আইপিএল ট্রফি। নতুন মরসুমের আগে অধিনায়ক নিয়ে পরিকল্পনা পাঁচ দলের। —ফাইল চিত্র।
আইপিএলের নিলামের আগে পাঁচটি দল তাদের অধিনায়ককে ছেড়ে দিয়েছিল। তারা হল, কলকাতা নাইট রাইডার্স, দিল্লি ক্যাপিটালস, লখনউ সুপার জায়ান্টস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও পঞ্জাব কিংস। ফলে আগামী মরসুমে এই পাঁচটি দল নতুন অধিনায়ক পাচ্ছে। বাকি পাঁচটি দল, অর্থাৎ, চেন্নাই সুপার কিংস, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, রাজস্থান রয়্যালস, গুজরাত টাইটান্স ও সানরাইজার্স হায়জরাবাদ তাদের অধিনায়ককে ধরে রয়েছে। ফলে তাদের অধিনায়ক কারা থাকবে তা প্রায় নিশ্চিত। আগামী মরসুমে আইপিএলের ১০ দলের অধিনায়ক কারা, জানাল আনন্দবাজার অনলাইন।
কলকাতা নাইট রাইডার্স
এ বারের নিলামের আগে শ্রেয়স আয়ারকে ছেড়ে দিয়েছিল কেকেআর। গত বার দলকে চ্যাম্পিয়ন করা অধিনায়ককে ছেড়ে কলকাতা বুঝিয়ে দিয়েছিল যে, এ বার নতুন কাউকে দায়িত্ব দিতে চায় তারা। নিলামে বেঙ্কটেশ আয়ারকে ২৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় কিনেছে কেকেআর। তার থেকে কম টাকায় লোকেশ রাহুলের মতো অধিনায়ককে তারা কিনতে পারত। কিন্তু সেটা তারা করেনি। আইপিএলে বেঙ্কটেশ কেকেআরের হয়েই প্রথম থেকে খেলছেন। দু’বছর আগে শ্রেয়স চোট পাওয়ায় যখন নীতীশ রানাকে অধিনায়ক করা হয়েছিল তখন বেঙ্কটেশ ছিলেন সহ-অধিনায়ক। এ বার নীতীশও নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে মধ্যপ্রদেশের নেতৃত্ব দিয়েছেন বেঙ্কটেশ। তাই দলে সুনীল নারাইন, কুইন্টন ডি’কক, অজিঙ্ক রাহানে, রভম্যান পাওয়েলের মতো নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা থাকা ক্রিকেটারেরা থাকলেও বেঙ্কটেশকে নতুন অধিনায়ক করে চমক দিতে পারে কলকাতা।
দিল্লি ক্যাপিটালস
দিল্লিও এ বার ঋষভ পন্থকে ছেড়ে দিয়েছে। গত কয়েক বছর পন্থই দিল্লির অধিনায়ক ছিলেন। পন্থের আগে দিল্লির অধিনায়ক ছিলেন শ্রেয়স। তাঁকেও নিলামে কিনতে পারেনি দিল্লি। তবে রাহুলকে ১৪ কোটি টাকায় কিনেছে তারা। রাহুল এর আগে আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের অধিনায়ক ছিলেন। এ বার দিল্লিকে নেতৃত্ব দিতে পারেন তিনি। বেঙ্গালুরুর প্রাক্তন অধিনায়ক ফাফ ডু’প্লেসিকেও কিনেছে দিল্লি। তবে ডু’প্লেসির তুলনায় নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে রাহুল।
লখনউ সুপার জায়ান্টস
রাহুলের প্রাক্তন দল লখনউও এ বার নতুন অধিনায়ক পাবে। গত বার আইপিএল চলাকালীনই রাহুলকে মাঠেই ধমক দিয়েছিলেন দলের মালিক সঞ্জীব গোয়েন্কা। ফলে এ বার যে রাহুল থাকবেন না তা নিশ্চিত ছিল। রাহুলকে ছেড়ে দিলেও নিকোলাস পুরানকে ধরে রেখেছিল লখনউ। পুরান ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের জাতীয় দল ও অন্য লিগে নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিলামের টেবিলেও চমক দেয় লখনউ। ২৭ কোটির রেকর্ড দামে পন্থকে কেনে তারা। এর থেকেই পরিষ্কার, অধিনায়ক হিসাবে তাঁর কথাও ভাবছে তারা। লখনউ এখনও পরিষ্কার করে না বললেও পন্থকে কিনতে তারা যা টাকা খরচ করেছে তা থেকে পরিষ্কার, আগামী মরসুমে পন্থ হবেন লখনউয়ের অধিনায়ক। অর্থাৎ, দিল্লি ও লখনউয়ের অধিনায়ক অদলবদল হবে।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু
বিরাট কোহলি নেতৃত্ব ছাড়ার পর থেকে বেঙ্গালুরুর অধিনায়ক ছিলেন ফাফ ডুপ্লেসি। তাঁকে এ বার রাখেনি দল। নিলামে তারা যাঁদের কিনেছে তাঁদের মধ্যে অধিনাকত্বের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন ক্রিকেটার খুব কম। ভুবনেশ্বর কুমার বা ক্রুণাল পাণ্ড্য থাকলেও তাঁদের অধিনায়ক করবে না বেঙ্গালুরু। ফলে আবার কোহলিকেই নেতৃত্ব দিতে দেখা যেতে পারে। যা খবর, তাতে কোহলিও আবার অধিনায়ক হতে রাজি।
পঞ্জাব কিংস
পঞ্জাব এ বারও পুরো দল বদলে ফেলেছে। গত বার শিখর ধাওয়ান তাদের অধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু প্রথম কয়েকটি ম্যাচের পর চোট পাওয়ায় বাকি মরসুমে স্যাম কারেন অধিনায়কত্ব করেছিলেন। এ বার তাঁরা কেউ নেই। এ বারের নিলামে ২৬ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকায় শ্রেয়সকে কিনেছে পঞ্জাব। গত বার কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন তিনি। ফলে তাঁকেই যে প্রীতি জ়িন্টার দল অধিনায়ক করবে তা নিশ্চিত।
চেন্নাই সুপার কিংস
চেন্নাইয়ের অবশ্য অধিনায়ক বদলের কোনও প্রয়োজন নেই। গত বারই নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। নতুন অধিনায়ক হয়েছিলেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। তাঁকে এ বার ধরে রেখেছে চেন্নাই। গত বারই ধোনি ও চেন্নাইয়ের কর্তারা জানিয়েছিলেন, গায়কোয়াড়ের উপর ভরসা রাখছেন তাঁরা। চেন্নাই এমন একটা দল যারা দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা করে। গায়কোয়াড় তরুণ ক্রিকেটার। ভারতীয় দলেরও অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ফলে এ বারও তিনিই চেন্নাইয়ের অধিনায়ক থাকবেন।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স
অধিনায়ক বদল নিয়ে গত বার সবচেয়ে বড় চমক দিয়েছিল মুম্বই। ভারতীয় দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে সরিয়ে দিয়েছিল তারা। বদলে গুজরাত থেকে কিনে হার্দিক পাণ্ড্যকে অধিনায়ক করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত মুম্বইয়ের সমর্থকদের একটা অংশ মানতে পারেনি। দলের মধ্যে ভাঙন ধরেছিল। তার ফলে গত বার মুখ থুবড়ে পড়েছিল মুম্বই। এ বারও হার্দিককে রেখেছে তারা। রয়েছেন রোহিত। পাশাপাশি ভারতের এখনকার টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবও রয়েছেন দলে। ফলে অধিনায়ক কে হবেন তা নিয়ে নানারকম জল্পনা চলছে। তবে যা খবর তাতে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে পাঁচ বারের আইপিএলজয়ী দল। ভারতের প্রাক্তন ও বর্তমান অধিনায়ক থাকলেও হার্দিকের হাতেই থাকবে মুম্বইয়ের নেতৃত্ব।
রাজস্থান রয়্যালস
অধিনায়কত্ব নিয়ে রাজস্থানেও কোনও সমস্যা নেই। গত কয়েক বছর ধরে রাজস্থানের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন। দল ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলেছে। প্লে-অফে উঠেছে। এখন ভারতের টি-টোয়েন্টি দলেও নিয়মিত খেলছেন সঞ্জু। তাঁকে ধরে রেখে রাজস্থান স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে সঞ্জুই আগামী মরসুমের অধিনায়ক।
গুজরাত টাইটান্স
হার্দিক পাণ্ড্য দল ছেড়়ে মুম্বইয়ে যাওয়ায় গত বারই নেতৃত্বে বদল করতে হয়েছিল গুজরাতকে। তরুণ শুভমন গিলকে অধিনায়ক করেছিল তারা। হার্দিক যখন অধিনায়ক ছিলেন তখন তাঁর অবর্তমানে কয়েকটি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন রশিদ খান। তিনি আফগানিস্তানের অধিনায়ক। রশিদ এ বারও দলে রয়েছেন। এ বার নিলামে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক জস বাটলারকে নিয়েছে গুজরাত। কিন্তু তার পরেও শুভমনকে সরানোর সম্ভাবনা কম। আগামী মরসুমেও তিনিই গুজরাতকে নেতৃত্ব দেবেন।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ
এডেন মার্করামকে সরিয়ে গত বারই প্যাট কামিন্সকে অধিনায়ক করেছিল হায়দরাবাদ। তাঁর নেতৃত্বে দল ফাইনালও খেলেছিল। এ বারও কামিন্স রয়েছেন। তিনি ছাড়া এমন কোনও বড় নাম নেই যাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ফলে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কই যে আগামী মরসুমে হায়দরাবাদের অধিনায়ক থাকবেন তা নিশ্চিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy