Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Asia Cup Final

পাঁচ বছর পর এশিয়া কাপ জিতবে ভারত, না কি পর পর দু’বার ট্রফি শ্রীলঙ্কার? জানা যাবে রবিবার

পাঁচ বছর পর আবার এশিয়া কাপ জয়ের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে ভারত। অন্য দিকে, শ্রীলঙ্কার সামনে টানা দু’বার ট্রফি জয়ের হাতছানি। রোহিত শর্মা না দাসুন শনাকা, রবিবার শেষ হাসি হাসবেন কে?

cricket

রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) এবং দাসুন শনাকা। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১০:২৬
Share: Save:

দীর্ঘ দিন ধরে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কোনও সাফল্য নেই। পাঁচ বছরের সেই খরা কাটাতে মরিয়া রোহিত শর্মার ভারত। শেষ বার ২০১৮ সালে এশিয়া কাপের ফাইনালে বাংলাদেশকে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল ভারত। মাঝের এই সময়ে বার বার কাপ এবং ঠোঁটের দূরত্ব রয়ে গিয়েছে। সেই খরা মেটানোর লক্ষ্যে ট্রফির দাবিদার হিসাবেই রবিবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নামবে ভারত।

এশিয়া কাপ জয় শুধু ট্রফি ক্যাবিনেটে নতুন সংযোজনই হবে না, বিশ্বকাপের আগে ভারতকে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। বাংলাদেশকে সেই ম্যাচে হারানোর পর থেকে অনেকগুলি নকআউট খেলেছে ভারত। ২০১৯-এর বিশ্বকাপে হারতে হয়েছে সেমিফাইনালে। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একই জিনিস। মাঝে ২০২১ এবং ২০২৩-এ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে হারতে হয়েছে। গত বার ভারত এশিয়া কাপের ফাইনালেই উঠতে পারেনি। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বিদায় নিতে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই।

ক্রিকেট নিয়ে গর্ব যে দেশের, টাকার বিচারে যে দেশ বিশ্বের বাকি দেশগুলিকে বলে বলে গোল দেবে, তাদের পক্ষে এ ধরনের ইতিহাস মোটেই গর্বের নয়। আইপিএল এবং দ্বিপাক্ষিক সিরিজ়‌ে ভারতের দাপট থাকলেও কেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে বার বার তারা ব্যর্থ হচ্ছে তা নিয়ে অবিরাম প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু এখনও উত্তর পাওয়া যায়নি।

শুধু দল নয়, এই ট্রফি সমান গুরুত্বপূর্ণ রাহুল দ্রাবিড়ের কাছেও। কোচ হিসাবে তাঁর মেয়াদ বাড়বে কি না, তা ঠিক হবে এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপে ভারতের পারফরম্যান্সের উপরেই। আশানুরূপ ফল না হলে নভেম্বরের শেষেই হয়তো তাঁকে পদ ছাড়তে হবে।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিয়মরক্ষার ম্যাচে একাধিক ক্রিকেটারকে বিশ্রাম দিয়েছিল ভারত। তাঁরা প্রায় প্রত্যেকেই ফিরতে চলেছেন ফাইনালে। তবে ম্যাচে নামার আগে দু’দলেই চোটের সমস্যা রয়েছে। অক্ষর পটেলকে নিয়ে চিন্তা রয়েছে। তাঁর জায়গায় ভারত থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ওয়াশিংটন সুন্দরকে। অন্য দিকে, শ্রীলঙ্কাও পাবে না মাহিশ থিকশানাকে।

বিরাট কোহলি এবং হার্দিক পাণ্ড্যের ফেরা ভারতকে আশা জোগাবে। তাঁদের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিডল অর্ডার মোটেই ভাল খেলতে পারেনি। মাঝের দিকে নেমে শ্রীলঙ্কার স্পিন বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ভাল খেলতে পারলে ম্যাচে ভারতের জেতার সম্ভাবনাও বাড়বে। আরও একটি আশার নাম শুভমন গিল। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান করে ফুটছেন তিনি। আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে। শ্রীলঙ্কা ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে বড় রান পাওয়া গেলে তার থেকে ভাল আর কিছু হয় না।

তবে বোলিং বিভাগে কিছুটা হলেও চিন্তা থাকছে। শুরুটা ভাল করেও বিপক্ষকে অলআউট করতে পারছে না ভারত। বাংলাদেশের চারটি উইকেট ৫৯ রানে ফেলে দিলেও পুরো ৫০ ওভার খেলে দেয় তারা। প্রথম দিকে ধাক্কা দিয়েও কেন মাঝের দিকে ছন্দ হারাচ্ছেন বোলারেরা, তা নিয়ে চিন্তা থাকতেই পারে।

যশপ্রীত বুমরাকে আগের ম্যাচে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল। খেলেছিলেন মহম্মদ শামি। ফাইনালে সম্ভবত বুমরাই ফিরবেন। সঙ্গী হবেন মহম্মদ সিরাজ়‌। শামিকে সম্ভবত বাইরে বসতেই হবে। বিশ্বকাপের আগে শামির মতো বোলারের পক্ষে তা মোটেই সুখকর অভিজ্ঞতা নয়। স্পিন বিভাগে ফিরবেন কুলদীপ যাদব। সঙ্গে অলরাউন্ডার হিসাবে থাকছেন রবীন্দ্র জাডেজাও।

ম্যাচের আগের দিন শুভমন গিল জানিয়েছেন, এশিয়া কাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে হালকা ভাবে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। বলেন, “শ্রীলঙ্কা জয়ের স্বাদ পেয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যে ভাবে জিতেছে, সেটা দুর্দান্ত। ফাইনালে ওদের হারাতে নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। তবে শ্রীলঙ্কার পিচ অনেকটা ভারতের মতো। সেটা আমাদের সাহায্য করবে। বিশ্বকাপের জন্যও তৈরি হচ্ছি আমরা।”

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হারের প্রভাব ফাইনালে পড়বে না বলে মনে করেন শুভমন। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১২১ রানের ইনিংস খেলা ওপেনার বলেন, “এশিয়া কাপের ফাইনাল জেতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জয়ের অভ্যেস তৈরি করতে হবে। ঠিক সময়ে ছন্দ পাওয়াটা জরুরি। জয়ের ধারা তৈরি করতে হবে। একটা-দুটো ম্যাচ হারলে চাপ বাড়ে। বিশ্বকাপের আগে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেবে এশিয়া কাপ জয়। তবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হার কোনও ক্ষতি করবে বলে মনে হয় না। ১০-১৫ রান বেশি দিয়ে ফেলেছিলাম আমরা। সেটা ছাড়া আমরা ভাল খেলেছি। এই ধরনের উইকেটে এমন হতেই পারে। এই হারের থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা এশিয়া কাপের ফাইনাল এবং বিশ্বকাপে খেলতে নামব।”

শ্রীলঙ্কা আবার টানা দু’বার এশিয়া কাপ জেতার স্বপ্নে বিভোর। ভারতের বিরুদ্ধে নামার আগে অধিনায়ক দাসুন শনাকা বলেছেন, “বিশ্বকাপের আগে ঠিক সময়ে আমরা ফর্মের তুঙ্গে রয়েছি। ছেলেরা দেশের হয়ে সেরাটা দেওয়ার জন্যে তৈরি। আমরা আন্ডারডগের তকমা নিয়ে খেলতে নেমেছিলাম। প্রত্যেকে নিজের সেরাটা দিয়ে দলকে ফাইনালে তুলেছে। পর পর দু’বার ফাইনালে ওঠা মুখের কথা নয়। সমর্থকদের থেকে অনেক বার্তা পেয়েছি। ওরা বলছে, তুমি কি এ বার হার্ট অ্যাটাক করিয়ে দেবে আমাদের?”

কলম্বোর পিচ থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম একাদশ ঠিক করবেন বলে জানিয়েছেন শনাকা। তাঁর কথায়, “আমরা পুরোপুরি তৈরি। ম্যাচের প্রথম একাদশ তৈরি হবে পিচ দেখে। গোটা প্রতিযোগিতাতেই পিচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। আমরাও আগের ম্যাচগুলোতে সে ভাবেই দল নির্বাচন করেছি। ভারতের বিরুদ্ধে বোলিং করতে গেলে শুরুতে উইকেট নিতে হবে। তাতে খেলাটা আমাদের জন্যে সুবিধা হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

Asia Cup 2023 BCCI Rohit Sharma Dasun Shanaka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy