চেন্নাইয়ে থাকার সময় ধোনির সঙ্গে জগদীশন। ছবি: টুইটার।
আইপিএলের নিলামে তাঁকে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি নিতে পারে, এই আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন নারায়ণ জগদীশন। ২০১৮ থেকে দলে থাকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটারকে এ বার ছেড়ে দিয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস। তাঁকে পাওয়ার জন্য নিলামে একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লড়াই করবে, ভাবেননি জগদীশন।
গত চার বছরে চেন্নাইয়ের হয়ে মাত্র সাতটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তামিলনাড়ুর ক্রিকেটার। তাঁকেই ৯০ লাখ টাকা দিয়ে দলে নিয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্স। জগদীশনকে পেতে শুক্রবারের নিলামে চেষ্টা করেছিল তাঁর পুরনো ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি চেন্নাইও। ২০ ওভারের ক্রিকেটে ওপেনার জগদীশনের স্ট্রাইক রেট ১১৮.৬১। আইপিএলের মানে যা একদমই আকর্ষণীয় নয়। তবু তাঁকে নিয়ে নিলামে যে লড়াই হয়েছে, তা দেখে বিস্মিত তিনি।
ছোট থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে ভালবাসেন জগদীশন। সব সময় চাইতেন বেশি রান করতে। কোনও প্রতিযোগিতা খেললে তাঁর লক্ষ্য থাকত, সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের পুরস্কার। জগদীশন জানিয়েছেন, ‘‘ছোট থেকেই ক্রিকেট দারুণ উপভোগ করি। যত বড় হয়েছি প্রতিযোগিতাও তত কঠিন হয়েছে। বেশি রান করার লক্ষ্য আমাকে চাপে ফেলে দিত। তাতে ফল আরও খারাপ হত। বার বার ব্যর্থ হওয়ার পর ঠিক করেছিলাম, শুধু মনের আনন্দে খেলব। নিজের জন্য কোনও লক্ষ্য রাখব না। তাতে যা হওয়ার হবে। তাতে উপকার পেয়েছি। বুঝেছি প্রত্যাশা, স্বপ্ন থাকলেও নিজেকে প্রমাণ করার চেষ্টা সব সময় কাজে আসে না। তাই সেই চেষ্টা আর করি না।’’
গত চার বছর অধিকাংশ সময়ই তাঁকে কাটাতে হয়েছে চেন্নাইয়ের ডাগ আউটে। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দলের হয়ে খেলার সুযোগ প্রায় ছিলই না। জগদীশনের আশা কলকাতার হয়ে এ বার কিছু ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন। বলেছেন, ‘‘দিনের পর দিন ডাগ আউটে বসে থেকেছি। ওই দিনগুলো খুব কঠিন ছিল।’’ কী মনে হত সে সময়? জগদীশন বলেছেন, ‘‘তখন আত্মবিশ্বাস কমে গিয়েছিল। সত্যি বলতে মাঝে মাঝে মনে হত ব্যাগ গুছিয়ে বাড়ি চলে যাই। তাও একটাই লক্ষ্য নিয়ে পরিশ্রম করতাম। যদি খেলার সুযোগ পাই। দিনের পর দিন বসে থাকতে হলে নিজেকে মানসিক ভাবে উজ্জীবিত করা কঠিন হয়ে যায়। ভাল কিছু আশা করা যায় না। পরিশ্রমই একমাত্র কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে।’’
শেষ দু’টি আইপিএলে খেলার সুযোগ পাননি জগদীশন। দু’টি বিশ্বরেকর্ডের মালিক বলেছেন, ‘‘গত দু’বছর নিজেকে বুঝিয়েছি, খেলার সুযোগ না পেলেও ঠিক আছে। তবু নেটে এবং জিমে পরিশ্রম করতে হবে। নেটে যতটা সম্ভব সময় কাটাতে হবে যাতে অন্যরা একটু বিশ্রাম নিতে পারে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘গত বছর বুঝে গিয়েছিলাম কোনও ম্যাচেই খেলার সুযোগ পাব না। দল যদি ভীষণ খারাপ খেলে, তা হলে হয়তো সুযোগ পেতে পারি। এ রকম পরিস্থিতি খুব কঠিন। যে খেলোয়াড় এগোতে চায় তার পক্ষে এ ভাবে কি বসে থাকা সম্ভব? আমাকে যে ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছিল, সেটা অনেকটা দূরে ছুড়ে ফেলার মতো। যদিও সেটাই আমাকে নতুন করে উজ্জীবিত করেছিল।’’
বাদ যাওয়ার পর প্রথম প্রথম খারাপ লাগলেও পরে মানিয়ে নিয়েছিলেন জগদীশন। ধোনির প্রাক্তন সতীর্থ বলেছেন, ‘‘এক জন ক্রিকেটার কখনও আইপিএলের বাইরে থাকতে চায় না। কাউকে বার করে দেওয়া হলে মেনে নেওয়া কঠিন। তবু কিছু করার থাকে না। স্বাভাবিক হতে আমার একটা দিন লেগেছিল। পরে বাস্তবকে মেনে নিয়েছি। নিজেকে আরও উন্নত করার জন্য তিন মাস সময় পাব ভেবে শান্তি খুঁজে নিয়েছিলাম। এই ভাবনাটা আমাকে চাপমুক্ত করেছিল।’’
জানেন না এ বারও কলকাতার হয়ে খেলার সুযোগ কতটা পাবেন। বিজয় হজারে ট্রফিতে অনবদ্য পারফরম্যান্সের পর আশা কিছুটা বাড়লেও নিশ্চিত নন। তা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করতে চান না চলতি মরসুমে দুরন্ত ছন্দে থাকা জগদীশন। খেলার সুযোগ পেলে নিজেকে চাপমুক্ত ভাবে মেলে ধরতে চান ২২ গজে। যেমন ঘরোয়া ক্রিকেটে তামিলনাড়ুর হয়ে করছেন ২৬ বছরের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy