Advertisement
১৮ অক্টোবর ২০২৪
Jasprit Bumrah on Rohit-Hardik Controversy

রোহিতের বদলে হার্দিক অধিনায়ক হওয়ায় মুম্বইয়ের সাজঘরে কি ফাটল ধরেছিল? জবাব দিলেন বুমরা

আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হওয়ার পরে একের পর এক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যকে। সেই সময় সাজঘর কি দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল? জবাব দিলেন যশপ্রীত বুমরা।

cricket

যশপ্রীত বুমরা। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪ ১০:৫৫
Share: Save:

কাছ থেকে পুরোটা দেখেছেন যশপ্রীত বুমরা। কাছ থেকে দেখেছেন সতীর্থের সমস্যা। আইপিএলে রোহিত শর্মার জায়গায় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক হওয়ার পরে একের পর এক সমস্যায় পড়তে হয়েছিল হার্দিক পাণ্ড্যকে। সেই সময়ে কি মুম্বইয়ের সাজঘর দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল? এই প্রশ্নের জবাব দিলেন বুমরা।

একটি সাক্ষাৎকারে রোহিত-হার্দিক বিতর্কে মুখ খুলেছেন বুমরা। শোনা গিয়েছিল, হার্দিক অধিনায়ক হওয়ার পরে মুম্বইয়ের সাজঘর দু’ভাগে বিভক্ত। এক দল প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিতের পক্ষে। এক দল হার্দিকের। বুমরা অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে তেমন কোনও সমস্যা হয়নি। পুরো দল হার্দিকের পাশেই ছিল। ভারতীয় পেসার বলেন, “গোটা দুনিয়ায় সকলে যা ভাবে ভাবুক, আমরা জানি আসল ঘটনা কী। গোটা দল হার্দিকের পাশে ছিল। সমর্থকেরা যা করছিল, তাকে আমরা কখনওই প্রশ্রয় দিইনি। আমরা হার্দিকের সঙ্গে কথা বলতাম। ওর কিছু প্রয়োজন কি না জিজ্ঞাসা করতাম। একটা পরিবারের মতো ওর পাশে থেকেছি। কিন্তু তার পরেও অনেক কথা হয়েছে। আসলে কিছু কিছু বিষয় আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকে না। সেটাই হয়েছে।”

সমর্থকদেরও দোষ দেননি বুমরা। তাঁর মতে, দলের প্রতি আবেগ ও ভালবাসার কারণেই এমনটা হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা এমন একটা দেশে বাস করি যেখানে আবেগের বড় জায়গা আছে। এখানে সকলেই আবেগ নিয়ে চলে। আমরা বুঝতে পারি, কোনও সিদ্ধান্ত খারাপ লাগলে সমর্থকেরা রেগে যায়। সেটা আবেগের জন্যই। আমরাও আবেগপ্রবণ। তবে ক্রিকেটার হিসাবে আমাদের সেই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। সেটাই হার্দিক করেছিল।”

বুমরার মতে, যে ভাবে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গ্যালারি থেকে লাগাতার হার্দিককে হেনস্থা করা হয়েছে, তা সামলানো সহজ ছিল না। হার্দিক তা সামলে ভাল খেলার চেষ্টা করেছেন। বুমরা বলেন, “এটা সহজ নয়। আপনি মাঠে নেমে শুনছেন গ্যালারি থেকে আপনার বিরুদ্ধে চিৎকার হচ্ছে। তার মাঝে খেলা কঠিন। কারণ, আপনি তো আর কান বন্ধ করে থাকতে পারবেন না। হার্দিক পেরেছিল। হাসিমুখে গোটা মরসুম খেলেছে। এক বারও রাগ দেখায়নি। হতাশ হয়নি। ও যে ভাবে এই পরিস্থিতি সামলেছে তা এক কথায় অসাধারণ।”

ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে দেশে ফেরার পরে সেই ওয়াংখেড়েতেই হার্দিকের নামে জয়ধ্বনি উঠেছে। সেই উদাহরণ টেনে এনে বুমরা বলেন, “সাফল্যের কোনও বিকল্প নেই। খেলায় প্রশংসার পাশাপাশি সমালোচনাও শুনতে হবে। বিশ্বের সেরা ফুটবলারদেরও সমালোচনা শুনতে হয়। সময় খারাপ থাকলে সব কিছু খারাপ হয়। তাতে হতাশ না হয়ে অপেক্ষা করতে হয়। সময় বদলায়। হার্দিক সেটা দেখিয়েছে।”

হার্দিকের পাশাপাশি নিজের প্রথম অধিনায়ক রোহিতের কথাও বলেছেন বুমরা। মুম্বইয়ে প্রথম যখন খেলতে যান, তখন ফিল্ডিং সাজাতে পারতেন না। রোহিতের উপর ভরসা করতেন। রোহিত সেই সময় তাঁকে খুব সাহায্য করেছেন বলে জানিয়েছেন বুমরা। তিনি বলেন, “প্রথম যখন মুম্বইয়ের হয়ে আইপিএল শুরু করি তখন রোহিত ভাইকে ফিল্ডিং সাজিয়ে দিতে বলতাম। আমি নিজের পরিকল্পনার কথা বলতাম। সেই অনুযায়ী রোহিত ভাই ফিল্ডিং সাজাত। কিন্তু ধীরে ধীরে বুঝতে পারি, নিজের ফিল্ডিং নিজেকেই সাজাতে হবে। অন্যের উপর নির্ভর করলে হবে না। সেই সময় রোহিত ভাই খুব সাহায্য করেছে।”

দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ে বাবাকে হারিয়েছিলেন বুমরা। তখন থেকে দিদির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডানহাতি পেসার। তিনি বলেন, “বাবা যখন মারা যায়, আমি দ্বিতীয় শ্রেণিতে ও দিদি চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ি। হঠাৎ সব কিছু বদলে গেল। সংসার চালানোর জন্য মা কাজ শুরু করল। ওই সময় দিদি আর আমি একে অপরকে আরও ভাল বুঝতে শুরু করি। আমাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। দিদি এখন রূপটানশিল্পী। আমি কোনও শুটিংয়ে গেলে আমার মেকআপ দিদিই করে দেয়। ও ক্রিকেট অত বোঝে না। কিন্তু আমি ভাল খেললে আনন্দ পায়। কারণ, সকলে তখন ওকে ফোন করে আমার কথা বলে। তাতে ওর গর্ব হয়।”

আপাতত বিশ্রামে রয়েছেন বুমরা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা ক্রিকেটারের উপর বেশি ধকল দিতে চান না, জানিয়ে দিয়েছেন নতুন কোচ গৌতম গম্ভীর। তাই সব সিরিজ়ে না খেলিয়ে বাছাই করে তাঁকে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE