চমক দিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। আইপিএলের আগামী মরসুমে দলের অধিনায়ক করা হয়েছে রজত পাটীদারকে। নতুন অধিনায়ক হিসাবে বিরাট কোহলির নামও শোনা যাচ্ছিল। কোহলিকে টপকে অধিনায়ক হয়েছেন পাটীদার। হঠাৎ করে কি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল? না কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল? জানালেন পাটীদার নিজেই।
গত মরসুমে পর্যন্ত বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ছিলেন ফাফ ডুপ্লেসি। তাঁকে যে আর নিলামে রাখা হবে না তার ইঙ্গিত আগেই মিলেছিল। কারণ, ডুপ্লেসির বয়স। তাই গত বারই নাকি পাটীদারের সঙ্গে কথা বলেছিলেন বেঙ্গালুরুর ডিরেক্টর অফ ক্রিকেট মো বোবাট। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পরে পাটীদার বলেন, “গত বার বোবাটের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। ও আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল আমি অধিনায়ক হতে চাই কি না। তখনই জানিয়েছিলাম, বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক হওয়ার আগে নিজের রাজ্য দলকে নেতৃত্ব দিতে চাই। তখনই একটা ইঙ্গিত পেয়েছিলাম। যে দলে আমার আইপিএল কেরিয়ার শুরু হয়েছে সেই দলের অধিনায়কের দায়িত্ব আমার কাছে বড় সম্মান। আমি জানতাম, কোহলি ও আমার মধ্যে কেউ অধিনায়ক হবে। শেষ পর্যন্ত আমি হয়েছি। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।”
পাটীদারের উপর ভরসা রেখেছে ম্যানেজমেন্ট। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশের অধিনায়ক ছিলেন পাটীদার। সেখানে তিনি কেমন অধিনায়কত্ব করেন সে দিকে নজর ছিল অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারদের। পাটীদারের পারফরম্যান্সে খুশি হওয়ায় তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছে দল। তাঁর নেতৃত্বে খেলবেন কোহলি। যিনি ১২ বছর এই দলের অধিনায়ক ছিলেন। পাটীদার নিজেও তাঁর অধীনে খেলেছেন।
কোহলি থাকায় কি চাপ বাড়বে পাটীদারের উপর? তেমনটা মনে করেন না তিনি। উল্টে কোহলি থাকায় তাঁর সুবিধা হবে বলেই জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর নতুন অধিনায়ক। তিনি বলেন, “আমার উপর বাড়তি কোনও চাপ থাকবে না। কোহলিকে অনেক দিন ধরে চিনি। একসঙ্গে খেলেছি। একসঙ্গে ব্যাট করেছি। ওর অভিজ্ঞতা আমার কাজে লাগবে। তাতে আমাদের দলই শক্তিশালী হবে। একসঙ্গে মিলে বেঙ্গালুরুকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।”
খেলার সময় একটু চুপচাপ থাকতেই পছন্দ করেন পাটীদার। তাঁর এই গুণ পছন্দ হয়েছে কোচ ফ্লাওয়ারের। ঠান্ডা মাথায় দলকে চালান পাটীদার। আইপিএলেও সেটাই করতে চান তিনি। দলের ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দিতে চান। পাটীদার বলেন, “আমার মধ্যে কী চলছে তা খুব একটা প্রকাশ করি না। কিন্তু ম্যাচের পরিস্থিতির দিকে নজর থাকে। আমার প্রধান কাজ হবে প্রত্যেক পরিস্থিতিতে ক্রিকেটারদের পাশে থাকা। ক্রিকেটার থাকাকালীন অধিনায়ককে আমার পাশে পেয়েছি। অধিনায়ক হিসাবে আমিও সেটা করতে চাই। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে চাই যেখানে সকলে ফুরফুরে মেজাজে থাকবে। আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠে নামবে।”
আরও পড়ুন:
কোহলি ছাড়াও বেশ কিছু অভিজ্ঞ ক্রিকেটার রয়েছেন বেঙ্গালুরু দলে। তাঁদের প্রত্যেককে পাশে চান পাটীদার। তিনি দলগত খেলায় বিশ্বাসী। পাটীদার বলেন, “আমাদের দলে অনেক নেতা আছে। তারা প্রত্যেকে অভিজ্ঞ। তাদের অভিজ্ঞতা আমাকে সাহায্য করবে। অধিনায়ক হিসাবে আরও পরিণত করবে। কোহলির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার সুযোগ পাব। সেটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।”
রাহুল দ্রাবিড়, অনিল কুম্বলে, কোহলি থেকে ডুপ্লেসি, কোনও অধিনায়কই দলকে আইপিএল জেতাতে পারেননি। তিনি কি পারবেন? পুরনো কথা মনে রাখতে চান না পাটীদার। সামনে তাকাতে চান। তিনি বলেন, “আমি পিছনের দিকে তাকাই না। যা হয়ে গিয়েছে তাকে তো বদলাতে পারব না। সামনের দিকে তাকাতে হবে। দলে অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার আছে। এ বার আমাদের দল বেশ শক্তিশালী। আমার অধিনায়কত্বের ধরন আলাদা। নিজের পরিকল্পনার উপর বিশ্বাস রাখি। তবে বাকিদেরও সাহায্য লাগবে।” নতুন মরসুমে দলের পাশে থাকার জন্য সমর্থকদের আহ্বান জানিয়েছেন পাটীদার। সমর্থকদের জন্যই এ বার আইপিএল জিততে চান তিনি।