শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। —ফাইল চিত্র।
আবার আইপিএল-এর দল কিনলেন কলকাতার শিল্পপতি সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। কলকাতার এই বাসিন্দার সংস্থা আরপিএসজি গ্রুপ সোমবার ৭,০৯০ কোটি টাকা দাম দিয়ে কিনে নিল আইপিএল-এর একটি দল। লখনউ থেকে খেলবে তারা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের তরফে এক বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানানো হয়েছে।
খেলাধুলোর প্রতি বরাবরই আকর্ষণ রয়েছে সঞ্জীবের। আইপিএল শুরু হওয়ার সময়ই কলকাতার দল (কেকেআর) কিনতে চেয়েছিলেন তিনি। দরপত্রও তুলেছিলেন। সূত্রের খবর, সে সময় বোর্ডের অন্দরমহল থেকেও তাঁকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল কলকাতার দলের মালিকানার বিষয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলকাতার মালিকানা পায় শাহরুখ খানের সংস্থা ‘রেড চিলিজ এন্টারটৈইনমেন্ট’।
তবে হাল ছাড়েননি সঞ্জীব। মাঝে একটা সময়ে কেকেআর পরপর কিছু মরসুম খারাপ খেলতে থাকায় গুজব রটেছিল, শাহরুখ দল বিক্রি করে দিতে পারেন। তখনও আগ্রহী ছিলেন সঞ্জীব। শাখরুখকে বলে রেখেছিলেন, কোনও ভাবে শাহরুখ কেকেআর বিক্রি করতে চাইলে তিনি কিনতে আগ্রহী। তবে শাহরুখ দল বিক্রি করেননি।
ম্যাচ গড়াপেটা কাণ্ডে ২০১৫ সালে দু’বছরের জন্য নির্বাসিত হয়ে গিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস এবং রাজস্থান রয়্যালস। তাদের জায়গায় ২০১৭ এবং ২০১৮ — এই দুই বছরে দু’টি নতুন দল নেওয়া হয়। তার মধ্যে পুণের দলটি কেনেন সঞ্জীব। ‘রিভার্স বিডিং’ প্রক্রিয়ায় তারা দু’বছরে ১০ কোটি টাকা করে দিয়েছিল বোর্ডকে।
নিলামে সঞ্জীবের সেই দলই নেয় মহেন্দ্র সিংহ ধোনিকে। তিনিই ছিলেন অধিনায়ক। প্রথম মরসুম তাদের প্রত্যাশা মাফিক যায়নি। দ্বিতীয় মরসুমের মাঝামাঝি ‘ঐতিহাসিক এবং সাহসী সিদ্ধান্ত’ নেন সঞ্জীব। দল খারাপ খেলতে থাকায় নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেন ধোনিকে। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের জীবনে নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার ওই একটিই ঘটনা ঘটেছে। দেশজুড়ে সে সময় সমালোচনা হলেও পাত্তা দেননি সঞ্জীব। খোলাখুলি জানিয়েছিলেন ধোনিকে সরিয়ে স্টিভ স্মিথকে অধিনায়ক করার কথা।
এর পরে ফুটবলেও আগ্রহ দেখান সঞ্জীব। তাঁর মালিকানাধীন দল এটিকে মিশে যায় মোহনবাগানের সঙ্গে। মালিক হিসেবে বাগান কর্তাদের সঙ্গে সঞ্জীবের বোঝাপড়া এবং সম্পর্কও অত্যন্ত ভাল। ইস্টবেঙ্গল কর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন বিনিয়োগকারীর ঝামেলা থাকলেও মোহনবাগান কর্তাদের সঙ্গে সঞ্জীবের সম্পর্ক বরাবর মসৃণ থেকেছে। বস্তুত, সঞ্জীবের ফুটবলবুদ্ধির উপরেও আস্থা রাখেন সবুজ-মেরুন কর্তারা।
ঘটনাচক্রে, সঞ্জীবের সংস্থা সিইএসসি কলকাতা এবং বৃহত্তর কলকাতায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। ফলে বাঙালি জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে তাদের নাম। সেই ভাবনা থেকেই বাঙালির আবেগ এবং জাতীয় ক্লাব মোহনবাগানের সঙ্গে মিশে যাওয়ার পরিকল্পনা। অনেকে এ-ও বলেন যে, ইস্টবেঙ্গলের কাছেই নাকি আগে প্রস্তাব গিয়েছিল। তবে বিভিন্ন কারণে তা বাস্তবায়িত হয়নি। কলকাতার সঙ্গে ওতপ্রোত সম্পর্কের কারণেই কেকেআর কিনতে আগ্রহী হয়েছিলেন সঞ্জীব। যদিও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
তবে পুণের পর দ্বিতীয় বার আইপিএল-এর দল কেনার সুযোগ আসায় সেটা কোনও ভাবেই হাতছাড়া করতে চাননি সঞ্জীব। এমন অর্থের বিড দিয়েছেন, যার ধারেকাছে নেই কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী।
আইপিএল-এর অপর নতুন দলের মালিক সিভিসি ক্যাপিটালের বিডিংয়ের মূল্য ৫,৬২৫ কোটি টাকা। সঞ্জীবের সঙ্গে ব্যবধান ১,৪৬৫ কোটি টাকার। এতেই স্পষ্ট, আইপিএল-এর দল কেনার জন্য কতটা মরিয়া ছিলেন কলকাতার এই শিল্পপতি।
নতুন দল কেনার পর এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে সঞ্জীব বলেছেন, “আইপিএল-এ আবার ফিরতে পেরে ভাল লাগছে। তবে এটা প্রাথমিক ধাপ। আমাদের লক্ষ্য দারুণ দল তৈরি করে ভাল খেলা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy