আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় তিতাস সাধুর হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন কোয়েল মল্লিক। — নিজস্ব চিত্র।
ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ মহিলাদের বিশ্বকাপ জিতেছেন। শুধু তাই নয়, ফাইনালে ম্যাচের সেরাও হয়েছেন হুগলির মেয়ে তিতাস সাধু। কিছু দিন আগেই খেলে এসেছেন মহিলাদের আইপিএলে। যদিও দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে নামা হয়নি এ বার। কিন্তু ঘোর এখনও কাটেনি। আনন্দবাজার অনলাইনের বছরের বেস্ট সন্ধ্যায় এসে অবশ্য ছেলেদের আইপিএল নিয়ে কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে নারাজ তিতাস। ট্রফি জেতার দৌড়ে তিনি এগিয়ে রাখলেন তিনটি দলকে।
কলকাতার মেয়ে হলেও নাইট রাইডার্সকে সমর্থন করেন না তিতাস। তাঁর পছন্দ দিল্লি ক্যাপিটালস। কারণ, তিনি মহিলাদের আইপিএলে দিল্লির হয়েই খেলেন। আনন্দবাজার অনলাইন সম্পাদক তথা বছরের বেস্ট অনুষ্ঠানের সঞ্চালক অনিন্দ্য জানা তিতাসকে প্রশ্ন করেন, আইপিএল কোন দল জিততে পারে? তিতাসের সটান উত্তর, “নো কমেন্টস।” তার পরে অবশ্য বলেন, “গুজরাত ভাল দল। সানরাইজার্সেরও ভাল দল। রাজস্থান রয়্যালসও রয়েছে।”
অনুষ্ঠানের সঞ্চালিকা তথা অভিনেত্রী সোহিনী সেনগুপ্ত একটি অভিনব প্রশ্ন রেখেছিলেন তিতাসের সামনে। তিনি জিজ্ঞাসা করেন, টেনিসে মিক্সড ডাবলসের মতো ক্রিকেটে মিক্সড টিম তৈরি করে খেলা হলে কেমন হবে? তিতাস বলেন, “সেটার জন্য সময় লাগবে। তবে কোনও দিন এটা সম্ভব হলে প্রমাণিত হবে যে, মহিলাদের ক্রিকেট সত্যিই অনেক এগিয়ে গিয়েছে।”
তিতাসের খেলোয়াড়ি জীবন শুরু দৌড়ের মাধ্যমে। রাজ্যস্তরের স্প্রিন্টার ছিলেন তিনি। দৌড়তে দৌড়তেই শুরু করেন সাঁতার। বেশ কিছু দিন জলে কাটানোর পর তিতাসের মনে ধরে টেবিল টেনিস। মন দিয়ে টেবিল টেনিস খেলা শুরু করেন তিনি। তবে রাজেন্দ্র স্মৃতি সঙ্ঘে গিয়ে ক্রিকেটের প্রেমে পড়ে যান। শুরুর দিকে ব্যাটিংই ছিল তাঁর পছন্দ। রানও ভালই করতেন। তা হলে বোলিংয়ের শুরু কী ভাবে?
এক দিন তাঁর ক্লাবে নেট বোলারের অভাব ছিল। তারা ডেকে নেয় তিতাসকে। সেই শুরু। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তিতাসকে। পড়াশোনাতে ভাল ছিলেন। মাধ্যমিকে ৯৩ শতাংশ নম্বর পেয়েছিলেন। কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমে পড়াশোনাও অনিয়মিত হয়ে পড়ে। বাংলা দলের বোলিং কোচ শিবশঙ্কর পালের হাতে পড়ে পাল্টে যান তিতাস। ২০১৬-১৭ মরসুমে বাংলার মহিলা দলের কোচ ছিলেন শিবশঙ্কর। সে সময়ই তিতাসকে তাঁর কাছে নিয়ে আসেন ছোটবেলার কোচ প্রিয়ঙ্কর মুখোপাধ্যায়। শিবশঙ্কর বলেছিলেন, “ওর ছোটবেলার কোচ আমাকে জানান যে তিতাস কতটা প্রতিভাবান। আমি পরে দেখলাম, সত্যিই তাই। পাঁচ ফুট আট ইঞ্চি উচ্চতা ওর। শারীরিক ভাবেও শক্তিশালী। তাই জোরে বল করতে পারে। তবে সবচেয়ে ভাল লেগেছিল ওর সুইং এবং বাউন্সার দেওয়ার ক্ষমতা দেখে।”
বাংলার শিবিরে যোগ দেন তিতাস। সিনিয়র দলেও সুযোগ পান। তার পরে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের দলে ডাক আসে। স্বচ্ছল পরিবার থেকে আসায় অর্থ কখনওই সমস্যা হয়নি তিতাসের কাছে। সঙ্গে পেয়েছেন বাবার সমর্থন। বাবা রণদীপ বলেছিলেন, “আমার মেয়েই সব পরিশ্রম করেছে। আমি শুধু ওকে পরামর্শ দিয়েছি। ভাবুন, আবহাওয়া যেমনই হোক, প্রতি সপ্তাহে ২২ কিলোমিটার দৌড়েছে। বাংলার হয়ে অনেক ভাল ভাল পারফরম্যান্স রয়েছে। গত মরসুমে সবচেয়ে বেশি উইকেট পেয়েছিল। জানতাম একদিন ও সাফল্য পাবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy