টিম হোটেলে ফোরলান। সোমবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস
প্রশ্ন: দ্বিতীয় বার কলকাতায় এসে কেমন লাগছে?
ফোরলান: বেশ ভাল। প্রথম বার আপনাদের শহরে এসে একটা ম্যাচের কিক অফ করে গিয়েছিলাম। এ বার একটা আস্ত ম্যাচ খেলব।
প্র: এ বারের আইএসএলে গোটা কলকাতা তো আপনাকেই এটিকের মার্কি হিসেবে দেখে ফেলেছিল। হঠাৎ মুম্বই চলে গেলেন?
ফোরলান: কলকাতা, মুম্বই দু’টো টিমের সঙ্গেই কথা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত মুম্বইয়ের প্রস্তাবটাই পছন্দ হয়। এর বেশি কিছু বলব না। ভবিষ্যতে কলকাতার হয়ে খেলতেই পারি।
প্র: রবিবার চেলসির হাতে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের চূর্ণ হওয়া দেখলেন না কি?
ফোরলান: পুরোটা নয়। ম্যাচটা কিছুটা দেখেছি। ইউনাইটেডের প্রাক্তন হওয়ায় একটা আবেগ তো কাজ করেই আমার ভেতরে! তবে ফুটবলে এ রকম রেজাল্ট হতে পারে। দিনটা মোরিনহোর খারাপ গিয়েছে। তবে ইউনাইটেড কিন্তু ধ্বংস হয়ে যায়নি।
প্র: আপনার সময়ে ইউনাইটেড ক্যাপ্টেন রয় কিন তো চেলসিকে ‘ছোট ক্লাব’-এর বেশি কিছু ভাবতেন না।
ফোরলান: সেটা ওর বক্তব্য। আমার নয়।
প্র: বক্সের বাইরে থেকে সোয়ার্ভিং শটে গোল আপনার ট্রেডমার্ক। সেই ফোরলান ব্র্যান্ড এখনও আইএসএলে দেখা যাচ্ছে না কেন?
ফোরলান: সবে তিনটে ম্যাচ খেলেছি। এখনও অনেক খেলা বাকি। চেষ্টা করব আমার ভারতীয় ফ্যানদের আবদার মেটাতে।
প্র: সেটা কি কলকাতা ম্যাচ থেকেই দেখা যাবে?
ফোরলান: ফুটবলে এ রকম ভাবে বলা যায় না। আর কলকাতা বেশ কঠিন প্রতিপক্ষ।
প্র: ২০১৩ কনফেডারেশনস কাপ সেমিফাইনালে ব্রাজিলের বিরুদ্ধে আপনি পেনাল্টি মিস করেছিলেন। শট নেওয়ার আগে ব্রাজিল কিপার জুলিও সিজার কী বলেছিলেন যে, সেই মুহূর্তে আপনি হাসছিলেন?
ফোরলান: (একটু হেসে) সেটা আপনার সঙ্গে শেয়ার করতে পারব না। জুলিও আমার অনেক দিনের বন্ধু। ইন্টারে ঠিক তার আগের বছর আমরা একসঙ্গে খেলেছি। ও সে দিন আমি পেনাল্টি মারার আগে পুরনো এমন একটা বিষয় তুলে রসিকতা করেছিল যা আমি এখানে বলতে পারব না। তাতেই আমার মনঃসংযোগ নষ্ট হয়ে যায়।
প্র: মেসি-সুয়ারেজ-নেইমার, বার্সেলোনার ত্রিফলা কি এখন দুনিয়ার ভয়ঙ্করতম স্ট্রাইকিং ফোর্স?
ফোরলান: অ্যাবসোলিউটলি।
প্র: রিয়ালের বেল-বেঞ্জিমা-রোনাল্ডোকে রাখছেন না?
ফোরলান: ওরাও বেশ ভাল। কিন্তু মেসিদের ট্র্যাঙ্গেলটা রোনাল্ডোদের চেয়ে এক ধাপ বেশি বিপজ্জনক।
প্র: মেসিদের ত্রিভুজে আপনার দেশের সুয়ারেজ আছে বলেই কি এগিয়ে রাখছেন?
ফোরলান: তা কেন? ওদের সাফল্যই বলে দেয় ওরা কতটা ধ্বংসাত্মক। রেকর্ডটা একবার খুলে দেখুন। সব বুঝে যাবেন।
প্র: সুয়ারেজ সম্পর্কে আপনার কী মত?
ফোরলান: বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার। দেশের হয়ে খেলতে নামলে নিজের শেষটুকু দিয়ে আসে।
প্র: সেই ফুটবলারই যখন বিশ্বকাপে কিয়েলিনিকে কামড় দিয়ে নক আউটে উরুগুয়েকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন, তখন কী মনে হয়েছিল?
ফোরলান: সেটা অতীত। ওটা নিয়ে একটা কথাও বলব না। তবে সুয়ারেজ গ্রেট ফুটবলার তা আবার বলছি।
প্র: আপনি দুই বিখ্যাত ফুটবল মস্তিষ্ক অস্কার তাবারেজ এবং স্যার অ্যালেক্স ফার্গুসনের কোচিংয়েই খেলেছেন। কাকে এগিয়ে রাখবেন?
ফোরলান: কঠিন প্রশ্ন। এটা নিয়ে মন্তব্য করব না। কারণ ওঁদের দু’জনের সঙ্গেই আমার ভাল মতো যোগাযোগ আছে। যাঁকেই এগিয়ে রাখব না, তিনিই রেগে যাবেন। নো কন্ট্রোভার্সি।
প্র: আপনার দেশে ভারেলা থেকে ফ্রাঞ্চিকোলি, রুবেন সোসা—আইকনের ছড়াছড়ি। আপনার আদর্শ কে?
ফোরলান: ওঁদের কেউ নন। আমার বাবা পাবলো ফোরলান। বিশ্বকাপ খেলেছেন। ছেষট্টিতে উরুগুয়ে-ফ্রান্স ম্যাচে আমার বাবা ইউরি দিওরকায়েফের বাবার বিরুদ্ধে খেলেছিলেন।
প্র: জুনিয়র দিওরকায়েফ জানেন?
ফোরলান: সেটা এক মজার ঘটনা। ২০০২ বিশ্বকাপে উরুগুয়ে-ফ্রান্স ম্যাচে আবার আমি আর ইউরি নিজেদের দেশের হয়ে খেলেছিলাম। ম্যাচের আগের দিন আমি ওকে এই রেকর্ডের কথাটা বলেছিলাম।
প্র: আইএসএলে এ পর্যন্ত কোন ভারতীয় ফুটবলারকে ভাল লাগল?
ফোরলান: বলা কঠিন। কারণ যাদের নাম বলব না তারা হতাশ হতে পারে। আর সবাইকে চিনিও না।
প্র: উল্টোটা ধরুন। যাঁদের নাম বলবেন, তাঁরা তো উৎসাহও পাবেন।
ফোরলান: ও কে। সুনীল ছেত্রী বেশ ভাল। প্রণয় হালদার খুব টাফ। ওর চোটটা আমাদের ভোগাবে। এটিকের রাইট ব্যাক প্রীতমকে ভাল লেগেছে। রালতে-ও মন্দ নয়।
প্র: আইএসএল নিয়ে জিকো বলেছেন, টিমে বিদেশি কমিয়ে স্থানীয় ছেলে বাড়াতে। জামব্রোতা আধুনিক অ্যাকাডেমি চেয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে আপনার প্রেসক্রিপশন কী?
ফোরলান: ওঁদের দু’জনের মত জুড়ে দিন। সেটাই আমার কথা। কারণ দু’টোই গুরুত্বপূর্ণ। আইএসএল ভারতীয়দের মধ্যে লড়াকু মানসিকতা তৈরি করছে। এই লিগকে এত বড় দেশে ছড়িয়ে দিলে ভারতীয় ফুটবল এগোবে না, কে বলেছে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy