রবিচন্দ্রন অশ্বিন। — ফাইল চিত্র।
ব্রিসবেন টেস্টে ফলো-অন এড়ানোর পর মঙ্গলবার থেকেই ভারতীয় শিবিরের মেজাজ ফুরফুরে ছিল। টেস্ট যে ড্র হতে চলেছে এ নিয়ে সন্দেহ ছিল না কারওরই। সেটাই হয়েছে। তবে পঞ্চম দিনের খেলা শেষের পর রবিচন্দ্রন অশ্বিন যে এ ভাবে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করবেন তা কেউই ভাবতে পারেননি। অশ্বিনের অবসরের ভাবনার কথা জানতেন শুধু দু’জন। জানা যাচ্ছে, গৌতম গম্ভীরের একটি সিদ্ধান্তই অশ্বিনের অবসরের পথ সুগম করে দিয়েছে।
অশ্বিনের অবসরের সিদ্ধান্তের পর একের পর এক তথ্য প্রকাশ্যে আসছে। তাতে ভারতীয় দলের অন্দরের যোগাযোগের অভাবই আরও প্রকট হয়ে যাচ্ছে।
প্রথমত, দেশের মাটিতে বরাবরই ভাল খেলেছেন অশ্বিন। তবে নিউ জ়িল্যান্ড সিরিজ়ে প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি। সে জায়গায় ওয়াশিংটন সুন্দর মাঝপথে দলে ঢুকেই পুণে টেস্টে সফল হয়েছিলেন। ভারত চুনকাম এড়াতে না পারলেও অশ্বিনের বিকল্প যে এসে গিয়েছে তা ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন গম্ভীর। ওয়াশিংটনকে ভবিষ্যতের এক নম্বর স্পিনার হিসাবেও উল্লেখ করেছিলেন। তাতে অশ্বিন দেওয়াল লিখন পড়ে নিয়েছিলেন।
দ্বিতীয়ত, প্রথম একাদশ নিশ্চিত না হলে অশ্বিন অস্ট্রেলিয়া যেতেই রাজি ছিলেন না। নিউ জ়িল্যান্ডের কাছে হারের পর ভবিষ্যতে তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করছে তা বুঝতে পারছিলেন তিনি। তবু নির্বাচক এবং রোহিতের আশ্বাসে অস্ট্রেলিয়া যান। অশ্বিন এবং রবীন্দ্র জাডেজার পাশাপাশি ওয়াশিংটনকে তৃতীয় স্পিনার হিসাবে দলে নেওয়া হয়।
তৃতীয়ত, পার্থ টেস্টে ছিলেন না রোহিত। ফলে প্রথম একাদশ নির্বাচন করেন কোচ গম্ভীরই। সেখানেই অশ্বিনের বদলে প্রথম স্পিনার হিসাবে তিনি ওয়াশিংটনকে খেলান। ধাক্কা খান অশ্বিন। তাঁর সময় যে শেষ এটা বুঝতে দেরি হয়নি। বাকি সিরিজ়ে তাঁর খেলার আর দরকার আছে কি না সেটা ভাবতে শুরু করেন।
চতুর্থত, অবসরের সিদ্ধান্ত রোহিতকে প্রথম জানান অশ্বিন। বলেন, তিনি জুতোজোড়া তুলে রাখতে চান। কারণ ভারতের আর তাঁকে ‘দরকার নেই’। রোহিত অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিরস্ত করেন এবং অ্যাডিলেডে খেলানোর আশ্বাস দেন। সেটা পালনও করেছিলেন ভারতের অধিনায়ক।
পঞ্চমত, তৃতীয় টেস্টে আবার বাদ দেওয়া হয় অশ্বিনকে। নেওয়া হয় জাডেজাকে। অশ্বিন আর অপেক্ষা করতে চাননি। সিরিজ়ের মাঝপথেই অবসরের ঘোষণা করেছেন।
ষষ্ঠত, সিডনিতে স্পিনারেরা সাহায্য পেয়ে থাকেন। ফলে অশ্বিনের সেই মাঠে খেলার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনা ছিল। তবে অভিজ্ঞ স্পিনার বুঝতে পেরেছিলেন, স্পিন বিভাগে তাঁর নাম এখন তিন নম্বরে। সিডনিতে খেলার ব্যাপারে এগিয়ে থাকবেন ওয়াশিংটন এবং জাডেজাই। তাই অপেক্ষা করতে চাননি।
সপ্তমত, অশ্বিনের অবসরের সিদ্ধান্তে বোর্ডের কোনও হাত নেই। রোহিত ছাড়া একমাত্র গম্ভীর তাঁর অবসরের ব্যাপারে জানতেন। বিরাট কোহলি-সহ বাকি দল, এমনকি নির্বাচকদেরও এ ব্যাপারে কিছু জানাননি তিনি।
অষ্টমত, অস্ট্রেলিয়া সিরিজ় শেষ হওয়ার পর ভারত পরের বছর জুন মাসে ইংল্যান্ডে যাবে। পরিস্থিতি, পিচের কারণেই সেই দলে অশ্বিনের থাকার সম্ভাবনা কম। ঘরের মাঠে পরের সিরিজ় আগামী অক্টোবরে। তত দিনে অশ্বিনের বয়স ৩৯ হয়ে যাবে। তা ছাড়া, পরের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রও শুরু হয়ে যাবে জুন থেকে। তা শেষ হতে হতে অশ্বিনের ৪১ বছর হয়ে যাবে। তাই আগেই নিজেই যাত্রা শেষ করে দিয়েছেন অশ্বিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy