অকুতোভয়: কার্ফুতে বন্ধ থাকছে ফুটবল। ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ সরানো হল দিল্লিতে। কিন্তু কাশ্মীরে থামেনি খেলা। ভূস্বর্গে মনোরম প্রকৃতির কোলে চলছে খুদেদের ক্রিকেট। সোমবার। এপি
ভুবনেশ্বর থেকে দুপুর বারোটায় দিল্লি পৌঁছেছিলেন রিয়াল কাশ্মীরের ফুটবলাররা। তাঁদের সোমবারই ফেরার কথা ছিল শ্রীনগরে। বিমানে মালপত্র তোলা হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ডেভিড বিমানে ওঠার মুখেই ম্যানেজারের কাছে কর্তাদের নির্দেশ এল, দিল্লিতে থেকে যাও। বিমান থেকে তড়িঘড়ি জিনিসপত্র নামিয়ে দিল্লির হোটেলে ছুটলেন রিয়াল কাশ্মীরের ফুটবলরারা।
তখনই তাঁদের কাছে ইঙ্গিত পৌঁছে গিয়েছিল। রাতের দিকে ফেডারেশন জানিয়ে দিল, ২৮ ফেব্রুয়ারির আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ইস্টবেঙ্গল বনাম রিয়াল কাশ্মীরের ম্যাচ দিল্লির জহওরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে হবে। দুপুর দু’টোতেই। কাশ্মীর নয়, জবি জাস্টিনদের তাই যেতে হবে দিল্লিতে। কাশ্মীর দলকেও তাই ঘরে ফেরার উড়ান ছেড়ে থাকতে হল দিল্লিতে।
শ্রীনগর শনিবার রাত থেকেই হঠাৎই অশান্ত হয়ে উঠেছে। জারি হয়েছে কার্ফু। সঙ্গে চলছে হরতালও। রবিবার টিআরসি স্টেডিয়ামে আই লিগের দ্বিতীয় ডিভিশনের খেলা হয়নি। ধরেই নেওয়া হয়েছিল এ রকম উত্তেজক অবস্থায় বৃহস্পতিবারের ম্যাচের জায়গাও বদলাবে। দিল্লির ফুটবল হাউসে সোমবার ছিল লিগ কমিটির বৈঠক। সেই বৈঠক শুরুর মুখেই রিয়ালের অন্যতম মালিক সন্দীপ ছাট্টু চিঠি দিয়ে আবেদন করেন, শ্রীনগরে বর্তমান যে পরিস্থিতি তাতে ২৮ ফেব্রুয়ারির খেলা অন্য কোনও নিরপেক্ষ জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হোক। দিল্লি থেকে ফোনে সন্দীপ বললেন, ‘‘যে কোনও মুহূর্তে ৩৫এ ধারা চালু হতে পারে কাশ্মীরে। এই অবস্থায় ওখানে ম্যাচ আয়োজন করা কঠিন। তাই আমরা খেলা সরিয়ে নিতে বলেছি।’’ খেলা দিল্লিতে সরে যাওয়ায় বিরক্ত দলের কোচ রবার্টসনও। বলে দিলেন, ‘‘পরপর ম্যাচ না হওয়ায় এমনিতেই আমরা সমস্যায় পড়েছি। দীর্ঘদিন পর আবার শ্রীনগরের প্রবল ঠান্ডা থেকে গিয়ে ভুবনেশ্বরে গরমে খেলতে হয়েছে। দিল্লিতে ম্যাচ হলে এমনিতে কোনও সমস্যা নেই। তবে আমাদের সমর্থকরা ম্যাচটা মাঠে বসে দেখতে পারবেন না বলে খারাপ লাগছে।’’ সরাসরি না বললেও ঘরের মাঠের সুবিধা না পাওয়ার দিকেই ইঙ্গিত করেছেন তিনি।
রিয়াল বনাম মিনার্ভা পঞ্জাবের ভেস্তে যাওয়া ম্যাচ নিয়ে এ দিন অবশ্য কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি লিগ কমিটি। দুই ক্লাব ও ম্যাচ কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলার পরে তা পাঠিয়ে দেওয়া হয় কর্মসমিতির কাছে। লিগ কমিটির চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত বললেন, ‘‘সব পক্ষের কথা শুনে এবং নিজেদের পর্যবেক্ষণ কী তা জানিয়ে কাগজপত্র পাঠিয়ে দিয়েছি কর্মসমিতিতে। মার্চের শুরুতেই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’’ কাশ্মীর কি তিন পয়েন্ট পাবে? ফেডারেশন সূত্রের খবর, কাশ্মীরকে পয়েন্ট না দিয়ে উপায় থাকবে না। তার কারণ ম্যাচ কমিশনারের রিপোর্ট কাশ্মীরের পক্ষে যাচ্ছে। লিগ কমিটির এক সদস্য বললেন, ‘‘মিনার্ভা ওয়াকওভার দেয়নি। খেলতে অস্বীকার করেছে। সে জন্যই কর্মসমিতিতে বিষয়টি আলোচনা করে নেওয়া হচ্ছে।’’ তবে মিনার্ভা খেলতে না যাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব নেওয়ার পক্ষে অনেকে। কাশ্মীরকে তিন পয়েন্ট দেওয়ার পাশাপাশি মিনার্ভার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হলেও তাই অবাক হওয়ার থাকবে না। কেউ কেউ ছোটখাটো মেয়াদের জন্য হলেও মিনার্ভার নির্বাসনের দাবিও তুলছেন।
কাশ্মীরের অন্যতম মালিক সন্দীপ বলে দিলেন, ‘‘আমাদের কেউ মিনার্ভা ম্যাচ ফের খেলার কথা বলেনি। আমরা খেলবও না। মিনার্ভার ম্যাচের দিন শ্রীনগর শান্ত ছিল, খেলার পরিস্থিতি ছিল। সেটা ম্যাচ কমিশনারদের রিপোর্টেও আছে। পয়েন্ট আমরা পাবই।’’ আর মিনার্ভার মালিক রঞ্জিত বাজাজ বললেন, ‘‘আমাদের দাবিতে যুক্তি আছে বলেই বিষয়টি কর্মসমিতিতে গেল। আমরা নিরপেক্ষ জায়গায় খেলার জন্য তৈরি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy