আইপিএলের নিলামে চমকে দিয়েছেন বিভ্রান্ত। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
শুরুটা হয়েছিল ২০ লক্ষ থেকে। রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর অবশেষে তা গিয়ে থামল ২ কোটি ৬০ লক্ষে। বেস প্রাইস বা ন্যূনতম দরের ২০ গুণ বেশি দাম পেয়ে চমকে দিলেন জম্মু ও কাশ্মীরের ক্রিকেটার বিভ্রান্ত শর্মা। কলকাতার বিরুদ্ধে লড়াই করে তাঁকে তুলে নিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। তবে বাস্তবজীবনে এই শর্মা কিন্তু মোটেই ‘বিভ্রান্ত’ নন। বরং জীবনে একটা লক্ষ্য রেখেই বরাবর এগিয়ে গিয়েছেন তিনি। বিভ্রান্তকে ক্রিকেটার বানাতে আত্মত্যাগ করেছেন তাঁর দাদা। মনে পড়িয়েছেন সচিন তেণ্ডুলকর এবং তাঁর দাদা অজিতের কথা।
বিভ্রান্তের দাদা বিক্রান্ত শর্মা ছোট থেকেই প্রতিভাবান ক্রিকেটার ছিলেন। বাবা হিমাংশু মারা যাওয়ার পর ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে ছেদ পড়ে। পারিবারিক ব্যবসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। কিন্তু ভাইয়ের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নে কোনও দিন বাধা দেননি। বরং দ্বিগুণ উৎসাহে বিভ্রান্তকে সফল করতে লেগে পড়েন। ছোট থেকে বিভিন্ন বাধা সামলে এখন তিনি কোটিপতি।
জম্মু ও কাশ্মীরের হয়ে এখন রঞ্জি ট্রফি খেলতে ব্যস্ত। তার ফাঁকেই তিনি বলেছেন, “বাবা বেঁচে থাকলে খুব শান্তি পেতেন। তবে আমার যাত্রা সবে শুরু হয়েছে। বাবার মৃত্যু আমাদের সবাইকে ধাক্কা দিয়েছিল। দাদা ব্যবসার দায়িত্ব নিয়ে নেয়। তবে আমাকে সাফ বলে দেয় সব মনোযোগ ক্রিকেটে দিতে। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্বে দারুণ খেলেছে দাদা। ওই আমার আদর্শ। আমি ডান হাতে ব্যাট করতাম। ওকে দেখেই বাঁ হাতে ব্যাট করা শুরু করি। দেখলাম সেটা কাজে লেগে গেল।”
মা সুনীতা জম্মুতে স্কুল শিক্ষকতা করেন। চোখের সামনে দেখেছেন সর্বোচ্চ পর্যায়ে যাওয়ার জন্য কী ভাবে লড়াই করেছে ছেলে। তাঁকে নিয়ে বিভ্রান্ত বলেছেন, “মা-ই আমাদের বাড়ির মেরুদণ্ড। আমার দেখা সবচেয়ে শক্ত মানসিকতার মহিলা। সব সময় আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘ভয় পেয়ো না। নিজের স্বপ্নের পিছনে ধাওয়া করো এবং সেখানে পৌঁছও’।”
গত বছর সাদা বলের ফরম্যাটে দারুণ ছন্দে রয়েছেন বিভ্রান্ত। বিজয় হজারে ট্রফিতে উত্তরাখণ্ডের বিরুদ্ধে ১২৪ বলে ১৫৪ রানের ইনিংস রয়েছে, যার সাহায্যে প্রথম বারের জন্য নকআউট নিশ্চিত করে জম্মু এবং কাশ্মীর। মোট ১৪টি ৫০ ওভারের ম্যাচে ৫১৯ রান করেছেন, যার মধ্যে একটি শতরান এবং তিনটি অর্ধশতরান রয়েছে। আটটি উইকেটও নিয়েছেন। ৯টি টি-টোয়েন্টিতে ১৯১ রান করেছেন।
গত মরসুমে তিনি হায়দরাবাদের নেট বোলার ছিলেন। দল পাওয়ার পিছনে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন প্রাক্তন ক্রিকেটার আব্দুল সামাদকে। বলেছেন, “অনেক শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছে যাদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই। আইপিএলে যারা আমাদের রাজ্যের ক্রিকেটার, তারা অনেক সাহায্য করেছেন। উমরান মালিকের আগে রসিখ সালাম, তার পর আব্দুল সামাদকে নেওয়া হয়েছে। গত ১২ মাসে মূলত নেট বোলার হিসাবে খেলেছি। ভাল ক্রিকেটারদের সঙ্গে থাকলে নিজের খেলাটাও ভাল হয়। ব্রায়ান লারা, মুথাইয়া মুরলীধরন এবং ডেল স্টেনের সঙ্গে অনেক ভাল সময় কাটিয়েছি।”
ব্যাটারের থেকেও বেশি নিজেকে অলরাউন্ডার বলতে চান বিভ্রান্ত। কারণ, বল হাতেও তিনি পারদর্শী। বলেছেন, “আমি কিন্তু পার্ট-টাইম বোলার নই। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলে বড় হয়ে উঠেছি। বোলিং এবং ব্যাটিং— দুটোর দিকেই নজর দিয়েছি। ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে পাওয়ার হিটিংয়ে বেশি নজর দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy