দানিশ কানেরিয়া।
ফের মুখ খুললেন প্রাক্তন পাক লেগস্পিনার দানিশ কানেরিয়া। বলে দিলেন, পাক সরকার বা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড—কেউ তাঁকে নির্বাসিত থাকার সময়ে কোনও সহায়তা করেনি।
তাঁকে নিয়ে প্রথম মুখ খুলেছিলেন সতীর্থ শোয়েব আখতার। বলেছিলেন, দানিশ কানেরিয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় পাকিস্তান দলে কিছুটা ব্রাত্য ছিলেন। কেউ তাঁর সঙ্গে খেতে পর্যন্ত চাইত না। ইংল্যান্ডে টেস্ট ম্যাচ জেতালেও কানেরিয়ার কৃতিত্ব স্বীকার করতে চাননি পাকিস্তান ক্রিকেট দলের অনেকেই।
স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের কাউন্টি এসেক্সের হয়ে খেলার সময়ে দোষী সাব্যস্ত হন কানেরিয়া। তার পরে তাঁকে আজীবন ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করা হয়। যে শাস্তি এখনও বহাল রয়েছে। শনিবার সেই প্রসঙ্গে কানেরিয়া আক্রমণ শানিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে। প্রাক্তন এই পাক টেস্ট ক্রিকেটার টুইট করেন, ‘‘নির্বাসনের শাস্তি পাওয়ার পরে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বা পাক সরকারের তরফে কেউ সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়নি। অথচ পাকিস্তানে অনেক ক্রিকেটার আমার মতো দোষ করেও দেশের হয়ে খেলে গিয়েছে। কারণ তাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছিল পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। সেই সব ক্রিকেটার পরে সম্মানিতও হয়েছে। এর থেকে এই সিদ্ধান্তেই আসা যায়, শোয়েব আখতার যে বলেছে তা একদম ঠিক।’’
৩৯ বছরের কানেরিয়া এ-ও জানিয়েছেন, তিনি হিন্দু হলেও মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তানের আম জনতা কখনও তাঁর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেননি। কানেরিয়ার কথায়, ‘‘আমি হিন্দু হলেও পাকিস্তানের মানুষ কখনও আমার সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করেননি। আমি গর্বিত যে, সততার সঙ্গে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি। এ বার আমার ভাগ্য পাকিস্তান সরকারের হাতে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের শীর্ষ কর্তারা নির্ধারণ করবেন আমার ভবিষ্যৎ।’’
পাশাপাশি, এ দিন শাস্তি মকুব করার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী ও প্রাক্তন ক্রিকেটারদের সাহায্যও চেয়েছেন কানেরিয়া। একই সঙ্গে এই বিষয়টিতে যাতে রাজনীতির রং লাগানো না হয়, সে ব্যাপারেও আবেদন জানিয়েছেন তিনি। টুইটারে নিজের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে কানেরিয়া লিখেছেন, ‘‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান-সহ দেশ ও বিদেশের সব কিংবদন্তি ক্রিকেটারের কাছে সাহায্য চাই এই অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য। দয়া করে, এগিয়ে আসুন। আমাকে সাহায্য করুন।’’ পাকিস্তানের হয়ে টানা দশ বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলা কানেরিয়া যোগ করেন, ‘‘সমাজে কিছু মানুষ থাকে, যারা বিরোধিতা করতেই থাকে। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভালবাসা আমার সঙ্গে থাকায় বিরোধীরা কখনও আমাকে হারাতে পারেনি। জীবনে ইতিবাচক থেকে আমি সব সময়ে এই বিরোধীদের উপেক্ষা করে গিয়েছি।’’
কানেরিয়া আরও বলেন, ‘‘আমার জীবন এই মুহূর্তে খুব ভাল নেই। তাই সকলের সাহায্য চাই। কেউ আমাকে সাহায্য করেনি ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত থাকা জীবনে। আশা রাখি, পাকিস্তানের মানুষ আমাকে সাহায্য করবেন।’’
সতীর্থ শোয়েব আখতার পাকিস্তানের দ্বিতীয় হিন্দু ক্রিকেটার কানেরিয়ার একদা দলে কোণঠাসা থাকার অবস্থা সম্পর্কে মুখ খোলেন। যা ঠিক বলে জানিয়েছিলেন স্বয়ং কানেরিয়াই। সঙ্গে তিনি এটাও জানিয়েছিলেন, শোয়েব আখতার ছাড়াও ইনজ়ামাম-উল-হক, ইউনিস খান, মহম্মদ ইউসুফেরা তাঁর পাশে ছিলেন।
এ দিন কানেরিয়ার ক্রিকেট জীবনে পাকিস্তান দলের অধিনায়ক ইনজ়ামাম এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘দানিশকে নিয়ে বিতর্ক আমার কানে এসেছে। ও আমার অধিনায়কত্বেই বেশি খেলেছে। আমাদের দলে এ রকম কিছু ঘটেনি কখনও। পাকিস্তানিদের হৃদয় এত ছোট নয়। মুস্তাক আহমেদ আমার ছোটবেলার বন্ধু। কিন্তু আমার অধিনায়কত্বেই ও বাদ পড়ে। দলে নিয়ে আসি কানেরিয়াকেই। তাই এই অভিযোগ শুনে দুঃখ পেয়েছি।’’ কানেরিয়ার অভিযোগ ঠিক নয় বলে জানিয়েছেন, মহম্মদ ইউসুফ ও শাহিদ আফ্রিদিও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy