দুরন্ত: পন্থ-জাডেজার জুটিই ম্যাচে ফেরায় ভারতকে। ফাইল চিত্র
তাঁদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি এবং ২২২ রানের রেকর্ড জুটি এজবাস্টন টেস্টে চালকের আসনে বসিয়ে দিয়েছে ভারতকে। কিন্তু তা নিয়ে খুব বেশি উচ্ছ্বাস দেখাতে রাজি নন ঋষভ পন্ত এবং রবীন্দ্র জাডেজা। ভারতীয় শিবিরের দুই তারকা জানিয়ে দিয়েছেন, কঠিন পরিস্থিতিতে দলের স্বার্থে তাঁদের যেটা করণীয় ছিল, তা-ই করার চেষ্টা করেছেন।বিসিসিআই টিভিতে নিজেদের ইনিংস নিয়ে পর্যালোচনা করেন দুই তারকা।
যেখানে পন্থ বলেন, “খুব কঠিন সময়েই আমরা খেলতে নেমছিলাম। কিন্তু ইতিবাচক দিক ছিল এটাই যে, ব্যাটিং করার সময় আমরা ক্রমাগত একে অপরের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছি। আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছিলাম, সামনে কোনও বড় লক্ষ্য রাখব না। স্কোরবোর্ডকে সচল রেখে ছোট ছোট রানের জুটি তৈরি করে যেতে হবে। একে অপরকে বলেছিলাম, কোনো ধরনের ভুল শট নেওয়া যাবে না। সেটা যাতে না হয়, তার জন্য প্রত্যেকটি ডেলিভারির পরে একে অপরকে সতর্ক করে গিয়েছি।”
নিজের ইনিংস নিয়ে ঋষভ বলেছেন, “আন্তর্জাতিক মঞ্চে দলের জন্য যে কোনও সেঞ্চুরিই সমান ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ব্যক্তিগত ভাবে আমি সেঞ্চুরি নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে পছন্দ করি না। বরং প্রত্যেকবার এটা মাথায় থাকে যে, মাঠে নামার পরে নিজের একশো শতাংশ উজাড় করে দিতে হবে। এ বারও সেই লক্ষ্য নিয়েই খেলেছি।” জাডেজার সঙ্গে তাঁর ২২২ রানের জুটি নিয়ে পন্থের বিশ্লেষণ, “ব্যাটিং করার সময় এমন একজন সতীর্থকে খুব দরকার হয়, যার উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করা যেতে পারে। জাড্ডু ভাই সেই ঘরানারই ক্রিকেটার। উইকেটের অন্য প্রান্ত থেকে ওর লড়াই দেখার পরে মনের জোর বেড়ে গিয়েছিল। এত শান্ত ভাবে ইংল্যান্ড বোলারদের জাড্ডু ভাই সামলে দিচ্ছিল যা আমার উপর থেকে চাপ অনেক কমিয়ে দেয়। একটা বিশ্বাস তৈরি হয়ে গিয়েছিল যে, বড় একটা ইনিংস উপহার দিতে পারব।” জাডেজা বলেছেন, “দেশের হয়ে খেলার একটা গর্ব তো থাকেই। কিন্তু দল যখন কঠিন অবস্থায় পড়ে যায়, সেই সময় কী ভাবে দলকে প্রতিকূলতা থেকে বার করে আনতে হবে, সেটার উপরেই সমস্ত কিছু নির্ভর করে। পন্থ থাকায় আমার পক্ষে সেই লড়াইটা অনেক সহজ হয়ে গিয়েছিল। এমন একটা আবহাওয়ায় ওর সঙ্গে ব্যাটিং দারুণ উপভোগ করেছি।”
এর আগে সাংবাদিক বৈঠকে জাডেজা বলেন, আইপিএল বিতর্ক তাঁর কাছে এখন অতীত। এজবাস্টনে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে নতুন ভাবে নিজেকে মেলে ধরেছেন তিনি। বিদেশের মাঠে টেস্টে প্রথম শতরানের পরে জাডেজা জানিয়ে দিলেন, দেশের হয়ে ভাল খেলার মতো তৃপ্তি আর কিছুতে নেই। সেখানে আইপিএল প্রসঙ্গ নিয়ে পর্যালোচনার প্রয়োজন পড়ে না। সাত নম্বরে খেলতে নেমে ১৯৪ বলে জাডেজার সংযত ১০৪ রানের ইনিংস ভারতকে দারুণ জায়গায় নিয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে স্পিনার অলরাউন্ডারের মন্তব্য, “ইংল্যান্ডের মাঠে সেঞ্চুরির বিশেষ একটা গুরুত্ব রয়েছে। আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। এই ধরনের পরিবেশে ১০৪ রান করাটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে।”
গত কয়েক বছরে জাডেজার ব্যাটিং নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। যে প্রেক্ষিতে শনিবার তাঁর সেঞ্চুরিকে সেই সমালোচনার জবাব বলেই মনে করছেন অনেকে। তবে জাডেজা জানাচ্ছেন, ইংল্যান্ডের ভিজে আবহাওয়ায় ঠিক বল নির্বাচন করে দীর্ঘ সময় খেলে যাওয়ার দক্ষতাই তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছে। তিনি বলেছেন, “এই পরিবেশে বলকে শরীরের অনেকটা কাছে টেনে এনে খেলতে হয়। কিন্তু তা না করে আপনি যদি সেই বলে কভার ড্রাইভ বা স্কোয়্যার কাট করতে যান, তা হলে আউট হওয়ার বড় সম্ভাবনা থেকেই যায়। সেটা মাথায় রাখতে হয়েছিল।”
সেখানেই না থেমে ভারতীয় দলের অলরাউন্ডার বলেছেন, “পুরো সময় জুড়েই লক্ষ্য ছিল অফ স্টাম্পের বাইরের বল ছেড়ে দিতে হবে। যে বলগুলোর কাছে ব্যাট পৌঁছছে, সেগুলোতেই শট নিয়েছি। সে ভাবে দেখতে গেলে নিজেকে ভাগ্যবান বলতে হবে যে, বেশির ভাগ বলই আমার ব্যাটের আয়ত্তের মধ্যে ছিল।” আরও যোগ করেছেন, “সব সময় এটা মনে রাখতে হবে যে অফ স্টাম্পটা কোথায় রয়েছে এবং কোন বলটা ছাড়া দরকার। আমি তাই শুরু থেকে শট নেওয়ার বিষয়ে অনেকসংযত ছিলাম।”
এ বার আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক নির্বাচিত হওয়া এবং প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফের নেতৃত্ব মহেন্দ্র সিংহ ধোনির হাতে ফিরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক। সাংবাদিক সম্মেলনে সেই প্রসঙ্গ নিয়েও প্রশ্ন ধেয়ে আসে তাঁর দিকে। জাডেজা সাফ বলে দেন, ‘‘যা ঘটে গিয়েছে, তা নিয়ে ভেবে লাভ নেই। আইপিএল প্রসঙ্গ মাথাতেই রাখছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy