মরিয়া: অনুশীলনে নেমে পড়লেন ডেভিড ওয়ার্নার। মেলবোর্নে। টুইটার
ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া সিরিজের তৃতীয় টেস্টে তাঁকে খেলতে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনার কমতি নেই। স্বয়ং ডেভিড ওয়ার্নার জানাচ্ছেন, ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সিডনি টেস্টের আগে তাঁর একশো শতাংশ সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই।
শনিবার মেলবোর্নে নেটে ব্যাট হাতে নেমে পড়েন ওয়ার্নার। তার আগে ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে অস্ট্রেলিয়ার এই বাঁ-হাতি ওপেনার বলেছেন, ‘‘আমাদের আজ এবং কাল, দু’দিন ট্রেনিং সেশন আছে। তার পরেই আমি বলতে পারব, কী অবস্থায় আছি। তবে যদি জানতে চান, সিডনি টেস্টের আগে পুরো সুস্থ হয়ে যাব কি না, তা হলে আমার উত্তর হবে, খুব সম্ভবত না।’’
ভারতের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের সময় কুঁচকিতে চোট পান ওয়ার্নার। তার পরে এত দিন তিনি মাঠের বাইরেই ছিলেন। টেস্ট সিরিজে আবার ওপেনার সমস্যায় ভুগেছে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাথু ওয়েড এবং জো বার্নসের জুটি ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের মোকাবিলা করতে। বার্নস বাদও পড়েছেন তৃতীয় টেস্টে। এই অবস্থায় কি ওয়ার্নারকে খেলানোর ঝুঁকি নেবে অস্ট্রেলিয়া? দলের সহকারী কোচ অ্যান্ড্রু ম্যাকডোনাল্ড দিন দুই আগেই বলেছিলেন, পুরো সুস্থ না হলেও ওয়ার্নারকে খেলানো হতে পারে সিডনিতে। বাঁ-হাতি ওপেনার বলেছেন, ‘‘গত দু’দিন আমি ট্রেনিং করিনি। এখন আবার শুরু হবে। সিডনিতে মাঠে নামতে আমি মরিয়া। যদি নির্বাচকরা চান, তা হলে পুরো সুস্থ না হলেও আমি মাঠে নামব।’’
ওয়ার্নারের এই মন্তব্যেই পরিষ্কার, অস্ট্রলিয়া শিবির কতটা মরিয়া তাঁকে খেলাতে। ওয়ার্নার নিজে কয়েকটা দিন ব্যাটিং করেছেন নেটে। সেখানে চেষ্টা করেছেন, সামনের দিকে ঝুঁকে বেশি বল না খেলতে। কিন্তু তিনি ভাল করেই জানেন, ম্যাচে এটা সম্ভব নয়। ওয়ার্নারের কথায়, ‘‘নেটে ব্যাট করার সময় আমি বলের জন্য অপেক্ষা করে খেলছিলাম। আমার পছন্দ মতো জায়গায় বল পড়লে তবেই শট মারছিলাম।’’ যোগ করেন, ‘‘জানি, ম্যাচে সেটা সম্ভব নয়। খেলার সময় অত কিছু ভেবে খেলা যায় না। এই মুহূর্তে বলতে পারি, সামনের দিকে ঝুঁকে শট খেলছি না।’’
তবে ব্যাটিংয়ের থেকেও ওয়ার্নার গুরুত্ব দিচ্ছেন খুচরো রান নেওয়ার ব্যাপারকে। বলেছেন, ‘‘আমার কাছে সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, দ্রুত দুই উইকেটের মাঝখানে ছুটতে পারছি কি না। কত রকমের শট খেলতে পারলাম, সেটা নয়। তার চেয়েও বড় হল, বলটাকে ক্রিজে ফেলে রান নেওয়ার জন্য দৌড়তে পারলাম কি না।’’
অস্ট্রেলিয়ার আরও একটা বড় সমস্যা হল, স্টিভ স্মিথের ফর্মে না থাকা। তাঁর সতীর্থের পাশে দাঁড়িয়ে ওয়ার্নার বলেছেন, ‘‘টেস্টে সেরা ব্যাটসম্যানের র্যাঙ্কিং থেকে স্মিথকে সরিয়ে দিয়েছে কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু দেখবেন, স্মিথের গড় ৬০ রানের উপরে। সবারই একটা খারাপ সময় আসে। অ্যাশেজের সময় আমারও একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল।’’
ওয়ার্নার মনে করেন, একটা দারুণ বল যে কোনও ব্যাটসম্যানকেই ফিরিয়ে দিতে পারে। তাঁর কথায়, ‘‘যদি কারও নাম একটা বলে লেখা থাকে, তা হলে কিছু করার নেই। সে আউট হয়ে যাবেই। স্মিথকে দেখলেই বোঝা যায়, ওর প্রস্তুতিতে কোনও ঘাটতি নেই। নেটে ও আউট হচ্ছে না। পায়ের সামনে থেকে বলগুলো সহজেই খেলে দিচ্ছে।’’
চলতি সিরিজে একটা ব্যা্পার লক্ষ্য করেছেন ওয়ার্নার। তাঁর মনে হয়েছে, ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া— দু’দেশের ব্যাটসম্যানরাই বোলারদের আধিপত্য বিস্তার করতে দিয়েছেন। ওয়ার্নার সাফ বলেছেন, ‘‘যদি কোনও একটা ভাল বোলিং আক্রমণকে চাপ তৈরি করতে দেওয়া হয়, তা হলে রান করা কঠিন হয়ে যায়। ভারত, অস্ট্রেলিয়া— দু’দলেরই বোলিং আক্রমণ খুব ভাল। আর দু’দলের ব্যাটসম্যানরাই কোনও চাপ তৈরি করতে পারেনি বিপক্ষ বোলারদের উপরে।’’ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে ওয়ার্নার বলেছেন, ‘‘বোলারদের চোখে চোখ রেখে ব্যাটিংটা করতে হয়। রান নেওয়ার সময় উচ্চস্বরে ‘কল’ করতে হয়। ওদের লাইন-লেংথ গুলিয়ে দিতে হয়। আমি আমার অভিজ্ঞতা থেকে এ সব বলছি।’’
অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও চোট-আঘাত সমস্যায় ভুগছে। মেলবোর্নে চোট পাওয়ায় ছিটকে গিয়েছেন পেসার উমেশ যাদব। তাঁর জায়গায় দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বাঁ-হাতি পেসার টি নটরাজন। যিনি আবার আইপিএলে ওয়ার্নারের নেতৃত্বে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেন। নটরাজনকে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতার বিচারে ওয়ার্নার বলেছেন, ‘‘নটরাজন ভাল লাইন এবং লেংথে বল করে। কিন্তু টেস্টে টানা বল করে যেতে হয়। সেটা কি ও করতে পারবে? আমি নিশ্চিত নই।’’ তবে এও বলেন, ‘‘মহম্মদ সিরাজ যেমন সুযোগ পেয়ে টেস্টে ভাল কিছু করল, সে রকম নাটুও (নটরাজন) সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করবে বলেই আমি মনে করি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy