দক্ষিণ আফ্রিকার রঙিন জার্সি প্রথম পরেছিলেন ২০১৮ সালে। —ফাইল চিত্র
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বড় রান, গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে নিপুণতা, সবই ছিল হেনরিক ক্লাসেনের। তবু দেশের হয়ে প্রথম ম্যাচ খেলার সুযোগ পান ২৬ বছর বয়সে। কারণ, প্রোটিয়া দলে রয়েছেন কুইন্টন ডি’কক। যিনি এক সময় দেশের অধিনায়কও ছিলেন। সব ধরনের ক্রিকেটে গ্লাভস হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার জার্সিতে তিনিই দেশের প্রথম পছন্দ।
এখানেই বাংলার ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে মিলে যায় ক্লাসেনের ক্রিকেট কেরিয়ার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে রান করেন, আন্তর্জাতিক দলের স্কোয়াডে আসেন, কিন্তু প্রথম একাদশে সুযোগ পান না। ২০১৭ সাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা দলে থাকলেও প্রথম টেস্ট খেলার সুযোগ পান ২০১৯ সালে। ভারতের বিরুদ্ধে রাঁচিতে একটি টেস্ট খেলেছিলেন ক্লাসেন। তার পর আর কখনও টেস্ট খেলার সুযোগ হয়নি।
দক্ষিণ আফ্রিকার রঙিন জার্সি প্রথম পরেছিলেন ২০১৮ সালে। তা-ও ডি’কক চোট পাওয়ায় প্রথম একাদশে ঢুকেছিলেন ক্লাসেন। একদিন এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অভিষেক তাঁর ভারতের বিরুদ্ধে। গত চার বছরে মাত্র ২৪টি এক দিনের ম্যাচ খেলেছেন ক্লাসেন। করেছেন ৬১৩ রান। শতরান একটি। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে খেলেছেন ২৯টি ম্যাচ। সংগ্রহ ৫৩০ রান। অর্ধশতরান চারটি। স্ট্রাইক রেট ১৪৬.৪০।
নিয়মিত সুযোগ পান না। রবিবার কটকে ডি’কক না খেলায় সুযোগ পেয়েছিলেন। কাজে লাগালেন। ভারতের বিরুদ্ধে তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ার শুরু। সেই ভারতের বিরুদ্ধেই তাঁর কেরিয়ারের ‘নবজন্ম’ হল বলে মনে করছেন ক্লাসেন স্বয়ং। ৮১ রান করেছেন। ভারতের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে জিতিয়ে ম্যাচের সেরার পুরস্কার নিয়ে ক্লাসেন নির্দ্বিধায় বলেন, “ভারতের বিরুদ্ধে এমন ইনিংস খেলতে পেরে শান্তি পেলাম। আশা করি, আমার কেরিয়ার এই ইনিংসের পর আরও দীর্ঘ হবে। শেষ দু’বছর খুব ভাল খেলতে পারিনি। এখানে এসে আমি খুশি এবং আত্মবিশ্বাসী।”
ডি’ককের হাতে চোট। তাঁর বদলে দক্ষিণ আফ্রিকা ভরসা রেখেছিল ক্লাসেনের উপর। সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন ক্লাসেন। বলেছেন, “দু’দিন আগে ডি’কক আমার কাছে এসে বলে, ওর হাতে চোট রয়েছে। ভেবেছিলাম ম্যাচের আগে ও সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু শনিবার ফের জানায়, হাত ঠিক হয়নি। শনিবার সকালে কোচ বলেন, আমি খেলতে পারি।”
ক্লাসেন খেললেন এবং এমন খেললেন যে, ডি’কক সুস্থ হলে তাঁকে শুধুমাত্র ব্যাটার হিসাবে খেলানোর কথা ভাবতে হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। তবে শুধু ব্যাটার হিসাবে যিনি দলে জায়গা করে নিতে পারেন, সেই ক্লাসেন কিন্তু আইপিএল দুনিয়ায় প্রায় ব্রাত্য। ২০১৮ সালে রাজস্থান রয়্যালস এবং ২০১৯ সালে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর দলে খেলেছিলেন তিনি। দু’বছরে মাত্র সাতটি ম্যাচ খেলেছেন। সংগ্রহ ৬৬ রান। অধুনা ৩০ বছরের ক্লাসেন আরও খেলতে চান। দেশের হয়েও খেলতে চান। দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমির কোচ শুক্রি কনরাড তাঁর সম্পর্কে বলেছিলেন, “যে কোনও পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রাখতে পারে ক্লাসেন। দক্ষিণ আফ্রিকার মহেন্দ্র সিংহ ধোনি হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে ওর মধ্যে।”
একদা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নেতৃত্ব দেওয়া ক্লাসেন অবশ্য এখন দলে নিয়মিত সুযোগই পান না! তিনি ধোনির মতো ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ জেতান। আবার ঋদ্ধির মতো পূর্বসূরির ছায়ায় ব্রাত্যও থেকে যান। কটকে নবজন্মের পর কি ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ধোনি’ হতে পারবেন হাইনরিখ ক্লাসেন?
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy