লড়াকু: ১২২ বল খেলে ৩৮ রানে অপরাজিত রয়েছেন রাহানে। এএফপি
‘উইন্ডি ওয়েলিংটন’! একটা ক্রিকেট মাঠে এত জোরে হাওয়া বইতে পারে? স্থানীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস শনিবার আরও জোরে হাওয়া বইবে। টিভিতে দেখছিলাম, দু’জন মাঠকর্মী প্রায় শুয়ে পড়ে সাইটস্ক্রিন ধরে রাখছেন। নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের টুপি মাথা থেকে উড়ে গিয়ে বাউন্ডারি লাইন পেরিয়ে গেল।
টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে এ রকম দামাল হাওয়াকে কাজে লাগাল নিউজ়িল্যান্ড। অভিষেক টেস্টেই কাইল জেমিসন দুরন্ত বোলিং করে (৩-৩৮) প্রথম দিনেই ভারতকে আটকে রাখল ১২২-৫।
জেমিসনের উচ্চতা ছ’ফুট আট ইঞ্চি। বলটা ও ছাড়ে আরও উপর থেকে। ক্রিকেটের পরিভাষায় যাকে বলে ‘হাই আর্ম বল রিলিজ’। এর সঙ্গে নিখুঁত নিশানায় বল করে একাই ভেঙে দিয়েছে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড। জীবনের প্রথম টেস্টে ওর শিকার চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহালি ও হনুমা বিহারী।
ছেলেটার ক্রিকেট বুদ্ধিও প্রখর। কেবল গতি দিয়ে মাত করেনি। হাওয়ার বিরুদ্ধে রান আপ কমিয়ে দিয়ে নিখুঁত নিশানায় বল রেখে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল। হাতে দুর্দান্ত আউট সুইং রয়েছে। উচ্চতার জন্য বাড়তি বাউন্স পায়। ময়দানের ভাষায় এই ধরনের বোলারদের বলকে বলে— উপরে ছেড়ে দেয়েছে। এ বার বল চড়ে খাবে। এ দিন সে ভাবেই ভারতীয় ব্যাটিংকে খেয়ে নিল জেমিসনের বল।
এ বার আসি ভারতীয় ব্যাটিংয়ের প্রসঙ্গে। ওপেনার পৃথ্বী শ কিন্তু বিরাটদের আগেই ‘এ’ দলের হয়ে খেলতে নিউজ়িল্যান্ড গিয়েছিল। টিম সাউদির লেগমিডে পড়ে আউটসুইং হওয়া যে বলে ও বোল্ড হল তা অনসাইডে খেলার দরকারই ছিল না। বরং মায়াঙ্ক আগরওয়াল টেস্ট ওপেনারের মতোই ব্যাট করছিল। ১৪০ মিনিট খেলার পরেও ওর রান ছিল ১৬। এতেই স্পষ্ট ও কতটা সাবধানী ও ইনিংস গড়ার দিকে মনোযোগী ছিল। কিন্তু ক্রিজে জমে গিয়েও ট্রেন্ট বোল্টের বল ব্যাটের উপরের দিকে লাগায় জেমিসনের হাতে ধরা পড়ে ও। বেচারা পুজারাও কটবিহাইন্ড হল জেমিসনের একটা দুর্দান্ত বলে।
বিরাট কোহালি ব্যাট করতে আসতেই জেমিসন প্রথম বলেই বাউন্সার দিয়ে অভ্যর্থনা জানিয়েছিল। নিউজ়িল্যান্ডের রণনীতি ছিল প্রথম থেকেই বিরাট কোহালিকে পিছনের পায়ে ঠেলে দাও। কিছুক্ষণ পরেই শরীর থেকে বেশ কিছুটা দূরে বল করেছিল। বিরাট বলটা কভার ড্রাইভ মারতে গিয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দেয়। বল হাওয়াতে সুইংয়ের সঙ্গে ‘অফ দ্য পিচ’ সিম করছে। এতেই আউট হয়। হনুমাও শুরুটা দারুণ করেছিল। কিন্তু দুরন্ত আউটসুইংয়ে ফিরতে হয় ওকে।
প্রথম দিনের শেষে ক্রিজে রয়েছে অজিঙ্ক রাহানে ও ঋষভ পন্থ । শনিবার প্রথম ঘণ্টা কিন্তু এই দু’জনের কাছেই সমান গুরুত্বপূর্ণ। রাহানে পরিস্থিতি অনুযায়ী সুন্দর ব্যাটিং করছে। কোনও ঝুঁকি নেয়নি। মারার বল মেরেছে। নিউজ়িল্যান্ড অধিনায়ক গতি কম থাকায় কলিন দে গ্র্যান্ডহোমকে সুন্দর ব্যবহার করেছিল। গ্র্যান্ডহোম উইকেট টু উইকেট বল করে ভারতের রানরেট কমিয়ে দেয়। কিন্তু ওকে বা জেমিসন কাউকেই রাহানের সামনে আত্মবিশ্বাসী লাগেনি। কারণ, রাহানে স্পিনের চেয়েও জোরে বল ভাল খেলে।
শনিবার কভার উঠলে বল নড়াচড়া করার সম্ভাবনা আরও বেশি। পিচ ভারী হতে পারে। অজিঙ্ক, ঋষভ আর অশ্বিনদের সামনে তাই নতুন পরীক্ষা। প্রথম ঘণ্টা দেখেশুনে খেলার পরে, ওদের লক্ষ্য থাকুক ভারতের রান ২৫০-এ নিয়ে যাওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy