ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজের দিকে তাকিয়ে পুরান। ছবি: টুইটার।
ক্রিকেট মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের খেলতে নামা মানেই এখন হার। পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের কাছে পর পর দু’টি এক দিনের সিরিজ হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অস্তিত্বের সঙ্কটে ভুগছে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেট। ভারতের বিরুদ্ধে আসন্ন এক দিনের সিরিজে তাই নিছক জেতা নয়, বাঁচার লড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজের। অধিনায়ক নিকোলাস পুরান সেটিই বুঝিয়ে দিলেন।
পুরান বলেন, ‘‘ব্যাট বা বল হাতে ম্যাচ জেতানোর মতো অনেক ক্রিকেটার রয়েছে ভারতের। আমরা অবশ্যই সেরাটা দিয়ে ওদের চ্যালেঞ্জের সামনে ফেলতে চাই। সেটা পারলে ক্রিকেটবিশ্বে আমরা একটা বার্তা দিতে পারব। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের জন্য এই সিরিজে ভাল ফল দরকার।’’
এক দিনের ক্রিকেট শুরুর সময় ক্রিকেটবিশ্বে প্রায় অপ্রতিরোধ্য ছিল ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম দু’টি বিশ্বকাপও জিতেছে তারাই। সেই দাপুটে ক্যারিবিয়ানরাই এখন ক্রিকেট মাঠে কোণঠাসা। কয়েক বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা বাংলাদেশের কাছেও ঘরের মাঠে হারতে হচ্ছে পুরানদের। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ব্যর্থতার জন্য দায়ী করেছেন নিজেদের মানসিকতাকেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের আকর্ষণ ফেরাতে এখন ভারতের বিরুদ্ধে সিরিজই ভরসা পুরানের। তাঁর মতে, ভারতকে হারাতে পারলে বাঁচবে গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডসদের দেশের ক্রিকেট।
এই সিরিজে প্রথম দলের কয়েক জন ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিয়েছে ভারত। তবু শিখর ধবনের দলকে সমীহ করছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাদা বলের অধিনায়ক। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলী, যশপ্রীত বুমরা, ঋষভ পন্থ, হার্দিক পাণ্ড্যরা কেউই নেই। কতটা সুবিধা দেবে? পুরান হালকা ভাবে নিতে নারাজ ধবনের দলকে। তিনি বলেন, ‘‘ভারতের প্রচুর ক্রিকেটার রয়েছে যারা দলকে জেতাতে পারে। তাই হালকা ভাবে ভারতকে নেওয়ার প্রশ্নই নেই।’’
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আসার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিছু ক্রিকেটার দেশের হয়ে খেলার থেকে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলেন বেশি। জাতীয় দলে খেলার বাধ্যবাধকতা এড়াতে ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে চুক্তিও করেন না। কারণ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলে তাঁরা যা টাকা পান, তার থেকে অনেক বেশি টাকা পান ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে। সেরা ক্রিকেটারদের জাতীয় দলকে এড়িয়ে যাওয়ার এই প্রবণতা প্রভাব ফেলছে আন্তর্জাতিক ম্যাচের ফলেও। গত কয়েক মাসে ক্যারিবিয়ানদের সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পারফরম্যান্স বেশ খারাপ।
পুরান নেতৃত্বের দায়িত্ব নেওয়ার পরেও বদলায়নি ছবি। এই পরিস্থিতিতে বড় হয়ে উঠছে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দ্বন্দ্ব। সেই লড়াইয়ে ঢুকতে চাননি পুরান। বলেছেন, ‘‘আমরা নিজেরাই নিজেদের এই জায়গা নিয়ে এসেছি। সমস্যাটা আমরা বুঝতে পারছি। সমাধান খোঁজার চেষ্টা করছি।’’ এমন পরিস্থিতিতে নেতৃত্বের দায়িত্ব কতটা উপভোগ করছেন তাও জানিয়েছেন পুরান। বলেছেন, ‘‘নতুন ভূমিকা বেশ উপভোগ করছি। এখন তো মাঝেমাঝে বোলিংও করছি। দলের সকলেই আমার পাশে রয়েছে। আমরা সবাই মিলে ভাল কিছু করার চেষ্টা করছি।’’
ভারতের বিরুদ্ধে ভাল পারফরম্যান্স নিয়ে আশাবাদী পুরান বলেছেন, ‘‘এই সিরিজের দিকে আমরা সবাই তাকিয়ে রয়েছি। আশা করছি ভাল লড়াই হবে। আমরা উত্তেজক ক্রিকেট উপহার দিতে পারব। নিজেদের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করব আমরা।’’
সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থাকায় এই মুহূর্তে ২০ ওভারের ক্রিকেটই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। এক দিনের সিরিজ শেষ হলেই দুই দেশ টি-টোয়েন্টি সিরিজও খেলবে। সেখানে ভারত অবশ্য প্রায় পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই খেলবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখনও নিশ্চিত নয় বিশ্বকাপে। তাদের যোগ্যতা অর্জন পর্বে খেলতে হবে। তা নিয়ে পুরান বলেছেন, ‘‘এটা এক দিক থেকে যেমন খারাপ, তেমন আর এক দিক থেকে আশীর্বাদ। আমরা আগে খেলার সুযোগ পাব। যোগ্যতা অর্জন পর্বের কয়েকটা ম্যাচে পরিবেশ এবং উইকেটের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারব আমরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy