দ্বৈরথ: ফাইনালে ওঠার পথে থিম ও জ়েরেভ (নীচে)। ইউএসএ টুডে
আরও একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে দমিনিক থিম। এ বার উল্টো দিকে নেই কোনও রাফায়েল নাদাল। রোলঁ গ্যারোজে ফাইনালে উঠে দু’বার ক্লে কোর্টের সম্রাটের সামনে নতজানু হতে হয়েছে থিমকে।
আরও একটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে দমিনিক থিম। এ বার উল্টো দিকে নেই কোনও নোভাক জোকোভিচ। এ বছরেরই শুরুতে যিনি অস্ট্রেলীয় ওপেনের ফাইনালে পাঁচ সেটে হারিয়ে দিয়ে থিমের স্বপ্নভঙ্গ করে দিয়েছিলেন।
টেনিস দুনিয়ার রবার্ট ব্রুস হয়ে ওঠার ব্রত নিতে হবে তাই থিমকে। আগের তিন বার ফাইনালে উঠে ব্যর্থ হওয়ার পরে আর্থার অ্যাশ স্টেডিয়ামে রবিবার ফের ফাইনাল। এ বার তাঁর সামনে জার্মানির ছ’ফুট ছ’ইঞ্চির বিগ সার্ভার আলেকজ়ান্ডার জ়েরেভ। যাঁকে টেনিসের পরবর্তী সুপারস্টার হিসেবেও চিহ্নিত করেছেন অনেকে। রবিবার যিনিই জিতুন, গ্র্যান্ড স্ল্যাম পাবে নতুন এক বিজয়ীকে।
সেমিফাইনালে থিম ৬-২, ৭-৬ (৭), ৭-৬ (৫) হারালেন দানিল মেদভেদেভকে। স্কোরবোর্ড দেখাচ্ছে, তিনি স্ট্রেট সেটে জিতেছেন। যেটা দেখাচ্ছে না, তা হচ্ছে তীব্র লড়াই এবং উত্তেজনার পরে এসেছে এই জয়। ‘‘সম্ভবত আমার জীবনের কঠিনতম স্ট্রেট সেট জয়,’’ ম্যাচের পরে স্বীকারও করেছেন থিম। ক্নান্ত, পরিশ্রান্ত দেখাচ্ছিল তাঁকে। কিন্তু চতুর্থ বার ফাইনালে উঠেও আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। তীরে এসে তরী ডোবার যন্ত্রণা তাঁর চেয়ে
ভাল কে জানে!
‘‘যদি আমি জিতি, প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম পাব। না হলে মনে হয় অ্যান্ডি মারেকে ফোন করে ০-৪ হওয়ার অভিজ্ঞতাটা আলোচনা করতে হবে,’’ রবিবার ফাইনাল নিয়ে মজা করে বলেছেন থিম। জীবনের প্রথম চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে হেরেছিলেন মারে। শেষ পর্যন্ত মেজর ট্রফির উপবাস ভঙ্গ করেন ২০১২-তে যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জিতে। থিম তিনটি ফাইনালের হার নিয়ে মারের দুর্ভাগ্যকে তাড়া করছেন।
সেমিফাইনালে চোটের যন্ত্রণা সহ্য করে জিততে হয়েছে থিমকে। দু’বার কোর্টের মধ্যে পড়ে গিয়ে চেঁচিয়েও উঠলেন। ভাগ্যের সহায়তাও তিনি পেয়েছেন। একটি পয়েন্টকে মেদভেদেভ চ্যালেঞ্জ করলেও চেয়ার আম্পায়ার নস্যাৎ করে দেন, আবেদন জানাতে দেরি হয়েছে বলে। মেদভেদেভ কোর্ট ডিঙিয়ে গিয়ে রেফারিকে (যা নিয়মবিরুদ্ধ বলে তিনি সতর্কিতও হন) দেখানোর চেষ্টা করেন, বল কোথায় পড়েছিল। তাতেও লাভ হয়নি। পরে হক-আই দেখায়, মেদভেদেভই ঠিক ছিলেন এবং বল বাইরেই পড়েছিল।
জ়েরেভকে আরও কঠিন, ম্যারাথন লড়াই জিতে আসতে হয়েছে। সেমিফাইনালে প্রথম দুই সেটে পিছিয়ে পড়েও অসাধারণ প্রত্যাবর্তন ঘটিয়ে তিনি পাবলো কারেনো বুস্তাকে হারান ৩-৬, ২-৬, ৬-৩, ৬-৪, ৬-৩। জীবনে এই প্রথম বার দু’সেটে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচ জিতলেন জ়েরেভ। তিনি কতটা শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী, থিমের কথা থেকেই পরিষ্কার। ‘‘প্রথম সার্ভটা অন্য গ্রহের। এমন গতিসম্পন্ন সার্ভ খুব কমই দেখেছি। আমাকে দারুণ রিটার্ন করতে হবে,’’ বলে দিচ্ছেন থিম। মাত্র কয়েক ঘণ্টার বিশ্রাম। তার পরেই দু’জনকে কোর্টে ফিরতে হবে তরতাজা হয়ে গ্র্যান্ড স্ল্যাম জয়ের অধরা স্বপ্নপূরণ
করার লক্ষ্য নিয়ে।
বিশেষজ্ঞরা থিমকেই ফেভারিট বেছে নিচ্ছেন। তাঁর এক হাতের ব্যাকহ্যান্ড অনেকের মন জয় করলেও আসল অস্ত্র শক্তিশালী ফোরহ্যান্ড। বেকারের দেশের দীর্ঘকায় জ়েরেভের সেরা হাতিয়ার অবশ্যই বুম বুম সার্ভ। রবিবারের আগে পর্যন্ত জ়েরেভের সঙ্গে থিমের ন’বার সাক্ষাৎ হয়েছে। থিম জিতেছেন সাত বার। তিন বার গ্র্যান্ড স্ল্যামে মুখোমুখি হয়েছেন তাঁরা। তিন বারই জিতেছেন থিম। সর্বশেষ সাক্ষাৎ বছরের শুরুতে অস্ট্রেলীয় ওপেনে। চার সেটের লড়াইয়ে সেখানেও
বিজয়ীর নাম থিম।
টেনিসের ‘বিগ ফোরের’ (ফেডেরার, নাদাল, জোকোভিচ, মারে) পরবর্তী প্রজন্মের তারকা কারা, সেই প্রশ্ন উঠলে চার জনের নাম আসে। স্টেফানোস সিসিপাস এবং সেমিফাইনালে হেরে যাওয়া মেদভেদেভ তাঁদের মধ্যে দু’জন। অন্য দু’জন যুক্তরাষ্ট্র ওপেন জয়ের দ্বৈরথে মুখোমুখি থিম এবং জ়েরেভ। ফ্লাশিং মেডোজে রবিবার নতুন প্রজন্মের তারকা খুঁজে নেওয়ারও ফাইনাল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy