(বাঁ দিকে) কীর্তি আজাদ। রোহন জেটলি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের আগে রোহন জেটলির কমিটির বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন কীর্তি আজাদ। দাবি করেছিলেন, এ বার পরিবর্তন হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। দ্বিতীয় বার দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন রোহন। বর্ধমান-দুর্গাপুরের তৃণমূল সাংসদ তথা ১৯৮৩ সালের কপিল দেবের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য কীর্তি আজাদকে হারিয়েছেন অরুণ জেটলির পুত্র।
দিল্লি ক্রিকেট সংস্থায় মোট ভোট ২৪১৩। সভাপতি হতে প্রয়োজন ১২০৭ ভোট। রোহন পেয়েছেন ১৫৭৭ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী আজাদ পেয়েছেন ৭৭৭ ভোট। শুধু রোহন একা নন, তাঁর শিবিরের প্রত্যেকেই জিতেছেন। ১২৪৬ ভোট পেয়ে সহ-সভাপতি হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সিকে খন্নার কন্যা শিখা কুমার। তিনি হারিয়েছেন রাকেশ কুমার বনশল (৫৩৬) ও সুধীর কুমার আগরওয়ালকে (৪৯৮)।
দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সচিব হয়েছেন অশোক শর্মা। তিনি পেয়েছেন ৮৯৩ ভোট। ১৩২৮ ভোট পেয়ে কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন হরিশ সিংহ। যুগ্মসচিব হয়েছেন অমিত গ্রোভার। তিনি পেয়েছেন ১১৮৯ ভোট। সাত জন ডিরেক্টর নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা প্রত্যেকেই রোহন শিবিরের। তাঁরা হলেন, আনন্দ বর্মা (৯৮৫ ভোট), মনজিৎ সিংহ (১০৫০ ভোট), নবদীপ (১০৩৪ ভোট), শ্যাম শর্মা (১১৬৫ ভোট), তুষার সায়গল (৯২৬ ভোট), বিকাশ কাতিয়াল (১০৫৪ ভোট) ও বিক্রম কোহলি (৯৩৯ ভোট)।
১৪ বছর ধরে দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি ছিলেন অরুণ জেটলি। তাঁর পরে ক্রিকেট প্রশাসনে ঢোকেন পুত্র রোহন। চার বছর আগে প্রথম বার তিনি দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সভাপতি হন। তার পরেই দিল্লির ‘ফিরোজ শাহ কোটলা’ স্টেডিয়ামের নাম বদলে নিজের বাবা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নামে ‘অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম’ রাখেন তিনি। তাঁর নেতৃত্বেই গত বছর দিল্লির স্টেডিয়ামে এক দিনের বিশ্বকাপের ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল।
রোহন সভাপতি হওয়ার পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছেন আজাদ। রোহনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনার পরেই বিজেপি বহিষ্কার করে আজাদকে। তার পরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। ২০২৪ সালে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে হারিয়ে বর্ধমান-দুর্গাপুর থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন তিনি।
তার পরেও রোহনের বিরুদ্ধে নিশানা করা ছাড়েননি আজাদ। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড থেকে গত বছর ৭০ কোটি টাকা পেয়েছিল দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা। স্পনসর, আইপিএল, বোর্ডের কাছ থেকে ম্যাচ ফি ও টিকিট বিক্রি করে গত বছর আরও ৬৭ কোটি টাকা রোজগার হয়েছিল তাদের। সেই টাকা নয়ছয় করা হয়েছে বলেই অভিযোগ করেছিলেন আজাদ। তিনি বলেছিলেন, “বিসিসিআইয়ের কাছ থেকে দিল্লি ক্রিকেট সংস্থা প্রতি বছর ১৪০ কোটি টাকা পায়। তার মানে প্রতি মাসে ১২ কোটি ও প্রতি দিন ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারে তারা। কিন্তু সেই টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। কোন খাতে কত টাকা খরচ হয়েছে তার কোনও হিসাব নেই। ক্রিকেটের জন্য মাত্র ৭ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল?” রোহন অবশ্য এই অভিযোগের কোনও জবাব দেননি।
নির্বাচনের আগে রোহনকে একটি বিতর্কসভায় আহ্বান করেছিলেন আজাদ। রোহন যাননি। আজাদ দাবি করেছিলেন, কিছু বলার নেই বলেই আসেননি তিনি। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য বলেছিলেন, “রোহন আমার ছেলের মতো। আমি চেয়েছিলাম ওর সঙ্গে খোলাখুলি একটা বিতর্কসভা করতে। কিন্তু ওরা কেউ এল না। দিল্লি ক্রিকেট সংস্থার সদস্যেরা তাঁদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই একটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে তা বোঝা যাবে। পরিবর্তন আসবেই।” কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। হারতে হয়েছে আজাদ শিবিরকে। দ্বিতীয় বারের জন্য দিল্লি ক্রিকেটের মসনদে বসেছেন রোহন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy