বিরাট কোহলি নামটার বাড়তি আকর্ষণ রয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। ১৩ বছর পর তাঁর রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলা নিয়েও প্রবল আগ্রহ ছিল ভক্তদের মধ্যে। ভিড় সামলাতে দিল্লির স্টেডিয়ামে আধাসামরিক বাহিনী ডাকতে হয়েছিল। কোহলি কোন গাড়িতে মাঠে আসছেন, দিল্লির ক্রিকেটারদের সঙ্গে কী ভাবে মিশছেন, কী খাচ্ছেন— সব কিছু নিয়েই তুমুল আগ্রহ ছিল। চর্চা শুরু হয়েছে তাঁর মধ্যাহ্নভোজ নিয়েও।
ফিটনেস সচেতন কোহলি রঞ্জি ম্যাচের সময় মধ্যাহ্নভোজ হিসাবে বেছে নিয়েছেন চিলি পনির। খান অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের ক্যান্টিনের খাবার। কোহলি কেন শুধু পনির দিয়ে মধ্যাহ্নভোজ করেছেন, তা নিয়েও আগ্রহ তৈরি হয়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের মধ্যে। শুধু পনির কি পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে? ম্যাচ খেলার ধকল সামলানো যায়?
পনিরের খাদ্যগুণ যথেষ্ট ভাল। সম্ভবত স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির কথা মাথায় রেখেই পনির বেছে নেন ভিগান হিসাবে পরিচিত কোহলি। পনিরে থাকে যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিন। যা পেশি পুনর্গঠনে সহায়ক। ক্রিকেটের মতো পরিশ্রমের খেলায় শারীরিক শক্তির প্রয়োজন। সেই শক্তি পাওয়া যায় পনির থেকে। গোটা ম্যাচে সম মানের পারফর্ম করতে সাহায্য করে পনির থেকে পাওয়া শক্তি। পনিরে থাকে কেসিন প্রোটিন। তা থেকে ধীরে ধীরে অ্যামাইনো অ্যাসিড নিঃসরণ করে, যা পেশির দীর্ঘ পুনর্গঠনে সহায়ক।
এখানেই শেষ নয়। ক্রিকেটারদের মাঠে যথেষ্ট দৌড়াদৌড়ি করতে হয়। ব্যাটিং বা ফিল্ডিংয়ের সময় দরকার রিফ্লেক্স। দ্রুত নড়াচড়া করতে হয়। তাতে শরীরের উপর চাপ তৈরি হয়। পনিরের ক্যালশিয়াম এবং ফসফরাস হাড় মজবুত করে চোট পাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। পেশি এবং অস্থিসন্ধির জন্যও ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস উপকারী। বিশেষ করে যাঁরা নিয়মিত খেলেন, তাঁদের বিশেষ প্রয়োজন। পনিরে থাকা স্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ হজম শক্তি এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়ক। পনির সহজপাচ্য এবং ঘন ঘন খাওয়ার ইচ্ছা কমিয়ে দেয়। এতগুলি গুণ থাকার কারণেই সম্ভবত কোহলি মধ্যাহ্নভোজে বেছে নেন পনিরের পদ।
পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিকের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা মাছ, মাংস বা ডিম খান না, তাঁদের অনেকেই প্রোটিনের জন্য নির্ভর করেন পনিরের উপর। তবে শুধু পনিরের মাধ্যমে শরীরে প্রোটিনের সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ হয় না। কারণ পনিরে পরিপূর্ণ প্রোটিন থাকে না। একটি বা দু’টি ডিম থেকে যে পরিমাণ বা মানের প্রোটিন পাওয়া যায়, এক বাটি পনিরে তা থাকে না। ঘাটতি মেটাতে পনিরের সঙ্গে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত বাদাম, ডাল খান অনেকে। পনিরের সঙ্গে আরও কিছু খাবার খেলে তবেই সব রকমের এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া সম্ভব। এই এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাসিড সংগ্রহ করতে হয় খাবার থেকে। আমাদের শরীর নিজে এসেনশিয়াল অ্যামাইনো অ্যাডিস তৈরি করতে পারে না। খেলোয়াড়েরা প্রোটিন সাপ্লিমেন্টও ব্যবহার করেন। সব মিলিয়ে তাঁদের শরীরে পুষ্টি বা শক্তির ঘাটতি হয় না।’’
আরও পড়ুন:
কোহলির পনিরের পদে পদে কী কী উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছিল, জানা যায়নি। ব্যক্তিগত পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া কোনও খাবার সাধারণত মুখে তোলেন না। পুষ্টি সচেতন কোহলির পুষ্টি নিয়ে সমঝোতার কোনও প্রশ্নই নেই। ক্রিকেটের স্বার্থে যে কোনও রকম শৃঙ্খলা মেনে চলেন।