গোল করেও দলকে জেতাতে পারলেন না ফেলিসিয়ো। ছবি: এক্স।
নর্থইস্ট ৩ (জুরিচ ২, নেস্টর)
ইস্টবেঙ্গল ২ (নন্দকুমার, ফেলিসিয়ো)
ঘরের মাঠে যে দলকে পাঁচ গোলে হারিয়েছিল, সেই দলের কাছেই অ্যাওয়ে ম্যাচে হেরে গেল ইস্টবেঙ্গল। শনিবার নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে তারা হারল ২-৩ ব্যবধানে। ১৪ মিনিটেই দু’গোল হজম করে লাল-হলুদ। দ্বিতীয়ার্ধে আরও একটি গোল খায়। নতুন বিদেশি ফেলিসিয়ো ব্রাউন নেমে গোল করলেন। তাতেও হার বাঁচাতে পারল না লাল-হলুদ।
সুপার কাপ এবং কলকাতা ডার্বিতে যে ফুটবল উপহার দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল, তার সঙ্গে কোনও মিলই ছিল না শনিবারের খেলায়। এত খারাপ রক্ষণ ইস্টবেঙ্গলের খেলায় সাম্প্রতিক কালে দেখা যায়নি। প্রথম দু’টি গোলই হয়েছে রক্ষণের ভুলে। ওখানেই ফোকাস নড়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের। নর্থইস্ট আরও নিখুঁত হতে পারলে আরও বেশি ব্যবধানে হারার কথা ইস্টবেঙ্গলের।
প্রথম ১৪ মিনিটেই দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। চার মিনিটেই গোল করে নর্থইস্টকে এগিয়ে দেন টমি জুরিচ। ফুটবলারদের ভুলেই গোল করে নর্থইস্ট। ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা নিজেদের মধ্যে পাস দেওয়া-নেওয়া করতে পারেননি। সেই বল পেয়ে যান জিতিন। তিনি দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকেন ইস্টবেঙ্গলের বক্সের দিকে। সেখান থেকে পাস দেন নেস্টর আলবিয়াচকে। নেস্টর দেখতে পেয়েছিলেন জুরিচকে। তাঁর নিখুঁত পাস থেকে গোল করে নর্থইস্টকে এগিয়ে দেন জুরিচ।
ছ’মিনিট পরে আবার ইস্টবেঙ্গলের গোল খাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। দূর থেকে শট নিয়েছিলেন জুরিচ। তবে সেই শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের পায়ে। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারছিল না তারা। সুযোগও তৈরি হচ্ছিল না। খেলার বিরুদ্ধেই আবার পিছিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। এ বারও রক্ষণের ভুলেই। সেই জিতিনের পা থেকেই শুরু হয় আক্রমণ। তিনি ডান দিকে বল পাঠান রিডিম লাংয়ের উদ্দেশে। ডান দিকে দৌড়ে ইস্টবেঙ্গলের বক্সে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন লাং। তিনি বক্সের ভেতরে নেস্টরকে দেখে তাঁর উদ্দেশে পাস বাড়িয়ে দেন। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারদের এড়িয়ে হালকা টাচে গোল করেন নেস্টর।
এর পর ইস্টবেঙ্গলকে কার্যত উড়িয়ে নিয়ে যায় নর্থইস্ট। দু’গোলে পিছিয়ে পড়ে ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে ইস্টবেঙ্গল। না হচ্ছিল ঠিকঠাক পাস, না দেখা যাচ্ছিল পরিকল্পিত আক্রমণ। ক্লেটন সিলভাদের খেলা দেখে সাইডলাইনে মেজাজ ঠিক রাখতে পারেননি কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও। তাতেও ইস্টবেঙ্গলের খেলায় বদল দেখা যায়নি। ২৪ মিনিটে হলুদ কার্ড দেখেন ক্লেটন। তিনি পরের ম্যাচে খেলতে পারবেন না।
৩৫ মিনিটের মাথায় ক্লেটনের সঙ্গে পাস খেলে লালচুংনুঙ্গা গোলের মুখ খোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেটা অনায়াসে ক্লিয়ার করে দেন নর্থইস্টের ডিফেন্ডারেরা। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারেরা ছাপ ফেলতে পারেননি। উল্টে আরও গোল খেয়ে যেতে পারতেন তাঁরা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেও নর্থইস্টের সামনে গোলের সুযোগ এসেছিল। জিতিনের পাস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি নেস্টর। ৫৩ মিনিটে একটি গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন পাস দেন নন্দকুমারকে। তিনি বক্সে ঢুকে পড়েন এবং ঠান্ডা মাথায় নর্থইস্ট গোলকিপার মিরশাদ মিচুকে পরাস্ত করে গোল করেন।
একটি গোল পেয়ে ইস্টবেঙ্গলের উচিত ছিল তেড়েফুঁড়ে ওঠা। কিন্তু সেই ঝাঁজ দেখা যায়নি কুয়াদ্রাতের দলের খেলায়। গোলের আশায় নতুন বিদেশি ফেলিসিয়ো ব্রাউনকে ৬৩ মিনিটে নামিয়ে দেন কুয়াদ্রাত। তার তিন মিনিট পরেই তৃতীয় গোল খায় ইস্টবেঙ্গল। বক্সের সামান্য বাইরে বল পান জুরিচ। ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডারকে পা থেকে বল বাঁচিয়ে বক্সের বাইরে থেকেই বাঁকানো শট নেন। গোলে ঠিক পজিশনে ছিলেন না প্রভসুখন গিল। তিনি ঝাঁপিয়ে পড়েও বলের নাগাল পাননি।
৮২ মিনিটে আরও একটি গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন বক্সে বল পেয়ে বাঁ পায়ে শট নিয়েছিলেন। নর্থইস্টের ডিফেন্ডারেরা তা আটকে দেন। এক ফুটবলার গোললাইন সেভ করেন। সামনে ছিলেন ফেলিসিয়ো। তিনি হেডে বল জালে জড়ান। তবে ১৬ মিনিট (আট মিনিট সংযুক্তি সময় ধরে) হাতে পেয়েও সমতা ফেরাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy