শুক্রবার প্রস্তুতিতে ওডাফা।
ন’ম্যাচে পাঁচ গোল। চারটেতে ম্যাচের সেরা। চোট সারিয়ে ফিরে শেষ দু’ম্যাচে করেছেন তিন গোল। তার মধ্যে মোহনবাগানের বিরুদ্ধেই দু’টো। এহেন ওকোলি ওডাফা শনিবার তাঁর পুরনো মেগা ক্লাবের বিরুদ্ধে ফিরতি লড়াইয়ে নামার চব্বিশ ঘণ্টা আগে হুঙ্কার দিলেন, ‘‘গোয়ার ছবি দেখবেন বারাসতে। গোল করে ফের স্পোর্টিং-কে জেতাব। আমাকে কেউ আটকাতে পারবে না।’’
ওডাফার হাত ধরেই স্পোর্টিং ক্লুব ‘লাস্ট বয়’-এর পোস্টার মুছে আই লিগে সাতে উঠে এসেছে। টানা সাত ম্যাচ অপরাজিত গোয়ার টিম। আর সেই দলের প্রাণভোমরা ওডাফাকে তাঁরই পরিবর্তে এ মরসুমে বাগানে আসা সনি নর্ডি বলেছেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে আগের ম্যাচে ওডাফা গোল পেয়েছে ঠিকই। তবে ও পুরো ফিট নয়। ওকে নিয়ে ভাবছি না।’’
যা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন ওডাফা। শুক্রবার বারাসতে প্র্যাকটিস করতে যাওয়ার আগে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন, ‘‘আমি ফিট কি না সেটা শনিবার মাঠেই দেখিয়ে দেব।’’
শিলং থেকে তাঁর নতুন টিমের সঙ্গে পুরনো শহরে পৌঁছেই ওডাফা সটান চলে গিয়েছিলেন দক্ষিণ কলকাতার অভিজাত আবাসনে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে। ওডাফার ছেলেরা এখনও কলকাতার স্কুলেই পড়াশোনা করছে। সে জন্য ওডাফার স্ত্রী-ও এখানেই থাকেন। বহু দিন পর পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন। আর এটাকেই বাগানের বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচের আগে বাড়তি মোটিভেশন বলছেন কিংগ কোবরা। ‘‘পরিবার আমাকে সব সময় বাড়তি অনুপ্রেরণা জোগায়।’’
কলকাতার সব কিছুই বড় চেনা ওডাফার। এখানকার আবহাওয়া, ফুটবল উন্মাদনা, এমনকী বারাসতের মাঠের প্রতিটা ঘাসও। কলকাতায় এসে নস্ট্যালজিক ওডাফা তাই বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগানে থাকার সময় বারাসতের মাঠে কত খেলেছি, প্র্যাকটিস করেছি। আর গরমের কথা বলছেন? তিন বছর কলকাতায় থাকার সুবাদে এখানকার এই সময়ের গরমের সঙ্গে আমি অভ্যস্ত। খেলতে কোনও সমস্যা হবে না।’’
বাগানকে ফের হারালেই অবনমন বাঁচিয়ে ফেলবে স্পোর্টিং। সে জন্য ‘দুর্বল’ বাগান ডিফেন্সকে টার্গেট করছেন ওডাফা। বলছিলেন, ‘‘ওদের ডিফেন্সে কিছু দুর্বলতা তো আছেই। সেটা কাজে লাগাতে হবে। তবে এ বার ওরা আরও সতর্ক থাকবে।’’
মোহনবাগানকে, সবুজ-মেরুন সমর্থকদের এখনও খুব মিস করেন নাইজিরিয়ান গোলমেশিন। বাগান ছা়ড়ার পর এই প্রথম কলকাতায় তাঁর পুরনো ক্লাবের মুখোমুখি হবেন ওডাফা। আর সেই ম্যাচে তিনি চাইছেন বাগান সমর্থকরা যেন ম্যাচের পর তাঁর নামেই জয়ধ্বনি দিন। ‘‘আমি জানি, এখানে ভাল খেললেই সবাই ‘ওডাফা, ওডাফা’ বলে চিৎকার করবে। বলবে, কামব্যাক ওডাফা...,’’ কথা শেষ করার আগেই ছেলেমানুষের মতো হো হো করে হাসেন তিনি। বোঝা গেল, তাঁকে ঘিরে পুরনো ক্লাবের সমর্থকদের সেই আবেগ এখনও টাটকা ওডাফার মননে। বলেই ফেললেন, ‘‘বাগান চ্যাম্পিয়ন হলে আমি খুশি হব।’’ পরক্ষণেই অবশ্য নিজেকে পেশাদারিত্বের মোড়কে গুটিয়ে ফেললেন। ‘‘আমি পেশাদার ফুটবলার। কাল নব্বই মিনিট মোহনবাগান শুধুই আমার প্রতিপক্ষ। আর আমার পুরনো ক্লাবের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আমার নতুন ক্লাব তো আর তিন পয়েন্ট নষ্ট করতে পারে না!’’
শনিবারে আই লিগ
মোহনবাগান : স্পোর্টিং ক্লুব (বারাসত, ৪-৩০)
ডেম্পো : বেঙ্গালুরু (গোয়া, ৭-০০)।
দুই তারকার ছবি তুলেছেন উৎপল সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy