Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

ধোনির কাছেই কৃতজ্ঞ দীপক: সুইং করানোর সাহস দিয়েছিল

দীপক স্বপ্ন দেখেন ভারতীয় দলের তিন ফর্ম্যাটেই স্থায়ী জায়গা করে নেওয়ার। তাই বৈচিত্রের সঙ্গে বলে গতি বাড়ানোর প্রস্তুতি তাঁর নিয়মিত চলছে। দীপকের প্রধান অস্ত্র যদিও সুইং।

লক্ষ্য: দলে জায়গা পাকা করতে বলের গতি বাড়াচ্ছেন দীপক।

লক্ষ্য: দলে জায়গা পাকা করতে বলের গতি বাড়াচ্ছেন দীপক।

ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৯
Share: Save:

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে এভিন লুইস, সুনীল নারাইনদের বিভ্রান্ত করে তুলেছিলেন দীপক চাহার। তিন ওভারে চার রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। ক্যারিবিয়ান সফরে একটি ম্যাচেই সুযোগ পেয়েছিলেন দীপক। তার মধ্যে তাঁকে প্রমাণ করতে হয়েছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তাঁর রয়েছে।

দীপক স্বপ্ন দেখেন ভারতীয় দলের তিন ফর্ম্যাটেই স্থায়ী জায়গা করে নেওয়ার। তাই বৈচিত্রের সঙ্গে বলে গতি বাড়ানোর প্রস্তুতি তাঁর নিয়মিত চলছে। দীপকের প্রধান অস্ত্র যদিও সুইং। দু’দিকে বল সুইং করানোর ক্ষমতা তাঁর ছোটবেলা থেকেই। টি-টোয়েন্টিতে পাওয়ারপ্লে চলাকালীন ব্যাটসম্যানের পায়ের সামনে বল ফেলতে ভয় পান না। রাজস্থান রঞ্জি দলের মিডিয়াম পেসার যদিও সেই সাহস জোগানোর কৃতিত্ব দিচ্ছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে।

আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলেন দীপক। শেষ মরসুমে দেখা গিয়েছে পাওয়ারপ্লে-র মধ্যেই দীপকের তিন ওভার শেষ করে দিতেন ধোনি। এক ওভার রেখে দিতেন স্লগ ওভারের জন্য। পিচ থেকে সাহায্য পেলে কখনও টানা চার ওভার শেষ করে দিতেন দীপক। তাই পাওয়ারপ্লে-তে আর মার খাওয়ার ভয় পান না। বরং, ব্যাটসম্যানের পায়ের সামনে বল ফেলে তাঁকে বড় শট নেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করেন। গায়ানায় তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এই কৌশল প্রয়োগ করেই সফল দীপক।

রবিবার আগ্রা থেকে ফোনে আনন্দবাজারকে তিনি বললেন, ‘‘চেন্নাই সুপার কিংসের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়ে প্রচুর উন্নতি হয়েছে। কিছুটা অবশ্যই আমার প্রস্তুতির জন্য। কিছুটা মাহিভাই (ধোনি)-এর আস্থায়। ও বেশি নির্দেশ দেয় না। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতে বল হাতে তুলে দেয়। এতেই বোঝা যায়, আমাকে ও কতটা বিশ্বাস করে।’’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘‘আইপিএল চলাকালীন মাহিভাই আমাকে বলেছিল, ‘কখনও সুইং করাতে ভয় পাবি না। মনে রাখবি এটাই তোর শক্তি। বিপক্ষে যত বড় ব্যাটসম্যানই থাকুক, পায়ের সামনে বল করে যাবি। যাতে ও বুঝতে পারে তুই ভয় পাচ্ছিস না।’ এই ধরনের কয়েকটা পরামর্শ সারা জীবনই মেনে চলব।’’

ক্যারিবিয়ান সফরে খেলতে আসার আগে ধোনির সঙ্গে কোনও কথা হয়েছিল? দীপকের উত্তর, ‘‘নাহ! বিশ্বকাপ থেকে মাহিভাই ফেরার পরে কোনও কথা হয়নি। কিন্তু মাহিভাই যে ভাবে ইনিংস শুরু করতে বলেছিল, সেটা করেই সফল হয়েছি। চেন্নাইয়ের সঙ্গে গায়ানার পরিবেশের অনেক মিল খুঁজে পেয়েছি। সারাক্ষণ হাওয়া দেয়। পিচ থেকে সাহায্য না পেলেও হাওয়ায় বল নড়াচড়া করে। এম এ চিদম্বরম স্টেডিয়ামে যে ভাবে বোলিং শুরু করতাম, ওখানেও একই ভাবে নতুন বল ব্যবহার করেছি।’’

বাড়িতে ফিরে এক দিন বিশ্রাম নেওয়ার পরেই শুরু করে দিয়েছেন অনুশীলন। আগের মতোই দিনে ১২ থেকে ১৩ ঘণ্টা অনুশীলন করেন। তুতো ভাই রাহুল (চাহার)-কে নিয়ে। কিন্তু দলীপ ট্রফি খেলতে বেঙ্গালুরু উড়ে গিয়েছেন রাহুল। তাই এখন একাই অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেন। ফিটনেসের মাপকাঠি বাড়ানোর জন্য ব্যক্তিগত ফিজিক্যাল ট্রেনারও রেখেছেন দীপক। তার সঙ্গে চলছে বলের গতি বাড়ানোর প্রস্তুতি।

দীপক বলছিলেন, ‘‘সুইং মূল অস্ত্র হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে স্থায়ী জায়গা করার জন্য প্রয়োজন গতি। আগে ১৩০ কিমি/ঘণ্টায় বল করতাম। এখন তা বাড়িয়ে ১৩৫/ঘণ্টায় করছি। এই মাপকাঠি বাড়িয়ে ১৪২ কিমি/ঘণ্টা করতে চাই। তার জন্য কাঁধ ও কোমরের জোর বাড়ানোর ব্যায়াম করতে হয়। খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তনও প্রয়োজন। কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা কমিয়ে প্রোটিন নির্ভর ডায়েট চলছে।’’

আইপিএলে ২০ নম্বর ম্যাচে সেরার পুরস্কার পেয়েছিলেন দীপক। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তৃতীয় ম্যাচেই সেই সাফল্য এসেছে। এ বার দীপকের লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি দলে স্থায়ী জায়গা করা। সামনের দু’বছরে দু’টি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হতে চলেছে। ২০২০-তে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০২১-এ ভারতে। দু’টি বিশ্বকাপেই নিয়মিত সুযোগ পেতে চান তিনি। সেই সঙ্গে টেস্ট দলে জায়গা করার জন্য দীপক মরিয়া। বলছিলেন, ‘‘প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেই বেশি সফল হয়েছি। আইপিএলে সুযোগ পাওয়ার আগে সে ভাবে টি-টোয়েন্টি খেলতাম না। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে রাজস্থানের হয়ে ১৯ উইকেট পাওয়ার পর থেকেই নিয়মিত টি-টোয়েন্টি দলে সুযোগ পাই। পুণে সুপার জায়ান্টস দলে থাকাকালীন মাহিভাই আমাকে বলেছিল, ‘পরের বার তোকে চেন্নাইয়ে নেব। সে ভাবে নিজেকে তৈরি কর।’ তখন থেকেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটকে গুরুত্ব দিতে শুরু করি। কিন্তু তার আগে টেস্ট খেলার স্বপ্নই দেখতাম।’’

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি কি এখন থেকেই শুরু করে দিয়েছেন? চাহার বললেন, ‘‘হয়তো মনে হচ্ছে এখনও এক বছর সময় রয়েছে। কিন্তু দেখতে দেখতে এই সময় কেটে যাবে। যতটা পরিণত হওয়া যায়, তা এখনই হতে হবে। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার আগে যদিও কয়েকটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ পাব। আইপিএলও থাকবে। সেখানে নিয়মিত খেলার সুযোগ পেলে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি অনায়াসে সেরে ফেলা যাবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Cricket India Mahendra Singh Dhoni Deepak Chahar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy