উচ্ছ্বাস: গোলদাতা তন্ময়কে (মাঝে) নিয়ে সতীর্থরা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
পাঠচক্রের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মহমেডান পেনাল্টি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই রক্ষণ ছেড়ে উঠে এসে বল হাতে তুলে নিলেন তন্ময় ঘোষ। পরিস্থিতি তখন রীতিমত উত্তপ্ত। রেফারিকে ঘিরে ধরেছেন পাঠচক্রের ফুটবলারেরা। ক্ষোভের মূল কারণ অবশ্য পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে নয়। হ্যান্ডবল করার পরে অধিনায়ক লালকমল ভৌমিককে লাল কার্ড দেখানো নিয়ে। কিন্তু তন্ময় আশ্চর্য রকম ভাবে নির্লিপ্ত। বল হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পেনাল্টি স্পটের সামনে। ফুটবলারদের শান্ত করে রেফারি বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে বল জালে জড়িয়ে দিয়ে দৌড়লেন গ্যালারির দিকে। চোখেমুখে শাপমুক্তির স্বস্তি!
বছর তিনেক আগে মহমেডানেই ছিলেন তন্ময়। কলিঙ্গ কাপের ফাইনালে টাইব্রেকারে তাঁর শট উড়ে গিয়েছিল ক্রসবারের উপর দিয়ে। সেই সঙ্গে মহমেডানের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্নও শেষ হয়ে গিয়েছিল। সোমবার পাঠচক্রের বিরুদ্ধে গোল করে সেই যন্ত্রণাই যেন ভুললেন তন্ময়। ম্যাচের পরে মহমেডান ডিফেন্ডার বলছিলেন, ‘‘পেনাল্টি থেকে গোল করার ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। তাই রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেওয়ার পরে দ্বিতীয়বার ভাবিনি।’’ তিনি যোগ করেন, ‘‘কোচও বলেছিলেন, পেনাল্টি পেলে আমাকেই মারতে হবে।’’ তন্ময় উচ্ছ্বসিত আরও দু’টি কারণে। গত মরসুমে অনেক স্বপ্ন নিয়ে সই করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলে। কিন্তু প্রায় পুরো মরসুমই মাঠের বাইরে কাটাতে হয়েছে। পুরনো ক্লাবের জার্সিতে সেই উপেক্ষার জবাব দিতে মরিয়া তন্ময়। দ্বিতীয়ত, কলকাতা প্রিমিয়ার লিগের খেতাবি দৌড়ে টিকে থাকতে হলে এ দিন জিততেই হত মহমেডানকে। যদিও ম্যাচের সেরা তন্ময় নন, দীপেন্দু দোয়ারি। ৮০ মিনিটে গোল করেন তিনি। তার মিনিট সাতেক আগেই মহমেডানের হয়ে দ্বিতীয় গোল করেন প্রিন্সউইল এমেকা। ম্যাচের সেরা না হওয়া নিয়ে হতাশ নন তন্ময়। তিনি উদ্বিগ্ন সতীর্থ প্রীয়ন্ত সিংহ চোট পাওয়ায়। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে কাঁধে চোট পান মহমেডান গোলরক্ষক। তাঁর কাঁধের হাড় সরে গিয়েছে। দিন দশেক মাঠের বাইরে থাকতে হবে প্রীয়ন্তকে।
পাঁচ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলে চতুর্থ স্থানে এই মুহূর্তে মহমেডান। তৃতীয় স্থানে থাকা পিয়ারলেসেরও পাঁচ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট। কিন্তু গোল পার্থক্যে এগিয়ে রয়েছেন রহিম নবিরা। জয়ের সরণিতে প্রত্যাবর্তনের পরেও মহমেডান কোচ রঘু নন্দীর দুশ্চিন্তা কমছে না। বললেন, ‘‘তিন গোলে জিতলেও স্ট্রাইকার সমস্যা থেকেই গিয়েছে। তাই স্বস্তিতে থাকার উপায় নেই।’’ চোটের জন্য বিদেশি স্ট্রাইকার দোদোসকে ছেড়ে দিয়েছে মহমেডান। সই করানো হচ্ছে ঘানার স্ট্রাইকার ফিলিপসকে।
কলকাতা প্রিমিয়ার লিগ
মহমেডান ৩ • পাঠচক্র ০
মহমেডান: প্রীয়ন্ত সিংহ (অরূপ দেবনাথ), তন্ময় ঘোষ, প্রসেনজিৎ পাল, লানসিন তোরে, কামরান ফারুক, লাল্টু হেমব্রম, বাজি আর্মান্ড (সুমিত দাস), রাহুল কে পি, সত্যম শর্মা, দীপেন্দু দোয়ারি ও প্রিন্সউইল এমেকা।
পাঠচক্র: অভিজিৎ দাস, ভিক্টর খামুখা, বিধান দাস, মনোতোষ চাকলাদার, স্নেহাশিস চক্রবর্তী, লালকমল ভৌমিক, ফুতা নাকামুরা (ব্রাইট মেন্দস), জগন্নাথ ওঁরাও (তন্ময় কুণ্ডু), সুদীপ্ত মালাকার (সন্দীপ ভট্টাচার্য), আন্তো পেজিচ ও সোমান্দা সিংহ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy