনেস। তাঁর এই আচরণ অত্যন্ত অপমানজনক মনে হয়েছে ফ্রান্সের ফুটবল সংস্থার। প্রতিবাদ জানিয়ে আর্জেন্টিনার ফুটবল সংস্থার সভাপতি ক্লদিয়ো তোপিয়াকে চিঠি দিলেন ফ্রান্সের ফুটবল সংস্থার সভাপতি নোয়েল লি গ্রিট।
বিশ্বকাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেছিলেন এমবাপে। টাইব্রেকারেও গোল করেছিলেন ক্লাব ফুটবলে লিয়োনেল মেসির সতীর্থ। মাঠে খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতা দেখিয়েছিলেন মার্তিনেস। বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়েছিলেন। পরে পুরস্কার মঞ্চেও এমবাপেকে পাশে ডেকে নেন অ্যাস্টন ভিলার গোলরক্ষক। কিন্তু পরের দিন থেকেই এমবাপেকে তীব্র কটাক্ষ করতে শুরু করেন মার্তিনেস। ফ্রান্সের ফুটবল সংস্থার অভিযোগ, মার্তিনেস সমস্ত সীমা অতিক্রম করেছেন।
গ্রিট বলেছেন, ‘‘আমি আর্জেন্টিনার ফুটবল সভাপতিকে চিঠি লিখেছি। মার্তিনেসের আচরণ আমাদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়েছে। বিশ্বকাপ একটা প্রতিযোগিতা। জয়-পরাজয় থাকবেই। ওর এই আচরণ বোধগম্য হচ্ছে না। মার্তিনেসের আচরণ সব সীমা অতিক্রম করেছে।’’ এমবাপেকে নিয়ে আর্জেন্টিনার গোলরক্ষকের রসিকতায় ক্ষুব্ধ ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ। চটেছেন নেতা-মন্ত্রীরাও। অর্থমন্ত্রী ব্রুনো লে মায়ার বলেছেন, মার্তিনেস যে ভাবে এমবাপে এবং কোচ দিদিয়ের দেশঁকে অপমান করছে, ফিফার উচিত তদন্ত করা। ক্ষোভপ্রকাশ করে তিনি বলেছেন, ‘‘ফিফা কী করছে? এটাই কি ফেয়ার প্লে-র নমুনা! পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা কেন থাকবে না? পরাজিতদের কি এমন ব্যবহার প্রাপ্য?’’ ক্ষুব্ধ ফুটবলপ্রেমীদের একাংশ মার্তিনেসের বিরুদ্ধে বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগও তুলছেন। উল্লেখ্য, আর্জেন্টিনার ফুটবল সমর্থকরা বিজয় উৎসবে এমবাপের কুশপুতুলও পুড়িয়েছিলেন। সেই ঘটনাও ভাল ভাবে নেয়নি ফ্রান্স।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy