চহালের প্রত্যাবর্তনে অবাক ক্রিকেটপ্রেমীরা ছবি পিটিআই
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে তাঁর নাম ছিল না। নেওয়া হয়েছিল রাহুল চাহারকে। কিন্তু তাঁকে দলে না নেওয়ার পিছনে যে অদ্ভুত যুক্তি দিয়েছিলেন প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা, তা শুধু তাঁকেই নয়, বিস্মিত করেছিল আসমুদ্রহিমাচলকে।
চেতন বলেছিলেন, “আমরা এমন একজন স্পিনারকে চাই যে গতির সঙ্গে বল করতে পারে। সম্প্রতি রাহুল চাহারকে আমরা গতিতে স্পিন বোলিং করতে দেখেছি। আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন স্পিনার নেওয়া যে গতির সাহায্যে পিচ থেকে ফায়দা তুলতে পারে।”
যাঁকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেই যুজবেন্দ্র চহাল এই কথা শুনে পরে বলেছিলেন, দলে জায়গা না পাওয়ার খবর শুনে সে রাতে তিনি খাবার খাননি। চেতনের যুক্তি শুনে পরদিন সকালের প্রাতরাশ করেছিলেন কি না, সেটা নিয়েও প্রশ্ন থাকতে পারে।
প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকা, পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে প্রথম এক দিনের ম্যাচ। চহাল যেন পদে পদে বুঝিয়ে দিচ্ছেন, কেন তাঁকে না নেওয়াটা ভুল হয়েছিল বিশ্বকাপে। যে মাটিতে কয়েক দিন আগেই আইপিএল-এ আরসিবি-র হয়ে দুর্দান্ত বল করেছিলেন, সেই একই জায়গায় তাঁকে বাদ দেওয়া হচ্ছে বিশ্বকাপের দলে! সাম্প্রতিককালে এ রকম অদ্ভুত সিদ্ধান্ত ভারতীয় ক্রিকেটে হয়েছে কি না সন্দেহ। সেই সিদ্ধান্ত কতটা ভুল ছিল, তা প্রতিযোগিতায় ভারতের ফলাফলেই প্রমাণিত।
নেটমাধ্যমে যথেষ্ট সক্রিয় চহাল। এমন ছবি বা ভিডিয়ো পোস্ট করেন যা দেখে বোঝা যায় তিনি হাসিখুশি, ভাবলেশহীন, জীবনটা উপভোগ করতে জানেন। কিন্তু নতুন নতুন বল করা, বলে বৈচিত্র আনা — এ সব ব্যাপারে যথেষ্ট ভাবেন তিনি। রবিবার প্রথম এক দিনের ম্যাচে সেটা বোঝা গিয়েছে। পরপর দু’বলে নিকোলাস পুরান এবং কায়রন পোলার্ডকে তুলে নেন চহাল। সেই সময় দু’জন টিকে গেলে ম্যাচের ফলাফল অন্য রকমও হতে পারত।
দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে তেম্বা বাভুমা এবং রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ক্রমাগত সুইপ খেলে চহালকে নির্বিষ করার চেষ্টা করে গিয়েছিলেন। একই কাজ করতে গিয়েছিলেন পুরানও। কিন্তু বলের লাইন মিস করেন। ডিআরএস নিয়ে সাফল্য পান চহাল। দ্বিতীয় দ্রুততম স্পিনার হিসেবে এক দিনের ক্রিকেটে ১০০ উইকেট যায় তাঁর। তবে পুরানের থেকেও পোলার্ডের আউট আরও বিস্ময়কর। সাধারণত, নতুন ব্যাটারকে প্রথম বলেই গুগলি দেন না চহাল। বড় হিটার হলে তো আরওই নয়। কিন্তু স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে পোলার্ডকে গুগলি দিয়েছিলেন চহাল। পোলার্ড বুঝতেই পারেননি। আইপিএল-এও পোলার্ডকে চার বার আউট করেছেন চহাল। অধিনায়ক রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলীর উল্লাস দেখে বোঝাই গিয়েছিল, পুরোটাই আগে থেকে হয়তো পরিকল্পনা করা হয়েছে।
মাঝের দিকের ওভারে ব্যাটারকে টোপ দেখিয়ে ভুল করতে বাধ্য করানোর গুণ ফের ফিরে এসেছে চহালের বোলিংয়ে। টানা দু’বছর তিনি এবং কুলদীপ মিলে সেটাই করে গিয়েছেন। বিশ্বকাপের দল থেকে বাদ পড়ার পর চহাল নিজের বোলিংকে আরও উন্নত করেছেন। বিভিন্ন ধরনের বল করে এখন পিচ থেকে পুরোপুরি ফায়দা তুলতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, গুগলি দিতে পিছপা হন না। হতেই পারে ব্যাটার তাঁকে ছয় মারলেন। কিন্তু ভুল তিনি করবেনই। এটাই বিশ্বাস চহালের। এই মন্ত্রেই তিনি আগামীতে এগিয়ে যেতে চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy