এক দিকে ভারতের সফলতম অধিনায়ক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। দেশের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, এক দিনের বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলেন। পাঁচ বার আইপিএল জিতেছিলেন। এখন যদিও তিনি চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক নন। উইকেটের পিছনে দস্তানা হাতে থাকবেন।
অন্য দিকে, এই মুহূর্তে ভারতকে বিভিন্ন ফরম্যাটে নেতৃত্ব দেওয়া সব অধিনায়ক। ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে নেতৃত্ব দেবেন। সদ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী রোহিত শর্মা সেই দলের হয়ে ওপেন করবেন। দলে থাকলেও খেলতে পারবেন না মুম্বইয়ের অধিনায়ক হার্দিক পাণ্ড্য। তিনি একটি ম্যাচের জন্য নির্বাসিত। খেলতে পারবেন না জসপ্রীত বুমরাহও। তাঁর চোট রয়েছে। টেস্টে ভারতের সহ-অধিনায়ক তিনি। রবিবার মুখোমুখি চেন্নাই এবং মুম্বই। আইপিএলের ইতিহাসে এই দু’টি দল সবচেয়ে বেশি বার ট্রফি জিতেছে। সফলতম দুই দলের লড়াইয়ের অপেক্ষায় আইপিএল।
আইপিএলের একটি বিজ্ঞাপনে ধোনি এবং সঞ্জু স্যামসনকে দেখা যায়। যেখানে ৪২ বছরের ধোনি বলেন ১৩ বছরের বৈভব সূর্যবংশীর কথা। তার জন্মের আগে ধোনি আইপিএল জিতেছিলেন। এখনও খেলছেন তিনি। যদিও প্রশ্ন উঠে গিয়েছে, এটাই কি ধোনির শেষ আইপিএল?
গত কয়েকটি বছর ধরে বার বার শোনা যায় এই প্রশ্ন। যদিও পরের বার আবার তাঁকে খেলতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু এই বছর ধোনি চেন্নাই শিবিরে পৌঁছোনোর দিন তাঁর টিশার্টের লেখা ঘিরে তৈরি হয়েছিল নতুন জল্পনা। কালো টি-শার্টের উপর সাদা রং দিয়ে সাঙ্কেতিক ভাষায় (মোর্স কোড, টেলিগ্রামে ব্যবহার করা হত) লেখা ছিল। যার অর্থ ‘শেষ বারের মতো’। তা হলে কি এ বার আইপিএল খেলেই অবসর নেবেন ধোনি? আবার সেই প্রশ্ন। উত্তর এখনও অজানা।
এই রবিবার থেকেই কি শেষের শুরু? ধোনি হয়তো তাঁর শেষ আইপিএল অভিযান শুরু করছেন। যাঁর জন্য আইপিএল নিয়ম বদলে যায়। পরিবর্তিত নিয়মের কারণেই ধোনি এ বারের আইপিএলে ‘আনক্যাপড’ ক্রিকেটার। তাঁর প্রভাব ভারতীয় ক্রিকেটে অস্বীকার করা সম্ভব নয়। চেন্নাই দলের অধিনায়ক না হলেও তাঁকে অভিভাবক বলা চলে। নেতা রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের মাথার উপর সব সময় থাকবেন। উইকেটের পিছন থেকে লক্ষ্য রাখবেন তাঁর অনুজ কোনও ভুল করছেন কি না। করলে দাদার মতোই এগিয়ে যাবেন ভুল ধরিয়ে দিতে। তাই উইকেটরক্ষক ধোনি অধিনায়ক না হলেও তাঁকে অস্বীকার করতে পারবে না মুম্বই। চেন্নাই দলের এক্স ফ্যাক্টর যে ধোনিই।
চেন্নাই দলের মুখ একমাত্র ধোনিই। মুম্বই সে দিক দিয়ে বিপরীত মেরুতে। সেই দলে মুখের ভিড়। রোহিত, বুমরাহ, হার্দিক, সূর্যকুমার, সকলে একই দলে। সেই সঙ্গে তরুণ তিলক বর্মা রয়েছেন। যিনি ইতিমধ্যেই ভারতের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে দু’টি শতরান করে ফেলেছেন। রবিবার হার্দিক এবং বুমরাহ না থাকায় একটু শক্তিক্ষয় হয়েছে মুম্বইয়ের। তবে বুমরাহ না থাকলেও ট্রেন্ট বোল্ট থাকবেন। হার্দিক না থাকলেও তাঁর অভাব ঢাকার তাগিদ থাকবে তরুণ নমন ধীর এবং রাজ অঙ্গদ বাওয়ার।
রবিবারের ম্যাচে নজর থাকবে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উপরেও। সদ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। এই আইপিএল তাঁর জবাব দেওয়ার মঞ্চ। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্টে প্রথম একাদশে সুযোগ না পাওয়ার কারণে তিনি সরে গিয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। ফলে তাঁর মধ্যে এখনও যে ক্রিকেট বেঁচে রয়েছে সেটা প্রমাণ করার জন্য আইপিএলই সেরা মঞ্চ। অশ্বিন সেটা জানেন। সঙ্গী হিসাবে তিনি পাবেন রবীন্দ্র জাডেজাকে। ধোনির ভারতীয় দলে অশ্বিন-জাডেজা জুটি ছিল প্রতিপক্ষের ত্রাস। এ বার চেন্নাই দলেও যখন তাঁরা বল করবেন, তখন উইকেটের পিছনে থাকবেন সেই ধোনি।