টি-টোয়েন্টির প্রস্তুতিতে কোচ লক্ষ্মণের সঙ্গে রোহিত।
শুধু অ্যাশেজই যে ক্রিকেট মাঠে লোক টানতে পারে, এই ধারণা ভুল প্রমাণিত করে দিল এজবাস্টন টেস্ট। ভরা মাঠে দারুণ একটা টেস্ট ম্যাচ দেখতে পেলেন দর্শকরা।
কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য এই টেস্ট বেশ কিছু প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেল। একটা দল প্রথম ইনিংসে ১৩২ রানে এগিয়ে থেকেও এই ভাবে হারছে, এটা মেনে নেওয়া সত্যিই কঠিন।
অবশ্যই জো রুট এখন যা ব্যাট করছে, তাতে ওর কাছাকাছি কাউকে রাখা যাবে না। গত দশ মাসে অসাধারণ ক্রিকেট খেলছে জনি বেয়ারস্টোও। কিন্তু শুধু রুট-বেয়ারস্টোর স্বপ্নের ব্যাটিংই যশপ্রীত বুমরাদের হারার একমাত্র কারণ নয়। ভারতের খেলার ময়নাতদন্ত করলে উঠে আসবে আরও কয়েকটা কারণ।
প্রথমেই বলতে হবে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারতের ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা। শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, হনুমা বিহারী, শ্রেয়স আয়ার সবাই ব্যর্থ। পুজারা জমে গিয়েছিল। ওর আর একটু বড় ইনিংস খেলা উচিত ছিল। অনেকে বলবে, হাফসেঞ্চুরি করে ঋষভ পন্থ যখন ও রকম ব্যাটিং করছে, তখন রিভার্স সুইপ কেন মারবে? সমস্যা হল, এটাই ঋষভের খেলা। শটটা ঠিক মতো লাগলে সবাই বাহবাই দিত।
মাঝের সারিতে বিরাটের ধারাবাহিক ব্যর্থতা ভারতকে চাপে ফেলে দিচ্ছে। টেস্ট ম্যাচে রোহিত শর্মাকে এখন অনেক সময়ই পাওয়া যায় না। সেখানে অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান বলতে বিরাটই। রবীন্দ্র জাডেজা প্রথম ইনিংসে দারুণ সেঞ্চুরি করার পরে দ্বিতীয় ইনিংসে আটকে গেল। এজবাস্টনের চতুর্থ-পঞ্চম দিনের পিচেও সে রকম কিছুই ছিল না। ব্যর্থ হওয়া চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে এক জন কেউ রান পেলেই ইংল্যান্ডের সামনে জয়ের লক্ষ্যটা সাড়ে চারশো হয়ে যেতে পারত। তার চেয়েও বড় কথা, সময় বেশি পেত না বেন স্টোকসরা। তখন ওদের আরও ঝুঁকি নিয়ে খেলতে হত।
রাহুল দ্রাবিড় দেখলাম বলেছে, তৃতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানরা কেন বার বার ব্যর্থ হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখবে। সবার আগে ভারতকে ওপেনিং সমস্যা ঠিক করতে হবে। বিদেশে টেস্ট ম্যাচে প্রায়ই রোহিতকে পাওয়া যায় না! বিকল্প কারা? চেতেশ্বর পুজারা কেন বিকল্প হবে? শুভমন গিলের টেকনিক্যাল ত্রুটির সুবিধে নিচ্ছে বিপক্ষ। ব্যাকফুটে খেলার সময় শুভমনের পিছনের পা অন সাইডে চলে যায়। যে কারণে অফস্টাম্পটা কোথায়, ও ঠিক বুঝতে পারে না। অনেক বারই ওই অফস্টাম্পের বাইরের বলে উইকেটের পিছনে খোঁচা দিয়ে আউট হয়েছে। ভাল ওপেনিং জুটি দ্বিতীয় ইনিংসে বড় রানের মঞ্চ গড়ে দিতে পারে। ঠিক যেমন ইংল্যান্ডের ক্ষেত্রে হল।
ভারতের রণনীতি নিয়েও প্রশ্ন আছে। শেষ দিনের শুরুতে প্রথমেই দেখলাম বলটা মহম্মদ সিরাজের হাতে তুলে দেওয়া হল। আর সিরাজ বল করল একটা স্লিপ, একটা গালি নিয়ে। কেন এটা হবে? ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য তখন মাত্র ১১৯ রান বাকি। উইকেটে জমে গিয়েছে রুট-বেয়ারস্টো। সবাই জানত, প্রথম আধ ঘণ্টায় এই জুটি ভাঙতে না পারলে ম্যাচ বেরিয়ে যাবে। তা হলে কেউ এ রকম ফিল্ডিং নিয়ে আক্রমণ শুরু করে? এর দায় শুধু অধিনায়ক বুমরার নয়। দল পরিচালন সমিতিরও। যার মধ্যে কোচ রাহুল দ্রাবিড়ও আছে। দিনের শুরুতে কাকে বল দেওয়া হবে, কী ফিল্ডিং সাজানো হবে, এটা তো ঠিক করেই নামে একটা দল। রণনীতির একটা অঙ্গ হল, ঠিক দল নির্বাচন। মনে হচ্ছে, এই টেস্টে চার পেসারে খেলা ঠিক হয়নি। তার চেয়ে অশ্বিন ভাল বিকল্প হত। দলে চার পেসার থাকলে এক জনকে ঠিক মতো কাজে লাগানো যায় না।
ভারতীয় বোলারদেরও খুব নিষ্প্রভ লেগেছে। বুমরা ছাড়া মনে হয়নি কেউ উইকেট নিতে পারে। বল হাওয়াতেও নড়াতে পারেনি কেউ। ইংল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের নিয়ে আলাদা কোনও পরিকল্পনা ছিল বলে মনে হয়নি। বেয়ারস্টো শর্ট আর্ম পুল আর অন সাইডে তুলে মারার ব্যাপারে বিশেষ দক্ষ। ওকে ওই লাইনে অনেক বল করা হয়েছে। নতুন বলে ইংল্যান্ড ওপেনারদের উপরেও চাপ তৈরি করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy