নেপালের বিরুদ্ধে এ ভাবেই বার বার মেজাজ হারালেন রোহিত শর্মা। ছবি: এএফপি।
শুরুটা হয়েছিল ক্যাচ ফস্কানো দিয়ে। নেপালের ইনিংসের প্রথম পাঁচ ওভারেই তিনটি সহজ ক্যাচ ছাড়েন ভারতীয় ফিল্ডারেরা। তার পর গোটা ম্যাচ জুড়ে দেখা গেল ভারতীয় ক্রিকেটারদের খারাপ ফিল্ডিং। তার সুযোগ নিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নবাগত নেপাল। ম্যাচ চলাকালীন বার বার মেজাজ হারাতে দেখা গেল ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে। দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপের আগে চিন্তা বাড়াল ভারতের ফিল্ডিং।
মহম্মদ শামির প্রথম ওভারের ষষ্ঠ বলে ক্যাচ ফেলেন শ্রেয়স আয়ার। অফস্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়েছিলেন কুশল ভুর্তেল। প্রথম স্লিপে ক্যাচ গিয়েছিল। শ্রেয়স বলের গতিপথই বুঝতে পারেননি। ডান হাত বাড়ালেও বল তালুবন্দি করতে পারেননি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেও একই দৃশ্য। এ বার ক্যাচ ফেলে দেন খোদ বিরাট কোহলি, যিনি দলের অন্যতম সেরা ফিল্ডার হিসাবে পরিচিত। মহম্মদ সিরাজ়ের বলে কভারের দিকে শট খেলেছিলেন আসিফ শেখ। কোহলি ১০০ বারে ৯৯ বারই এই ক্যাচ নেবেন। কিন্তু এই ম্যাচে বল তাঁর হাতে জমা হয়েও ফস্কে বেরিয়ে গেল। তৃতীয় ক্যাচটি ফেললেন ঈশান কিশন। এ বারও শামির বলে। পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে লেগসাইডের সামান্য বাইরে বল করেছিলেন শামি। ভুর্তেলের ব্যাটে লেগে বল গিয়েছিল উইকেটকিপারের দিকে। হালকা মনোভাব নিয়ে ক্যাচ ধরতে গিয়েছিলেন কিশন। বল তাঁর বগলের তলা দিয়ে গলে চার হয়ে যায়।
নেপালের বিরুদ্ধে গোটা ইনিংস ধরে খারাপ ফিল্ডিং করলেন শুধু এক জন বা দু’জন নন, ভারতীয় দলের প্রায় সবাই। একমাত্র রবীন্দ্র জাডেজা ছাড়া বাকি সবার হাত গলে রান হল। বিরাট, শ্রেয়স, হার্দিক পাণ্ড্যেরা ভাল ফিল্ডারের তালিকায় পড়েন। তাঁরাও যেন খারাপ ফিল্ডিং করার প্রতিযোগিতা করছিলেন। কে কত রান দিতে পারেন। ৩০ গজ বৃত্তের ভিতরে বিরাট, হার্দিকেরা বল ছাড়লেন। আবার বাউন্ডারিতে বল গলাতে দেখা গেল শার্দূল ঠাকুর, কুলদীপ যাদবদের।
কয়েকটি ক্ষেত্রে তো ভারতের ফিল্ডিং দেখে হাসতে দেখা যায় নেপালের ব্যাটারদেরও। এক বার শার্দূলের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল বাউন্ডারিতে চলে গেল। এক বার পিছলে পড়ে চার রান দিলেন কুলদীপ। একটি ক্ষেত্রে ভারতীয় ফিল্ডারদের দোষে ৩ রান নিল নেপাল। প্রথম মিড অফে বল ধরতে ভুল করেন হার্দিক। তিনি এক বারে বল ধরতে পারলে রান আউট হতে পারতেন নেপালের ব্যাটার। যত ক্ষণে হার্দিক বল ধরে উইকেটে দিকে ছোড়েন তত ক্ষণে ক্রিজে পৌঁছে গিয়েছেন ব্যাটার। বল স্টাম্পে লেগে অন্য দিকে চলে যায়। ফলে দ্বিতীয় রান নিতে যান দুই ব্যাটার। শর্ট থার্ডম্যান থেকে এ বার নন স্ট্রাইকিং এন্ডে বল ছোড়েন কুলদীপ। সেই বল উইকেটে না লেগে মহম্মদ সিরাজের কাছে যায়। তিনিও এক বারে বল ধরতে পারেননি। ফলে আরও এক রান নেন দুই ব্যাটার।
একটি ক্ষেত্রে কভারে বল ধরে উইকেটরক্ষক ঈশান কিশনের দিকে বল ছোড়েন শ্রেয়স। কিন্তু ঈশান সেই বল ধরতেই পারেননি। দস্তানার বেশ খানিকটা দূর দিয়ে বল চলে যায়। ফলে আরও একটি অতিরিক্ত রান হয়। এ ভাবে ফিল্ডিংয়ের দোষে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ রান অতিরিক্ত দেয় ভারত। যত বার ফিল্ডারেরা ভুল করছিলেন তত বার মেজাজ হারাচ্ছিলেন অধিনায়ক রোহিত। তাঁর চোখমুখ দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল কতটা বিরক্ত তিনি। নেপালের বিরুদ্ধে হয়তো এই ফিল্ডিংয়ের খেসারত দিতে হবে না ভারতকে। কিন্তু বড় দলের বিরুদ্ধে এ রকম ভুল করলে ম্যাচ হারতে হতে পারে তাদের।
এশিয়া কাপের পরেই দেশের মাটিতে এক দিনের বিশ্বকাপ। রোহিত জানিয়েছিলেন, এশিয়া কাপকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসাবে দেখছেন তাঁরা। কিন্তু যে ভাবে ভারতীয় ফিল্ডারেরা দলকে ভোগালেন তা চিন্তা বাড়াচ্ছে রোহিতের। প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে দলের ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপের উপরেও। তিনি দলের সঙ্গে কী করছেন? তাঁর কাজ ফিল্ডারদের আরও দক্ষ করে তোলা। কিন্তু মাঠে তো সেই ছবি দেখা যাচ্ছে না। তা হলে কি নেপালের বিরুদ্ধে ম্যাচকে খুব গা-ছাড়া ভাবে নিয়েছে ভারত? সেই কারণেই কি এত ভুল? না কি কোথাও সমস্যা হচ্ছে ফিল্ডারদের। বিশ্বকাপের আগে এই রোগ সারিয়ে ফেলতে না পারলে কিন্তু বিশ্বকাপে ভুগতে হতে পারে ভারতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy