কার্লেস কুয়াদ্রাত। ছবি: এক্স।
গত কয়েক বছরে কলকাতা ডার্বি ছিল ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছে আতঙ্ক। জেতা তো দূর, কত গোলে হারবে সেই নিয়ে চলত চিন্তাভাবনা। রবি ফাউলার, মারিয়ো রিভেরা, স্টিভন কনস্ট্যান্টাইন কেউ পরিস্থিতি বদলাতে পারেননি। পেরেছেন শুধু কার্লেস কুয়াদ্রাত। কোনও এক জাদুকাঠির ছোঁয়ায় তিনি ইস্টবেঙ্গলকে আমূল পাল্টে দিয়েছেন। এই ইস্টবেঙ্গল এখন ডার্বিতে হার নয়, জেতার কথা ভাবে। কত গোলে জিতবে সেই হিসাব-নিকাশও চলে সমর্থকদের মধ্যে। শনিবারের কলকাতা ডার্বিতে সেই ঝাঁজ নিয়েই নামবে লাল-হলুদ।
চলতি মরসুমে ডুরান্ড কাপ এবং সুপার কাপ মিলিয়ে তিনটি কলকাতা ডার্বির দু’টিতে জিতেছে ইস্টবেঙ্গল। একটিতে হারতে হয়েছে। যদি কলকাতা লিগ ধরা হয় তা হলে ইস্টবেঙ্গলের জয় তিনটি। কিন্তু এখনও একটা আক্ষেপ থেকে গিয়েছে। আইএসএলে কোনও দিন মোহনবাগানকে হারাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। চার বারই হারতে হয়েছে। কুয়াদ্রাতের ধরে হাত ধরে সেই পরিসংখ্যানই বদলের স্বপ্ন দেখছে লাল-হলুদ জনতা। সেটা শনিবারই হবে কি না তা সময়ই বলবে।
মরসুমের শুরুতে কোচ হয়ে আসার সময় কুয়াদ্রাত বলেছিলেন তাঁর উপরে বিশ্বাস রাখতে। অতি বড় সমর্থকও খুব গুরুত্ব দিয়ে দেখেননি কথাটা। কিন্তু কয়েক দিনের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যেতে শুরু করে। ডুরান্ড কাপের ডার্বিজয়ের পর থেকে পরিস্থিতি পাল্টায়। বেছে বেছে ফুটবলার নিয়ে আসা, দলের মেজাজ পাল্টে দেওয়া, মানসিকতা বদলে দেওয়া— ইস্টবেঙ্গলের সাম্প্রতিক সাফল্যের মধ্যে এ সবই রয়েছে।
সুপার কাপ জয়ের পর কলকাতা ডার্বির মাঝে এই ছ’দিনে অনেক কিছু বদলেও গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলে। দলকে জেতানো দুই ফুটবলার অন্যত্র পাড়ি দিয়েছেন। তাঁদের একজন বোরহা হেরেরা এফসি গোয়ার জার্সি গায়ে খেলেও ফেললেন বৃহস্পতিবার। দু’জনেরই পরিবর্ত পেয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। ডার্বিতে তাঁদের কারওরই অবশ্য নামার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু আগামী দিনের কথা ভেবে সেই সই গুরুত্বপূর্ণ। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের চার বিদেশি ক্লেটন সিলভা, হিজাজি মাহের, হোসে পারদো এবং সাউল ক্রেসপো। চার জনেরই প্রথম একাদশে থাকার কথা।
জুয়ান ফেরান্দো এবং ক্লিফোর্ড মিরান্ডার মোহনবাগানকে হারিয়েছেন কুয়াদ্রাত। কিন্তু আন্তোনিয়ো হাবাসের মোহনবাগানের সঙ্গে এই প্রথম মুখোমুখি হবেন। যদি অতীত অভিজ্ঞতা থেকে হাবাসকে চেনেন কুয়াদ্রাত। দু’জনেই স্পেনীয়। একে অপরের কৌশলও চেনা। শনিবার তাই মস্তিষ্কের যুদ্ধ হবে না তা বলা যায় না।
সুপার কাপ জিতে ইস্টবেঙ্গলের আত্মবিশ্বাস ফুরফুরে। গোলে প্রভসুখন গিলের বিশ্বস্ত হাত রয়েছে। জাতীয় দল থেকে ফিরেছেন লালচুংনুঙ্গা। ডার্বিতে প্রথম একাদশে থাকার সম্ভাবনা প্রবল। তাঁর সঙ্গে থাকবেন হোসে পারদো এবং হিজাজি মাহের। হিজাজি রক্ষণের পাশাপাশি গোল করতেও সক্ষম। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেট পিসে মাথা ছুঁইয়ে গোল করলে অবাক হওয়ার নেই। সঙ্গে থাকবেন মহম্মদ রাকিপ।
মাঝমাঠে বোরহাকে পাওয়া না গেলেও অসুবিধা নেই। সাউল রয়েছেন। তার সঙ্গে নাওরেম মহেশ ফিরেছেন জাতীয় দল থেকে। সুপার কাপের ফাইনালে পাঁচ মিনিটে নিজের প্রতিভার পরিচয় দিয়েছেন। মহেশ মাঠে থাকলে কখন গোলের একটা দারুণ পাস ভেসে আসবে কেউ জানেন না। মোহনবাগানের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠতে পারেন তিনি। তবে ইস্টবেঙ্গলের একটা চিন্তা হল শৌভিক চক্রবর্তীর কার্ড সমস্যা। শৌভিক বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার। আগের ডার্বিতে হুগো বুমোসকে একাই রুখে দিয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় অজয় ছেত্রীকে খেলাতে পারেন কুয়াদ্রাত। অজয়কে বাড়তি দায়িত্ব নিতেই হবে। কারণ মোহনবাগানে অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল সামাদকে থামানোর দায়িত্ব তাঁর উপরেই থাকবে।
সামনে একা খেলার সম্ভাবনা ক্লেটনের। জেভিয়ার সিভেরিয়ো না থাকায় এবং নতুন বিদেশি না আসায় পুরনো সৈন্যের উপরেই ভরসা রাখতে পারেন কুয়াদ্রাত। বাঁ দিকে মহেশ এবং ডান দিকে নন্দকুমার থাকবেন ক্লেটনকে সাহায্য করার জন্য।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy